সরকারের পতন ঘটাতে এসে বিএনপি নিজেদের পতন ঘটিয়েছে : তথ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩৭ পিএম, ১২ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৪১ পিএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
সরকারের পতন ঘটাতে এসে বিএনপি নিজেদের পতন ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগকে ধাক্কা দিতে গিয়ে বিএনপি নিজেরাই ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেছে। আওয়ামী লীগ এমন শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে আছে যে, কেউ ধাক্কা দিলে সেই নিচে পড়ে যায়। কঠিন দেওয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খেলে, দেওয়ালের যেমন কিছু হয় না, উল্টো যে ধাক্কা দেয় সেই মাথায় ব্যথা পায়। তেমনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ধাক্কা খেতে এলে আওয়ামী লীগের কিছুই হবে না। উল্টো বিএনপি ভেঙে পড়ে যাবে।
আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম মাঠে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি মনে করেছে সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে সরকারের ভিত নড়ে যাবে। সরকারের একটু কাতুকুতু লেগেছে এর বেশি কিছু হয়নি। তারা যেদিন পদত্যাগ করেছে সেদিনই সংসদ সচিবালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে সংসদের আসন শূন্য ঘোষণা করেছে। সামনে উপ-নির্বাচন হবে, এখন তারা বুঝবে কী ভুলটি তারা করেছেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি বলেছিল সরকারের পতন ঘটাবে, ১০ তারিখের পর থেকে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ চলবে। তারা সরকারের পতন ঘটাতে এসে নিজেদের পতন ঘটিয়ে দিয়েছেন। সরকারের পদত্যাগ চাইতে এসে নিজেরা পদত্যাগ করে বসলেন সংসদ থেকে। বিএনপি বলেছিল, ১০ ডিসেম্বর তাদের এক দফা দাবি। আর সমাবেশে তারা দিল ১০ দফা দাবি। তাদের দাবিগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়লাম। দাবিগুলো ঘোড়ার ডিমের মতোই ১০টা ঘোড়ার ডিম, নতুন কোনো কিছু সেখানে নেই। এক দফা থেকে এখন ১০ দফায় গেছে। গাধা জল ঘোলা করে খাওয়ার মতোই বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করার কথা বলে গোলাপবাগ মাঠে সমাবেশ করেছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। অনেক হিসাব-নিকেশ করেই বিএনপি ঢাকায় সমাবেশের আয়োজন করেছিল। ঘোষণা দিয়েছিলেন ১০ লাখ মানুষের সমাবেশ হবে। শেষমেশ বিএনপি অফিসের ভেতরে পাওয়া গেল ১৫টি তাজা বোমা, ১৬০ বস্তা চাল, আড়াই লাখ পানির বোতল আর লাঠিসোটা। তার মানে হচ্ছে তারা আসলে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালানোর জন্য নয়াপল্টনে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ৭ তারিখ থেকে সমাবেশ শুরু করে পুলিশের ওপর হামলা পরিচালনা করলো বিএনপি। যখন সরকার কঠোর হলো তখন আবার বসলো, তারা বেছে নিলো গোলাপবাগ মাঠ। সেখানে চট্টগ্রামের দেওয়ান হাটের মতো গরুর হাট বসে। এত ময়দান থাকতে তারা বেছে নিলো গরুর হাটের ময়দান। পঞ্চাশ হাজার বর্গফুটের এ ময়দানে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ হাজার মানুষ ধরে। আশপাশের রাস্তা মিলিয়ে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ হাজার মানুষের সমাবেশ করলেন তারা। চট্টগ্রামের মানুষ বারবার আন্দোলন-সংগ্রামের অগ্রভাগে থেকেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের সংগ্রামের কাফেলাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে চট্টগ্রামের নেতাকর্মীরা। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে পাখি শিকার করার মতো করে মানুষ শিকার করে আমাদের নেত্রীকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। চট্টগ্রামের ৩২ জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সেদিন জীবন দিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, আজ সমগ্র বাংলাদেশ বদলে গেছে। আয়তনের দিক দিয়ে বাংলাদেশ পৃথিবীর ৯২তম, অথচ পৃথিবীতে ধান উৎপাদনে তৃতীয়, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয়, সবজি উৎপাদনে চতুর্থ, আলু উৎপাদনে সপ্তম, আম উৎপাদনে দ্বিতীয়। বাংলাদেশে এখন খালি পায়ে মানুষ দেখা যায় না। ছেঁড়া কাপড় পরা মানুষ সহজে দেখা যায় না, আকাশ থেকে কুঁড়েঘর সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না। এটিই হচ্ছে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। এটি কোনো জাদুর কারণে হয়নি, শেখ হাসিনার জাদুকরি নেতৃত্বের কারণে এইভাবে বাংলাদেশ বদলে গেছে। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। এর আগে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান, ড. আবু রেজা মো. নেজামুদ্দিন প্রমুখ।