বাংলাদেশের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আরোপে ভারতের সহযোগিতা চায় কানাডার হিন্দু কোয়ালিশন
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৭:৩২ পিএম, ১ জানুয়ারী,
বুধবার,২০২৫ | আপডেট: ০২:৪৩ পিএম, ৪ জানুয়ারী,শনিবার,২০২৫
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশে হিন্দুসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু ধর্মীয়, আদিবাসী ও উপজাতি জনগোষ্ঠী ‘ভয়াবহ পরিস্থিতি’ পার করছে বলে অভিযোগ করেছে ‘দ্য গ্লোবাল বেঙ্গলি হিন্দু কোয়ালিশন-জিবিএইচসি’ নামের একটি সংগঠন। তারা বাংলাদেশের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আরোপে ভারতের সহযোগিতা চেয়েছে।
গত সোমবার ফরেন করেসপনডেন্টস ক্লাব অব সাউথ এশিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে কানাডার টরন্টোভিত্তিক সংগঠনটির পক্ষ থেকে এই দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবি করেন, বাংলাদেশে ১৯৫১ সালে মোট জনসংখ্যার ২২ শতাংশ হিন্দু থাকলেও ২০২২ সালের মধ্যে তা কমে ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০৪৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশে হিন্দু জনসংখ্যা শূন্যের ঘরে নেমে আসতে পারে বলে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবুল বারাকাত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বাংলাদেশে হিন্দুদের সংখ্যা কমে যাওয়ার পেছনে ‘পদ্ধতিগত সহিংসতা, জোরপূর্বক ধর্মান্তকরণ এবং বাস্তুচ্যুতিকে’ দায়ী করেছে তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১৮৪৭ সালে ভারত ভাগের পর পাঞ্জাবে জনসংখ্যা বিনিময় হয়েছিল, কিন্তু বাংলায় সেটা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং মর্যাদা নিশ্চিত করার জন্য এই অসমাপ্ত প্রক্রিয়াটি ফের পর্যালোচনার সময় এসেছে।”
সংগঠনটি দাবি করেছে, ৫ অগাস্টের পর গঠিত প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার ঘটনা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এ সময়ে বাংলাদেশে ৬৫টি মন্দিরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাট ছাড়াও জোর করে শ্মশান দখলের মতো ঘটনাও ঘটেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সংগঠনের প্রতিনিধি অরুণ দত্ত দাবি করেন, “বিচারিক স্বাধীনতার অবক্ষয় এবং ভিন্নমতকে দমন করার জন্য ক্ষমতার পদ্ধতিগত অপব্যবহার সংখ্যালঘুদের আগের চেয়ে আরও বেশি দুর্বল করেছে।”
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির অন্যতম প্রতিনিধি সিতাংশু গুহ দাবি করেন, বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের টিকে থাকার অর্থ শুধু ঐহিত্য রক্ষাই নয়, এটি ন্যায়বিচার এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইও।
জিবিএইচসি ভারত, ব্রিটেন এবং বিশ্ব সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
তারা ৫টি দাবি জানিয়েছে। দাবিগুলো হলো-
১. হিন্দুসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু, আদিবাসী ও উপজাতিদের সুরক্ষায় বাংলাদেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মোতায়েন
২. হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় আলাদা সুরক্ষিত অঞ্চল তৈরি
৩. ভূমিসহ জনসংখ্যা বিনিময় সম্পন্ন করা।
৪. জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে ভারত সবসময়ই বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়ে এসেছে। ঢাকার বর্তমান প্রতিকূল এবং জিহাদিপন্থী শাসনের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকারের কৌশল পুনর্বিবেচনা করা এবং গণতান্ত্রিক ও মানবিক মূল্যবোধের সাথে মিল রেখে ভূমিকা রাখা।
৫. বাংলাদেশে বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপে জাতিসংঘ এবং এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি ভারতের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো।