শাল্লায় হিন্দুদের বাড়ি-ঘরে হামলা, আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:০৮ পিএম, ১১ মে,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০১:০৬ পিএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
সুনামগঞ্জের শাল্লার উপজেলার সংখ্যালঘু নোয়াগাঁও গ্রামে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মামুনুল হক সমর্থকদের হামলা লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ দেখে আরও ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
গতকাল সোমবার (১০ মে) বিকেলে জেলা ডিবি পুলিশের একটি দল তাদের নিজ গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ইউনিয়নের ধনপুর গ্রামের আব্দুল রশিদের ছেলে হান্নান মিয়া (৫০) ও পার্শ্ববর্তী চন্ডিপুর গ্রামের সোয়েব মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলাম (২২)। গত ২ মে থেকে নোয়াগাঁও গ্রামের ঘটনায় তিনটি মামলা তদন্ত করছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
হান্নান মিয়া সরমঙ্গল ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও একই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য। মামলার প্রধান আসামি যুবলীগ নেতা ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম স্বাধীন মিয়াসহ মোট ৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিবি পুলিশ।
দুইজনকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশের জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার বলেন, ‘নোয়াগাঁও গ্রামের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে দুইজনকে শনাক্ত করে আজ বিকেলে তাদেরকে নিজ গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আগামীকাল মঙ্গলবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।’
প্রসঙ্গত, জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য বিরোধী আন্দোলনের নেতা মাওলানা মামুনুল হকের সমর্থকরা গত ১৭ মার্চ বুধবার নোয়াগাঁও গ্রামের ৮৮ টি বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুর করেছে। এসময় গ্রামের ৫ টি মন্দির ভাংচুর করা হয়। নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাস আপন নামে এক তরুণের ফেসবুক আইডি থেকে মাওলানা মামনুল হককে কটাক্ষ করে কথিত স্ট্যাটাসের প্রতিক্রিয়ায় বুধবার সকাল ৯ টায় এই তাণ্ডব চালানো হয়।
নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় থানায় গত ১৮ মার্চ দুটি পৃথক মামলা করা হয়। ১৫০০ জন অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলার বাদী শাল্লা থানার এসআই আব্দুল করিম। নোয়াগাঁও গ্রামবাসীর পক্ষে অন্য মামলাটি করেছেন স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল।
এরপর ২৫ মার্চ আদালতে আরেকটি মামলা দায়ের করেন নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা সেই ঝুমন দাশের মা নিভা রানী দাশ। পৃথক তিনটি মামলায় আসামি করা হয়েছে দিরাই থানার সরমঙ্গল ইউনিয়নের চন্দ্রপুর ও নাচনী এবং শাল্লা থানার হবিবপুর কাশিপুর গ্রামের নামাংকিত ৫০ জনসহ ১৫০০ জনকে।
মামলার প্রধান আসামি ঘটনার উস্কানীদাতা নাচনী গ্রামের বাসিন্দা সরমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য যুবলীগ নেতা শহিদুল ইসলাম স্বাধীন মিয়া। গত ২ মে থেকে তিনটি মামলাই তদন্ত করছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।