ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী নতুন নিয়োগ বিধিমালা নিয়ে অসন্তোষ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০১:৪৯ এএম, ৮ আগস্ট,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:২৩ পিএম, ১২ অক্টোবর,শনিবার,২০২৪
ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে নতুন নিয়োগ বিধিমালা-২০২০ নিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে। নতুন বিধিমালায় বিভাগীয় প্রার্থীদের পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নতুন এ বিধিমালা সরকারি চাকরির বিধিমালারও ২০০১-এর পরিপন্থী। নতুন এ বিধিমালা বাস্তবায়ন হলে তা হবে আদালত অবমাননার শামিল।
২০০১ সালের নিয়োগ বিধিমালা অনুযায়ী সহকারী তহসিলদার (উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা) পদে এমএলএসএস, অফিস সহায়ক, চেইনম্যান, প্রসেস সার্ভারসহ ৪র্থ শ্রেণি থেকে ২০ শতাংশ পদোন্নতির বিধান রয়েছে এবং সে মোতাবেক ২০১৩ সাল পর্যন্ত পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু বিধিমালা ২০২০-এ সকল পদ থেকে পদোন্নতির বিধান রাখা হয়নি। যার মাধ্যমে বিভাগীয় প্রার্থীদের পদোন্নতির সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
এখানে উল্লেখ্য যে, আইন ও বিচার বিভাগ, সলিসিটর অনুবিভাগ রিট শাখা-২ গত ২০-৬-২০২১ তারিখে ৫০ নম্বর স্মারকে জানান যে, ৯৩৩৫/২০১৮ ও ১০৫৩৮/২০১৮ মামলায় রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত রিট পিটিশনারদের জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক পদ শূন্য রাখার নির্দেশনা রয়েছে। অথচ নিয়োগ বিধিমালার তফসিলে পিটিশনার অফিস সহায়ক ও চেইনম্যানদের আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পদোন্নতির ব্যবস্থা রাখেনি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিগত ৪/২/১৪ তারিখের ৫০ নম্বর পরিপত্রের মাধ্যমে এমএলএসএস পদটিকে অফিস সহায়ক, সুইপার পদটিকে পরিচ্ছন্নকর্মী, নৈশপ্রহরী পদটিকে নিরাপত্তা প্রহরী পদে পরিবর্তন করা হয়। বিধিমালা ২০০১-এ এর গেজেট অনুয়ায়ী, সহকারী তহসিলদার পদে ফিডার হিসেবে এমএলএসএস, অফিস সহায়ক, চেইনম্যান, প্রসেস সার্ভার বিদ্যমান আছে।
এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত স্থায়ী কমিটি বিগত ৫/৯/২০১৩ তারিখের সভার সুপারিশে তহসিলদার এবং সহকারী তহসিলদারদের বেতন স্কেল ১১, ১২ গ্রেড হতে যথাক্রমে ১৪, ১৫ গ্রেড স্থাপনের জন্য অর্থ সচিবকে অনুরোধ করে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কল্যাণ শাখায় বিগত ৪-১১-২০১৩ তারিখ ৩০৪ নং স্মারকে এক পত্রে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তার বেতন স্কেল যথাক্রমে ১১, ১২ গ্র্রেড হতে ১৪, ১৫নং গ্রেডে পুনঃস্থাপনের সুপারিশ করা হয়। কিন্তু কোনো অদৃশ্য কারণে উক্ত সুপারিশ গোপন রেখে ১৬ ও ১৭ গ্রেড হতে এক লাফে ১১ ও ১২ গ্রেডে চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। কর্মচারীদের কেউই এ বিষয়টি অবগত নন। এ নিয়েও মাঠ পর্যায়ের কর্মচারীদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজমান করছে।
এছাড়া কানুনগো পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ড্রাফটসম্যান, তহসিলদার/ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা, পেশকার, সার্ভেয়ারসহ সকল ফিডারধারী ১০ বছর অতিক্রম করে পদোন্নতি পেয়ে থাকেন। অথচ বর্তমান বিধিমালায় তহসিলদার/ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তাদের ৫ বছর, ড্রাফটসম্যানদের ১২ বছর ও সার্ভেয়াদের ১০ বছর উল্লেখ করা হয়েছে। এতে ড্রাফটসম্যান, পেশকার ও সার্ভেয়ারদের এ পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিদ্যমান অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে এবং বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে।
১৯৮৫ সালের ম্যানেজমেন্ট নিয়োগবিধিতে সহকারী রেভিনিউ অফিসার পদটি রয়েছে। কানুনগো পদ হতে শতভাগ পদোন্নতির মাধ্যমে উক্ত শূন্যপদ পূরণ করার বিধান রয়েছে। অথচ প্রস্তাবিত নতুন বিধিমালা-২০২০ এ পদটি বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সহকারী রেভিনিউ অফিসার পদটি এখনও বিদ্যমান। এতে কানুনগোদেরকে পরবর্তী পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
বর্তমানে বিধিমালা-২০২০ আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিং প্রক্রিয়ায় রয়েছে। অত্র বিষয়ে বাংলাদেশ ভূমি প্রশাসন (রাজস্ব) সরকারি কর্মচারী সমিতির সদস্যসচিব আজিজুল হক ও সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মামুন মিয়া এ বিষয়ে ভূমি ও আইন মন্ত্রণালয়ে একাধিক আবেদন করেছেন। তারা নতুন বিধিমালা-২০২০ সংশোধনের জোর দাবি জানিয়েছেন।