সরদার সিরাজ
বাইডেন কি পারবেন বিশ্বে মার্কিন নেতৃত্ব ধরে রাখতে
প্রকাশ: ০২:৫৫ এএম, ১৪ জানুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:১৩ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
গত ৬ জানুয়ারি মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে পূর্ব ঘোষিত ভোটের ফল সঠিক বলে প্রত্যয়ন করা হয়েছে। এটাই দেশটির জটিল নির্বাচনী প্রক্রিয়ার শেষ ধাপ। ফলে বাইডেন-কমালার ক্ষমতা গ্রহণের আর কোন বাধা অবশিষ্ট নেই। কিন্তু ইতোমধ্যে নতুন এক চরম ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছেন ‘মোস্ট ডেঞ্জারম্যান’ খ্যাত ট্রাম্প! যা আমেরিকার কালো অধ্যায় বলে আখ্যায়িত হয়েছে। ট্রাম্পের আহ্বানে গত ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসিতে শ্বেতাঙ্গ উগ্রবাদীদের এক বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। তাতে উন্মত্ত জনতাকে এক ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বাইডেনের বিজয় মানি না। তোমরা ক্যাপিটল হিলে যাও’। এর পরপরই উক্ত সমাবেশ থেকে বহু দাঙ্গাবাজ অধিবেশন চলাকালে গণতন্ত্রের প্রতীক ক্যাপিটল হিলে কমান্ডো স্টাইলে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও গোলাগুলি করে। তাতে সাদা পোশাকে কিছু পুলিশও অংশগ্রহণ করে। উপরন্তু দাঙ্গাকারীরা শ্বেতাঙ্গ বলে পোশাকধারী পুলিশরা কড়া ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে! এছাড়া, ক্যাপিটলের বিদায়ী প্রধান স্টিভেন স্যান্ড বলেন, ট্রাম্পের উগ্রবাদী সমর্থকদের হামলা ঠেকানোর জন্য ন্যাশনাল গার্ডকে ডাকার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে কিন্তু সে প্রচেষ্টায় বাধা দেয়া হয়। সময়মতো সাহায্য পাওয়া গেলে এমন সন্ত্রাসী হামলা ঠেকানো যেত। উক্ত ঘটনায় ১ পুলিশসহ ৫ জন নিহত ও বহুজন আহত হন। অধিবেশন স্থগিত করে প্রতিনিধি ও ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্সকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয় সুড়ঙ্গ পথ দিয়ে। একই পথে সেখানকার কর্মচারী ও মিডিয়া কর্মীরাও পালিয়ে যান। ওয়াশিংটনে কারফিউ জারি করা হয়। শ্বেতাঙ্গ দাঙ্গাবাজরা সিনেটরদের জিম্মি করে অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতায় তা ব্যর্থ হয়। ৮০ জন সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অতঃপর পরিবেশ নিরাপদ হলে পুনরায় অধিবেশন শুরু হয় এবং তাতে নির্বাচনের পূর্ব ঘোষিত ফল প্রত্যয়ন করা হয়। এতে রিপাবলিকানদেরও অনেকেই সমর্থন জানান।
ক্যাপিটল হিলের কলঙ্কজনক ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্ববাসী স্তম্ভিত ও মর্মাহত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বে নিন্দার ঝড় উঠে। বিশ্বে মার্কিন ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে চরমভাবে। তাই দেশব্যাপী ট্রাম্পকে অভিশংসন/অপসারণ করার দাবি প্রবলতর হয়েছে। জরিপ মতে ৫৭% মার্কিনী ট্রাম্পের অপসারণের আর ৪২% হামলার পক্ষে। তাই অভিষেকের দিন পুনরায় ক্যাপিটলে ও বাইডেনের আবাসস্থলে হামলার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নাশকতার আশঙ্কায় দেশজুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং ওয়াশিংটনে ইমার্জেন্সি ঘোষণা করা হয়েছে। কারণ, বাইডেনের শপথের সময় অনলাইনে ট্রাম্পেরও শপথের আয়োজনের চেষ্টা করছে তার উগ্র সমর্থকরা। তাদের দাবিÑ হয় ট্রাম্প, নয়তো যুদ্ধ। বিভিন্ন তথ্য মতে, ‘অভ্যুত্থানে প্ররোচনার’ অভিযোগে গত ১১ জানুয়ারি নিম্নকক্ষে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসনের প্রস্তাব আনা হয়েছে। ১৩ জানুয়ারি এর উপর ভোট হবে। এতে প্রস্তাব পাস হবে তা নিশ্চিত। এটা হলে ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো অভিশংসিত হবেন (২০১৯ সালে একবার অভিশংসিত হয়েছিলেন। কিন্তু সিনেটে তা অনুমোদিত হয়নি)। কিন্তু এটা সিনেটের দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন লাগবে, যা নাও হতে পারে। দ্বিতীয়ত: আগামী ১৯ জানুয়ারির আগে সিনেট বসবে না। এখন বাকি রইলো সংবিধানের ২৫ নং সংশোধনীর মাধ্যমে ট্রাম্পকে অপসারণ করা। কিন্তু তাতে ভাইস প্রেসিডেন্টের অনুমোদন লাগবে। সে জন্য ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত লিখিতভাবে সময় দিয়েছেন নিম্নকক্ষের স্পীকার। অন্যথায় ইমপিচমেন্ট বলে জানিয়েছেন তিনি। ১৯ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক নিয়ে সিনেট বসবে। তখন ট্রাম্পকে অপসারণ করার প্রস্তাব পাস করার সুযোগ আছে। কিন্তু ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স কি তার সদ্ব্যবহার করবেন? অন্যদিকে, ট্রাম্প পদত্যাগ করে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেন। এসব বিষয় এখন টক অব দি ওয়ার্ল্ডে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এ ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। কারণ, প্রতি ক্ষণে ক্ষণে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটছে দেশটিতে। তবে, এটা ঠিক যে, ট্রাম্প অভিশংসিত/অপসারণ হলে পরবর্তীতে আর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। উপরন্তু প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কোন সুবিধাও পাবেন না। এসব দিকেই ডেমোক্র্যাটদের ও অনেক রিপাবলিকানের আগ্রহ বেশি। উল্লেখ্য যে, বাইডেন শপথের পরও ট্রাম্পের অভিশংসন/অপসারণের সুযোগ আছে। অন্যদিকে, ক্যাপিটল হিলে হামলার অভিযোগ গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। তাতে হুকুমের আসামি হিসেবে ট্রাম্পের নাম এলে তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে। উপরন্তু স্পিকার ন্যান্সি ট্রাম্পের হাতে থাকা পরমাণু অস্ত্রের কোড কেড়ে নিতে সেনাপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তাতে স্পীকার বলেছেন, ট্রাম্প এই মুহূর্তে খুবই অস্থির অবস্থায় রয়েছেন এবং তার কাছে কোনোভাবেই পরমাণু অস্ত্রের কোড থাকা ঠিক নয়। কারণ তিনি পরমাণু যুদ্ধের সূচনা করতে পারেন। ট্রাম্প ও তার স্ত্রী মেলানিয়ার ঘনিষ্ঠরা তাদের সঙ্গ ত্যাগ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ট্রাম্পের একাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে! লিহাই বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাম্পের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি বাতিল করেছে। ক্যাপিটল ভবনে হামলা এবং জো বাইডেনকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেনে না নেওয়ার জন্য রিপাবলিকান এমপিদের অনুদান বন্ধ করে দিচ্ছে। তন্মধ্যে জেপি মর্গান, সিটি গ্রুপ, ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনাল ইত্যাদি অন্যতম। এছাড়া টুইটার ট্রাম্পের সমর্থকের ৭০ হাজারেরও বেশি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে।
এই অবস্থায় পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ভোল পাল্টিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ‘২০শে জানুয়ারি নতুন প্রশাসন শপথ নেবে ও আমার লক্ষ্য এখন অবাধ ও সময়োচিত ক্ষমতা হস্তান্তরে মনোযোগ নিবদ্ধ করাও এখন প্রয়োজন নিরাময়ের আর জাতীয় সংহতিরও ক্যাপিটল ভবনের এই হামলায় সবার মতো আমিও ব্যথিত হয়েছিও যারা এই হিংসাত্মক হামলায় অংশ নিয়েছেন, তারা আমাদের প্রতিনিধিত্ব করেন না ও আইন লঙ্ঘনকারীদের শাস্তি পেতে হবেও তবে, তিনি এও বলেছেন, বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠানে যাবেন না তিনি। তবে, ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ বুশ ও বিল ক্লিনটন উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু ট্রাম্প যতই ভোল পাল্টান না কেন, ক্যাপিটলে যারা সন্ত্রাস করেছে, সন্ত্রাস চালানোর উস্কানি দিয়েছে, সমর্থন করেছে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের ফল বানচালের অপতৎপরতা চালিয়েছে, তাদের বিচার হওয়া আবশ্যক! নতুবা এরূপ ঘটনা বারবার ঘটতে পারে। যদিও ট্রাম্প নিজেকে ক্ষমা করে দেওয়ার পথ খুঁজছেন বলে খবরে প্রকাশ। তাতে সফল হবেন কি-না তা বলা কঠিন। যা’হোক, মার্কিন ইতিহাসের অন্যতম ঘোর অন্ধকার কেটে আশার আলো প্রজ্বলিত হয়েছে। বাইডেন ও কমালার শপথ অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেছে প্রশাসন। এখন আগামী ২০ জানুয়ারি তাদের অভিষেক। যা করোনার কারণে ভার্চুয়ালি হবে। বাইডেনের বিজয়ে ইতোমধ্যেই আমেরিকাসহ সারা বিশ্বের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন, খুশি হয়েছেন। সকলেই আশায় বুক বেঁধেছেন। সকলের আকাক্সক্ষা বিশ্বের শান্তি, উন্নতি ও সহমর্মিতা। চীন, রাশিয়া, ব্রাজিল, ইউরোপসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ অভিনন্দন জানিয়েছেন বাইডেন-কমালাকে। তারাও মানুষের আশা পূরণ করার লক্ষ্যে কল্যাণকর কর্মের সূচনা করেছেন।
যেমন : নির্বাচনকালে কমালা হ্যারিসকে (৫৬) ভাইস প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন দিয়ে চমক সৃষ্টি করেন বাইডেন। কারণ, হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কমালা আমেরিকার প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হবেন এবং তিনি এশিয়ান বংশোদ্ভূত। তার মা ভারতীয়। উপরন্তু কমালা বাংলাদেশের প্রখ্যাত আইনজীবী ও সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের ছাত্রী। ড. কামাল যখন যুক্তারাষ্ট্রে ল’কলেজে শিক্ষকতা করেন, তখন কমালা তার ছাত্রী ছিলেন। কমালা একজন দক্ষ আইনজীবী, বলিষ্ঠ নারী নেতৃত্ব ও সুলেখিকা। এছাড়া, তিনি একটি রাজ্যের এটর্নি জেনারেল ও সিনেটর ছিলেন এবং দক্ষতার সাথে এসব দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই কমালাকে রানিংমেট করার সিদ্ধান্ত মানুষ সাদরে গ্রহণ করেন। অপরদিকে, বাইডেন (৭৮) ৫ বারের সিনেটর ও একনাগাড়ে ৮ বছর ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন প্রেসিডেন্ট ওবামার শাসনামলে। উপরন্তু তিনি খুবই দক্ষ রাজনীতিক, প্রশাসক ও ঝানু কূটনীতিবিদ বলে খ্যাত। তাই সার্বিক বিবেচনায় মার্কিন সাময়িকী টাইমের ২০২০ সালের ‘সেরা ব্যক্তিত্ব’ হয়েছেন বাইডেন ও কমালা। তাদের ছবি প্রচ্ছদ করে উপশিরোনাম দেয়া হয়েছে, ‘আমেরিকার ইতিহাসে পরিবর্তন’। এছাড়া, চলতি বছরে অনুষ্ঠিতব্য ইইউ ও ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনে বাইডেনকে অগ্রিম আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তার বিজয়োত্তরই।
স্মরণীয় যে, বাইডেনের বিভিন্ন বিলসহ নানা কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রধান সহায়ক হচ্ছেÑকংগ্রেসে ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অব্যাহত আছে। এছাড়া, সিনেটেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জিত হয়েছে ২০০৯ সালের পর। উল্লেখ্য যে, সিনেটের ১০০ আসনের ডেমোক্র্যাট পার্টির ও রিপাবলিকান পার্টির আসন এখন সমান সমান। তথা ৫০ : ৫০। সিনেট অধিবেশনে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা সভাপতিত্ব করবেন এবং ভোটাভুটির ক্ষেত্রে তিনি টাইব্রেকিং ভোট দেবেন। ফলে সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় থাকবে ডেমোক্র্যাট দলের। অর্থাৎ হোয়াইট হাউস, সিনেট ও হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভে ডেমোক্র্যাটদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হয়েছে ডেমোক্র্যাটদের। আর ১৯৩২ সালের পর ট্রাম্পই প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি ক্ষমতায় থাকাকালে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ দুই-ই হারাল দল। প্রতিশ্রুতি : বাইডেন নির্বাচনে বিজয়ের পর থেকেই মানুষের আকাক্সক্ষা পূরণের জন্য বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যার অন্যতম হচ্ছে : গত ১৭ নভেম্বর ব্যবসায়ী ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাইডেন আশ্বাস দেন, দেশব্যাপী ঘণ্টায় ১৫ ডলার ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ, ভালো বেতনের ৩০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অগ্রসর প্রযুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ৩০ কোটি ডলার বিনিয়োগসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কর কাঠামো ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনাও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। এর পর গত ২০ নভেম্বর বাইডেন তার ৭৮তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে করোনাভাইরাস মহামারিতে আর্থিক সংকটে পড়া মার্কিনীদের জন্য দ্রুত ‘করোনা সাহায্য বিল’ পাসের জরুরি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের প্রতি। এছাড়া, গত ২৪ নভেম্বর এনবিসি টিভির সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, ‘বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমেরিকার অনেক কিছুই বদলে দিয়েছেন। ক্ষমতা গ্রহণের ১০০ দিনের মধ্যেই তিনি অভিবাসন সংস্কারে উদ্যোগ নেবেন। নথিপত্রহীন ১.১০ কোটির বেশি অভিবাসীকে আমেরিকায় নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রস্তাব সিনেটে পাঠাবেন। এই সময়ের মধ্যেই নাগরিক প্রণোদনা আইন পাস করা হবে। উপরন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেসব বৈরী নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন, সেসব বাতিল করা হবে। ট্রাম্পের মতো বিচার বিভাগকে ব্যবহার করা হবে না। আমেরিকার জনগণকে নিশ্চিত অবস্থানে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টিতে তিনি গুরুত্ব দিবেন। আমেরিকা তার আগের জায়গায় ফিরে যাবে। আবার তারা বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে। সেখান থেকে কোনোভাবেই পিছপা হবে না। আবারো মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলবে আমেরিকা।’ এর আগে তিনি করোনা মহামারি সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট, সম্পদের অসম বণ্টন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবসহ বিদ্যমান সমস্যাগুলো মোকাবেলা অগ্রাধিকারমূলক বিষয় বলে জানিয়েছেন। নিউইয়র্ক টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বর্তমানে যে ‘ফেজ-ওয়ান’ বাণিজ্য চুক্তি বলবৎ রয়েছে, তিনি তা বাতিল করবেন না। তিনি প্রথমে যা করবেন তা হলো, এই বাণিজ্য চুক্তির চুলচেরা বিশ্লেষণ। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে এশিয়া ও ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সঙ্গেও আলোচনা করবেন তিনি, যেন তাদের মধ্যকার মৈত্রী আরও সুসংহত হয় এবং সব দেশ মিলে অভিন্ন কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। সর্বোপরি সিএনএন টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, ‘ইরান ইস্যুতে ট্রাম্পের অনুসৃত নীতি ভুল ছিল। আর এ কারণেই ইরানের পরমাণু সংক্রান্ত জ্ঞান ও সক্ষমতা বেড়েছে।’ বাইডেন, ইরানের বাধ্যবাধকতা মানার শর্তে, ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ‘ইরান পরমাণু চুক্তিতে’ ফিরে আসার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেনÑভোয়া। বাইডেন ও মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট কথা বলেছেন গত ১৮ ডিসেম্বর। আলাপকালে বাইডেন মেক্সিকো সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দরিদ্র ল্যাটিনদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের মূল কারণ খুঁজে বের করার অঙ্গীকার করেন। উপরন্তু উভয় নেতা এল সালভাদর, গুয়েতেমালা, হন্ডুরাস ও দক্ষিণ মেক্সিকো থেকে অভিবাসন সংকটের মূল কারণ শনাক্ত ও এ অঞ্চলে আরও সুযোগ সৃষ্টি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে অভিন্ন উপায়ের বিষয়ে একমত হন। বাইডেন বলেন, ক্ষমতায় গিয়ে জলবায়ু সম্পর্কিত নতুন একটি দপ্তর খোলা হবে। এছাড়া, সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামার সময় চালু থাকা বেশকিছু পরিবেশ বিষয়ক আইন ফিরিয়ে আনবেন বলে জানিয়েছেন। ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে এক বার্তায় জাতিকে একতাবদ্ধ হতে, সুস্থ হয়ে উঠতে ও ২০২১ সালে পুনর্গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন বাইডেন। বাইডেন অঙ্গীকার করেছেন, তিনি ক্ষমতা নেওয়ার প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে আমেরিকানদের ১০ কোটি করোনার টিকা দেয়ার লক্ষ্য পূরণ করবেন। উপরন্তু তিনি নিজেও করোনার টিকা গ্রহণ করেছেন। কমালাও করোনার টিকা গ্রহণ করেছেন।
অপরদিকে, বাইডেনের প্রচারণা শিবিরের ম্যানেজার গত ৯ নভেম্বরে ফক্স নিউজকে বলেন, ‘বাইডেন হোয়াইট হাউজে এসে প্রথম দিনেই যে চারটি নির্বাহী আদেশ জারি করার পরিকল্পনা করছেন, সেগুলো হচ্ছে : মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কিছু দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে ট্রাম্প যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন তা তুলে নেয়া, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্যারিস চুক্তিতে পুনরায় যোগদান, শিশু অভিবাসীদের জন্য ডিএসিএ কর্মসূচি পুনরায় বহাল করা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় পুনরায় সংযুক্ত হওয়া। কমালা : বিজয়ের একদিন পর কমালা বলেন, বাইডেন এবং আমি দেশের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় লিখতে প্রস্তুত। প্রথম দিন থেকেই আমরা খেটে খাওয়া মানুষের জন্য দেশের অর্থনীতিকে গড়ে তোলার কাজে হাত দেব। শ্রমজীবী মানুষেরা প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেশ গঠন করতে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করেন। তাদেরই সবচেয়ে বেশি সম্মান পাওয়া উচিত। বাইডেন-হ্যারিস প্রশাসন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জন্য কাজ করবে। আমরা নিশ্চিত করছি, এই প্রক্রিয়া থেকে কেউই বাদ পড়বেন না। উপরন্তু কমালা গত ৮ নভেম্বর আমেরিকান নিউজকে বলেন, ‘তার সরকার কোনোভাবেই ট্রাম্পের একপেশে নীতি সমর্থন করবে না। ফিলিস্তিনদের সাথে আবারো শান্তি আলোচনা শুরু করবে। একই সঙ্গে ইসরাইলের দখলদারিত্বকেও সমর্থন করবে না ডেমোক্র্যাট সরকার। তাছাড়া ট্রাম্পের বন্ধ করা ফিলিস্তিনদের জন্য মানবিক ত্রাণ সহায়তা পুনরায় চালু করা হবে।’ উল্লেখ্য যে, কতিপয় কূটনীতিকের অভিমত হচ্ছে : কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কমালা। তাই বাইডেনের প্রশাসন কাশ্মীর নিয়ে বিশেষ কোনও নীতি নিতে পারেন। স্মরণীয় যে, বাইডেন ও কমালা একটি ওয়েবসাইট চালু করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, তারা করোনা সঙ্কট, বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতিতে মন্দাভাব, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ধারাবাহিক বর্ণবাদের ওপর অনতিবিলম্বে দৃষ্টি নিবদ্ধ করবেন ও প্রশাসন : বাইডেন-কমালা তাদের আশা-আকাক্সক্ষা বাস্তবায়ন করার জন্য দক্ষ প্রশাসন গড়ে তোলার দিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। যেমন : হোয়াইট হাউসের স্টাফ প্রধান হিসাবে রন ক্লেইনের নাম ঘোষণা করেছেন। এ ব্যাপারে বাইডেন বলেন, ‘রন অনেক বছর ধরে আমার কাছে অমূল্য সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। আমরা এক সঙ্গে কাজ করেছি। আর এই কাজের মধ্য দিয়েই আমি তার কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণ পেয়েছি।’ এর পর কয়েকজনের নাম মন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তারা হলেনÑ জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি (যিনি ওবামা আমলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা স্বাক্ষরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন), হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের প্রধান হিসেবে আলহান্দ্রো মায়োরকেস (যিনি এই বিভাগের সাবেক উপমন্ত্রী ছিলেন), পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন (যিনি ওবামা আমলে সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন), জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে জ্যাক সুলিভান, জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ড, ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক হিসেবে অ্যাভরিল হেইনেস (যিনি সিআইএ’র সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা ও জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপ-উপদেষ্টা ছিলেন)। এছাড়া, জ্যানেট ইয়েলেনকে অর্থমন্ত্রী, নীরা ট্যান্ডেনকে সরকারের বাজেট ও ব্যবস্থাপনা দপ্তরের পরিচালক পদে (তিনি হবেন যুক্তরাষ্ট্রের ২৩১ বছরের ইতিহাসে প্রথম নারী, যিনি অর্থ বিভাগ পরিচালনা করবেন), আদিবাসী নারী ডেব হ্যালান্ডকে স্বরাষ্ট্র সচিব, গিনা ম্যাকার্থিকে জাতীয় জলবায়ু উপদেষ্টা, জেনিফার গ্রানহলমকে প্রেসিডেন্টের জ্বালানি সচিব, মাইকেল রেগানকে এনভায়রনমেন্ট প্রটেকশন এজেন্সির প্রধান, ড. ফাউচিকে শীর্ষ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও পরামর্শক, অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল লিওড অস্টিনকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী (এই পদে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি), হাবিয়ার বেসেরাকে স্বাস্থ্য ও জনসেবা বিভাগের প্রধান এবং ক্যাথলিন হিকসকে উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেছেন। এছাড়া, বাইডেন হোয়াইট হাউসের ডিজিটাল স্ট্র্যাটেজি টিম ঘোষণা করেছেন। সেখানে জায়গা পেয়েছেন কাশ্মীরী বংশোদ্ভূত এক নারীÑআয়েশা শাহ। আয়েশাকে দেওয়া হয়েছে পার্টনারশিপ ম্যানেজারের কাজ। সিআইএ’র পরিচালক হিসেবে উইলিয়াম বার্নসকে মনোনীত করেছেন (যিনি সাবেক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী, অভিজ্ঞ কূটনীতিবদ ও ইরানের সঙ্গে ছয় জাতিগোষ্ঠীর যে পরমাণু সমঝোতা সই হয়েছিল তাতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন)। এছাড়া, বাইডেন হোয়াইট হাউসে তাঁর প্রেস টিমের নাম ঘোষণা করেছেন। তাতে সিনিয়র ৭ পদের সকলেই নারী ও চারজন অশ্বেতাঙ্গ।
সর্বোপরি বাইডেন করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে অভিযানে ১৩ সদস্যের একটি ‘টাস্কফোর্স’ গঠন করেন ও ওবামা প্রশাসনের প্রাক্তন সার্জেন জেনারেল, ড. ভিভেক মূর্তি, প্রাক্তন FDA ’র প্রশাসনিক কমিশনার, ড. ডেভিড কেসলার ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রফেসর ও ডিন, ড. নুনেজ স্মিথের নেতৃত্বে এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে আপাতত দুই মাসের জন্য। শপথ গ্রহণের পরে টাস্কফোর্সটি স্থায়িত্ব পাবে। করোনা মোকাবিলায় সবরকম ব্যবস্থা করবে এই কমিটি। অপরদিকে, বাইডেনের ‘এজেন্সি ট্রানজিশন টিমস’-এর সদস্যদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এ টিমের সদস্যরা হচ্ছেন মেরসা বেরাদেরান, সাইমন জনসন, ন্যান্সি লি, ডন গ্রেভস, জুলি গ্রিন, সেলেস্তে ড্রেক, জ্যাসন মিলার, রাইলি ওলসন, গ্যারি জেন্সলার ও অ্যান্ডি গ্রিন। এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের অভিমত হচ্ছে : এই নিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থনীতি, বাণিজ্য ও ব্যাংকিং বিষয়ে অভিজ্ঞতাকেই বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। রাজনৈতিক মতাদর্শ এখানে খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারেনি। ফলে বাইডেনের নিজ দল ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্যরা যেমন ট্রানজিশন টিমে জায়গা পেয়েছেন, তেমনি ঠাঁই হয়েছে প্রগতিশীল অধিকার কর্মীদেরওÑরয়টার্স। বাইডেনকে সহায়তা করবে ট্রানজিশন টিম। এদের সবাই যে নতুন প্রশাসনে যোগ দেবেন, তা নয়। তবে কয়েকজন দিতে পারেন। উল্লেখ্য যে, বাইডেনের টিম গত ৩০ ডিসেম্ব^র জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত প্রশাসনে কাজ করার জন্য যত নাম ঘোষণা করা হয়েছে, তার মধ্যে ৬১% মহিলা ও ৫% অশ্বেতাঙ্গ রয়েছেন। বিভিন্ন মতাদর্শ ও সামাজিক স্তরের সার্বিক প্রতিনিধিত্বের দিকে তারা জোর দিচ্ছেন। এখনই জনসংখ্যার অনুপাতের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি এশিয়ান আমেরিকান প্যাসিফিক আইল্যান্ডার সম্প্রদায়ভুক্ত কর্মী বাইডেন প্রশাসনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। এছাড়া, সমকামী-তৃতীয় লিঙ্গ-রূপান্তর কার্মীরা রয়েছেন ১১%। বাইডেন নিজেও বলেছেন, ‘আমি এবং কমালা এমন একটি প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই, যাতে আমেরিকার বৈচিত্র্য প্রতিফলিত হবেÑ সিএনএন। এর পর হয়তো আরও মন্ত্রী ও উপদেষ্টা নিয়োগ করা হবে। তাতে এরূপই হবে বলে অনুমেয়।
বাইডেন-কমালার প্রতিশ্রুতি এবং মন্ত্রী ও উপদেষ্টা নিয়োগ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ট্রাম্প আমেরিকা ফাস্ট নীতি গ্রহণ করে বিশ্বের বিরাজিত বহুত্ববাদ ধ্বংস করে মার্কিনীত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। উপরন্তু যুক্তরাষ্ট্রকে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছেন বিশ্ব থেকে। এতে বিশ্বও এক নয়া সংকটে পড়েছে। তাই বাইডেন-কমালা বহুত্ববাদে ফিরে যেতে এবং মার্কিন কর্তৃত্ব পুনরায় প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অতীত মিত্রদের সাথে সখ্যতা জোরদার এবং ন্যাটো ও নাফটাকে পূর্বের মতো শক্তিশালী করতে পারেন। বাইডেন ট্রাম্পের একতরফা ইসরাইল নীতি ত্যাগ করে জাতিসংঘের নীতি বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিতে পারেন। কাশ্মীর বিষয়টিও পুনরায় আন্তর্জাতিকরণ হতে পারে। বিশ্বব্যাপী কট্টরপন্থীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, বাইডেন নিশ্চয় লাগাম টেনে ধরবেন। এটা হলে বৈশ্বিক গণতন্ত্রের উন্নতি ঘটবে। ব্যাপক পরিবর্তন ঘটতে পারে মধ্যপ্রাচ্যে। এমনকি ইরানের সাথে ৬ জাতির পরমাণু চুক্তিতে পুনরায় বাইডেন সম্পৃক্ত হতে পারেন। এ চুক্তি থেকে ট্রাম্প সরে এসেছেন। অর্থাৎ বাইডেন তারা কল্যাণের পথেই ধাবিত হয়েছেন। তার সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কর্ম হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ চরমভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এই বিভক্তি দূর করে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করা অপরিহার্য। ধর্ম, বর্ণ, জাতি ও অভিবাসী বৈষম্য দূর করতে হবে। নতুবা কাক্সিক্ষত ঐক্য, শান্তি ও উন্নতি প্রতিষ্ঠিত হবে না। বহিঃবিশ্বেও দেশটির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে না। বিশ্বায়নের যুগে প্রতিযোগিতা থাকবেই। কিন্তু সেটা যেন প্রতিহিংসায় কিংবা যুদ্ধে পরিণত না হয়, বৈশ্বিক সব ঘটনা যেন বৈশ্বিকভাবেই নিরসন হয় সেদিকে তীক্ষè দৃষ্টি দেওয়া দরকার।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট
sardarsiraj1955@gmail.com
বিশ্বব্যাপী কট্টরপন্থীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, বাইডেন নিশ্চয় লাগাম টেনে ধরবেন। এটা হলে বৈশ্বিক গণতন্ত্রের উন্নতি ঘটবে। ব্যাপক পরিবর্তন ঘটতে পারে মধ্যপ্রাচ্যে। এমনকি ইরানের সাথে ৬ জাতির পরমাণু চুক্তিতে পুনরায় বাইডেন সম্পৃক্ত হতে পারেন। এ চুক্তি থেকে ট্রাম্প সরে এসেছেন। অর্থাৎ বাইডেন তারা কল্যাণের পথেই ধাবিত হয়েছেন। তার সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কর্ম হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ চরমভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এই বিভক্তি দূর করে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করা অপরিহার্য। ধর্ম, বর্ণ, জাতি ও অভিবাসী বৈষম্য দূর করতে হবে। নতুবা কাক্সিক্ষত ঐক্য, শান্তি ও উন্নতি প্রতিষ্ঠিত হবে না। বহিঃবিশ্বেও দেশটির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে না। বিশ্বায়নের যুগে প্রতিযোগিতা থাকবেই। কিন্তু সেটা যেন প্রতিহিংসায় কিংবা যুদ্ধে পরিণত না হয়, বৈশ্বিক সব ঘটনা যেন বৈশ্বিকভাবেই নিরসন হয় সেদিকে তীক্ষè দৃষ্টি দেওয়া দরকার।