নগদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৩৩ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪ | আপডেট: ০৭:৩৮ এএম, ২৬ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নগদ লিমিটেডের অনেক অনিয়ম পেয়েছেন প্রশাসক। এর মধ্যে একটি হলো—প্রকৃত মানি ও ই-মানির মধ্যে ৬০০ কোটি টাকার ঘাটতি। ই-মানি তৈরির মাধ্যমে এই টাকা এসেছে যা নগদে প্রকৃতপক্ষে ছিল না। সংশ্লিষ্টদের মতে, আর্থিক খাতে এটি বড় ধরনের জালিয়াতি।
দ্বিতীয়ত, সরকারি ভাতার জন্য নির্ধারিত ৪১টি ডিস্ট্রিবিউশন অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কয়েক বছরে মোট প্রায় ১ হাজার ৭১১ কোটি টাকা অননুমোদিত উত্তোলন হয়েছে। প্রশাসকের পক্ষ থেকে বিষয়টি ডাক বিভাগের মহাপরিচালককে জানানো হয়েছে। অনিয়মে জড়িত নগদ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছেন প্রশাসক।
তৃতীয়ত, প্রশাসক নিয়োগের পর থেকে নগদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর এ মিশুকসহ প্রতিষ্ঠানটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অফিসে আসছেন না।
এ অবস্থায় নগদ লিমিটেডের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পেমেন্ট ও সেটেলমেন্ট সিস্টেম অ্যাক্ট, ২০২৪ কার্যকর হওয়ার অপেক্ষায় আছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আইনটি দ্রুত কার্যকর করার জন্য অন্তবর্তী সরকারকে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নগদের আরো অনিয়ম
বাংলাদেশ ডাক বিভাগের একটি ডিজিটাল আর্থিক সেবা হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিয়ে ২০১৯ সালে বাজারে আসে নগদ। এখনো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অস্থায়ী লাইসেন্স দিয়ে তা চলছে। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত আগস্টে 'নগদ' পরিচালনায় ও লেনদেনে অনিয়মের অভিযোগে প্রশাসক নিয়োগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
জানা গেছে, গত জুলাইয়ে জাতীয় সংসদে পাস হওয়া 'পেমেন্ট ও সেটেলমেন্ট সিস্টেম অ্যাক্ট, ২০২৪' আইনের ৩১ ধারা অনুযায়ী নগদে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়। তবে, আইনটি প্রকাশিত হলেও তা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়নি।
কেননা, আইনের ধারা ১-এর ৩ উপধারায় বলা হয়েছে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে এই আইন কার্যকর হইবে। তবে সরকার এখনো কোনো তারিখ নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেনি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ভাষ্য—পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট সিস্টেম রেগুলেশন, ২০০৮ ও বাংলাদেশ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস রেগুলেশন, ২০২২-এর আওতায় ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে।
গত ১০ সেপ্টেম্বর প্রশাসক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন 'নগদ'র এক পরিচালক। এর পরিপ্রেক্ষিতে, গত সপ্তাহে নিয়মিত ব্যবসা পরিচালনার বাইরে 'নগদ'র সব কার্যক্রমের ওপর দুই সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করেন হাইকোর্ট।