রূপগঞ্জে পুলিশ পরিচয়ে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় : চার দিনেও মামলা রুজু করেনি পুলিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:২১ পিএম, ১৬ জুলাই,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:৫০ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের তারাবো পৌরসভার গন্ধর্বপুর এলাকার দরিদ্র মেধাবী ছাত্র ও ইজিবাইক চালক মমিন মিয়াকে (২৫) অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের চারদিন পরেও আজ শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত মামলা রুজু করেনি পুলিশ। এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মমিন মিয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা। আওয়ামীলীগ সমর্থিত সন্ত্রাসীরা তাকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করছে বলে ভুক্তভোগি পরিবারের অভিযোগ। পুলিশ নিরব ভূমিকায় রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, রূপগঞ্জের গন্ধর্বপুর গ্রামের গরিব কাঠুরিয়ার সন্তান মমিন মিয়া। ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার অদম্য ইচ্ছে তার। সে বর্তমানে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজে মাষ্টার্সে লেখাপড়া করছে। হতদরিদ্র হওয়ায় ও লকডাউনে মমিন মিয়া কখনও টিউশনি আবার কখনও শাক-সবজি বিক্রি করে। কখনও বা দিনমজুর। আবার কখনও ভাড়ায় রিক্সা কিংবা ইজিবাইক চালিয়ে অর্থ উপার্জন করে তার লেখাপড়া ও সংসার চালায় মমিন মিয়া। এরই মধ্যে গত ১৩ জুলাই মঙ্গলবার ভুলতা এলাকা থেকে ইজিবাইকে বাড়ি ফেরার পথে ১০/১২ সদস্যের একদল আওয়ামী সন্ত্রাসী তাকে গতিরোধ করে। পুলিশ পরিচয়ে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় নির্জন স্থানে। সেখানে তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ দাবি করে পরিবারের সদস্যদের কাছে মোবাইলে ফোন করে। মমিন মিয়া ইজিবাইকে একটি শিশু বাচ্চাকে চাপা দিয়েছে মর্মে তার চিকিৎসার জন্য পরিবারের সদস্যদের কাছে ৩০ হাজার টাকা পাঠাতে বলে সন্ত্রাসীরা। তা না হলে গণপিটুনিতে মমিন মিয়াকে হত্যা করে হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করেন। পরে তাদের দেয়া মোবাইল নাম্বরে মমিনের বড় ভাই আমিন মিয়া ১০ হাজার টাকা বিকাশে পাঠান। এক পর্যায়ে মমিন মিয়া মুক্ত হয়ে সন্ত্রাসীদের কার্যক্রমের প্রতিবাদ করে। এ সময় সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে মমিনের বাম হাত ও ডান পা ভেঙ্গে দেয়। রাতে অপহরণকারীরা ইজিবাইক ও মমিন মিয়াকে শীতলক্ষ্যার বীর প্রতীক গোলাম দস্তগীর গাজী সেতুর কাছে ফেলে যায়। পরে মমিন মিয়াকে উদ্ধার করে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপারে মমিন মিয়ার বড় ভাই আমিন মিয়া বাদী ছয় জনকে আসামী করে রূপগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
রূপগঞ্জ থানার এসআই ও অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা বিএম মেহেদী হাসান বলেন, অভিযোগের প্রাথমিক সততা মিলেছে। এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) হুমায়ূন কবির করেন, মামলাটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।