শায়রুল কবির খান
সত্যের জয় হবেই
প্রকাশ: ০৩:১৫ এএম, ৭ মার্চ,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:০৯ এএম, ২০ নভেম্বর, বুধবার,২০২৪
সংবাদকর্মী সংবাদ সংগ্রহ করেন আর সংবাদ মাধ্যম তা প্রচার করে। সংবাদকর্মীর সংবাদ সংগ্রহে ভুল হলে, সংবাদ প্রচার সঠিক হওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকে না। যদি সংবাদ সংগ্রহে এবং প্রচারের শুরুতেই থাকে অসৎ উদ্দেশ্য তাহলে কি দাঁড়ায়? যার উদ্দেশ্যই অসৎ তার কাছ থেকে কখনো সত্য কর্ম আশা করা যায় না। আমি নির্দিষ্ট করে কোনো সংবাদমাধ্যম বা সংবাদকর্মী কাউকেই অসৎ বলছি না। তবে হতাশ হই যখন দেশের প্রথম সারির কোনো সংবাদমাধ্যম বা সংবাদকর্মী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অতিরঞ্জিত তথ্য প্রচার করেন। আমার মতো আরও অনেকের মনে থাকার কথা, এই তো সেদিন যেসব সংবাদমাধ্যম বা সংবাদকর্মী বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব তারেক রহমানকে অকপটে তুলনা করেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সাথে, এমনকি অনেকেই অনুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। যেমন তারেক রহমান দেখতে, চলাফেরা, কথাবার্তা, চিন্তা-চেতনায়, বুদ্ধি-বিবেচনায়, সর্বোপরি আদব-কায়দায় অবিকল বাবার মতো। অথচ আজ সেসব সংবাদমাধ্যম এবং সংবাদকর্মী অবলীলায় কত রকম অসত্য প্রচার করে বেড়াচ্ছেন।
তাদের আচরণ খুব রহস্যজনক মনে হয়। তারেক রহমান যে দলের রাজনীতি করেন, সেই দলের সকল স্তরের নেতাকর্মী ও সমর্থকের ইচ্ছা এবং প্রত্যাশা তারেক রহমান ভবিষ্যতে দল এবং দেশ পরিচালনার যোগ্যতা অর্জন করুন। পাশাপাশি আমিও মনে করি, তারেক রহমান নিজেও এই প্রত্যাশা পোষণ করেন এবং প্রত্যাশা করাটাই স্বাভাবিক। তিনি যে দলের রাজনীতি করেন, সেই দলের নেতাকর্মী ও জনগণের সমর্থনে নেতৃত্ব গ্রহণ করে যেখানে দেশ পরিচালনা করবেন, সেখানে তিনি নিজ দলের ক্ষতি করে নিজ দেশের অমঙ্গল কামনা করে কোনোভাবেই নেতৃত্ব পাওয়ার স্বপ্ন দেখেন না। এমনকি কোনো পাগলের পক্ষে সম্ভব না, সে যে ঘরে বাস করবে সেই ঘর নড়বড়ে খুঁটি দিয়ে তৈরি করবে। তারেক রহমান হঠাৎ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব হননি। দীর্ঘদিন তিনিও দলের সাংগঠনিক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৯১-এর নির্বাচনে বগুড়ায় তার কর্মতৎপরতা দলকে সাহায্য করেছে। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের পর তিনি বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হতে থাকেন। দৈনিক দিনকালের প্রকাশনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়ে তিনি বৃহত্তর পরিসরে নিজেকে তুলে ধরতে শুরু করেন। এরপর যখন বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়, তখন সেটি পরিচালনার গুরুদায়িত্ব বর্তায় তারই ওপর। দল তাকে যে দায়িত্ব দিয়েছিলেন তিনি তা অত্যন্ত বিশ্বস্ততার সঙ্গে পালন করেছেন। মেধা, দক্ষতা ও সুদূরপ্রসারি দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তিনি বিএনপির প্রচার কৌশলে আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর পদ্ধতি প্রয়োগ করতে সক্ষম হন। হাওয়া ভবন কেন্দ্রিক সে প্রচারণা ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে কতোটা প্রভাব ফেলেছিল, তা নতুন করে বলার প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।
আজ যারা তারেক রহমান সম্পর্কে নানা ধরনের বানোয়াট তথ্য প্রচার প্রকাশ করে গলদঘর্ম হচ্ছেন, তাদের পরিচয় কী? তারা ২০০১ সালের নির্বাচনে পরাজিত শক্তিটির দোসর তাদের তল্পিবাহক শিখন্ডী। শোচনীয় পরাজয়ের যে অন্তজ্বালা তা থেকে সৃষ্ট ক্ষোভের গরল। তারা উগড়ে দিচ্ছেন তারেক রহমানের ওপর। এ কাজে স্বেচ্ছাসেবী ভূমিকায় নেমেছে কয়েকটি বিতর্কিত ও চিহ্নিত সংবাদমাধ্যম। তারা বিএনপি ও তারেক রহমানের ক্ষতি করার লক্ষ্যে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। নানা কৌশলে বিএনপির নেতাকর্মীদের মনে সন্দেহ সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। একান্নবর্তী পরিবারের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে প্রতিবেশী কিংবা আশপাশের কোনো কোনো অসৎ ব্যক্তি যেমন ওই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সন্দেহ অবিশ্বাসের বীজ বপন করে, তেমনি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ একান্নবর্তী বিএনপির মধ্যেও সন্দেহ, অবিশ্বাসের বিষবৃক্ষ জন্ম দেয়ার অপকৌশলে মেতে উঠেছে। এই পরিবারটিকে ক্ষতি করার লক্ষ্যে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম ও কিছু সংবাদকর্মী প্রতিদিন যেসব তথ্য উপস্থাপন করছে তা তিলকে তাল করারই নামান্তর। কিন্তু তাদের অবশ্যই মনে রাখা উচিত চালনি কিন্তু সুঁইয়ের ছিদ্র খুঁজে বেড়ায়। আমরা চাই না তাদের পরিচয়টা চালনির পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত হোক। তাদের মনে রাখা উচিত, অপপ্রচারের মেঘ সত্যের সূর্যকে বেশিক্ষণ ঢেকে রাখতে পারে না।
তারেক রহমানও রক্ত-মাংসের মানুষ। তারও ভুল হতে পারে। একজন মানুষের সব কাজ শুদ্ধ হবে এমন কোনো কথা নেই। দেখতে হবে তার কোনো কাজের পাল্লাটা ভারী। জাতীয়তাবাদী রাজনীতির নবীন নেতা হিসেবে অল্প কয়েক বছরে তারেক রহমান দেশবাসীর মনে যে আশার আলো জ্বালিয়েছেন, তা কি ওই অপপ্রচারকারীদের দু-এক ফুৎকারেই নিভে যাবে? এটা তো অস্বীকার করা যাবে না যে, বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ তারেক রহমানের মাঝে বাংলাদেশের আগামী নেতৃত্বের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাচ্ছে। তরুণ এই নেতা একদিন এ দেশকে তার চিন্তাচেতনা আর ভিশনারি নেতৃত্বের দ্বারা সমৃদ্ধির শিখরে নিয়ে যাবেন এ প্রত্যাশা প্রতিটি বাংলাদেশীর। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশে উদীয়মান এ জ্যোতিষ্ককে কালো মেঘের আবরণে ঢেকে ফেলতে জোটবদ্ধ হয়েছে ওরা। কিন্তু ওরা জানে না, ওদের এসব অপচেষ্টা বৃথা যাবে। তারেক রহমান এসব অপপ্রচার আর চক্রান্তের বেড়াজাল ছিন্ন করে তার প্রিয় দেশবাসীর পাশে ফিরে আসবেনই। কারণ সত্যের জয় অবধারিত। মিথ্যা চিরদিনই হয় পরাজিত, নির্বাসিত।
আমার অনেক আবেগের লেখা এটাই মাননীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয়কে নিয়ে প্রথম লেখা- তিনি আমাদের সবার আবেগ-অনুভূতি প্রকাশের স্থান।
মে মাসের ৭ তারিখ ২০০৭ দৈনিক দিনকাল
মহান আল্লাহ মাননীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রতি সহায় হোন আমিন।