কাঁকনহাটে গম জব্দ অভিযোগের তীর উঠেছে মেয়রের দিকে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১১ এএম, ১০ মে,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৫৬ পিএম, ১৫ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাট পৌর মেয়র একেএম আতাউর রহমান খাঁনের ঘনিষ্ঠ সহচর বা উপদেষ্ঠা আতাউর রহমান আতার বাড়ীর প্রধান ফকট হতে (খাদ্য অধিদপ্তরের সীল মোহর সংবলিত) ৪০০ বস্তা গম জব্দ করেছে পুলিশ। এদিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা জুড়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃস্টি হয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়, জনমনে দেখা দিয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া, পাশপাশি অভিযোগের তীর উঠেছে পৌর মেয়রের দিকে। কেউ কেউ বলছে, মেয়রের নেপথ্যে মদদ ব্যতিত তার ঘনিষ্ঠ সহচরের পক্ষে এমন দুঃসাহসিক অপকর্ম করা অনেকটা দুরুহ।
জানা গেছে, গতকাল ৮মে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কাঁকনহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের রসুলপুর কুমদপুরে খাদ্য অধিদপ্তরের সীলমোহরকৃত ৪০০ বস্তা গম উদ্ধার করেছে কাঁকন হাট ফাঁড়ি পুলিশ।প্রতিটি বস্তায় ৫০ কেজি করে গম রয়েছে। কাঁকনহাট পৌরসভার মেয়র এ.কে.এম আতাউর রহমান খানের ঘনিষ্ঠ সহচর বা প্রধান উপদেষ্ঠা আতাউর রহমান আতার বাড়ীর প্রধান ফটক থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
কাঁকনহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মাহমুদুল হাসান বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি খবর পান রসুলপুর কুমদমপুরে আতাউর রহমানের বাড়ির সামনে ট্রলি থেকে সরকারী সীল মোহরকৃত গমের বস্তা নামনো হচ্ছে। খবর পেয়েই তিনি সঙ্গীয় ফোর্সসহ সেখানে যান এবং ট্রলি ও মাটিতে নামানো গম উদ্ধার করেন। পুলিশের অবস্থান টের পয়ে ট্রলি ড্রাইভাররা পালিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, এ সময়ে আতাউর তাদের সামনে আসেনি। তবে গম তার ক্রয় করা দাবী করেন, কিন্তু এর স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে বললে তিনি আজ রবিবার পর্যন্ত কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারনেনি। এদিকে ঘটনা স্থলে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) এবং গোদাগাড়ী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাতেই আসেন। এ সময়ে আতাউরকে মোবাইলে তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখাতে বলেন। আতা না এসে তার প্রতিনিধি কাঁকনহাট পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর গোলাম মোর্তুজা শেখ, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নবাবগত কাউন্সিলর ও পৌর ১ নম্বর প্যানেল মেয়র আল মামুন, বর্তমান পৌর মেয়রের ব্যক্তিগত সেক্রেটারী চয়ন ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি খাত্তাব পুলিশের নিকট একটি ভূয়া বিল ভাউচার দাখিল করে বলে জানান তিনি। এ ঘটনায় মেয়রের ঘনিষ্ঠ সহচর আতাউর রহমান আতাকে প্রধান ও ১০ থেকে ১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে গোদাগাড়ী মডেল থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ ধারায় একটি মামলা হয়েছে এবং আতাউরকে গ্রেফতারের চেস্টা চলছে বলে জানান অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান।
এদিকে কাঁকনহাট পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবীর বলেন, তিনি ঘটনা সম্পর্কে জানেন এবং ঘটনা স্থলে রাতেই গিয়েছিলন, আতাউর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন।
তিনি বলেন, দলীয় শৃংখলা ভঙ্গ, দূর্নীতি ও কালোবাজারীর জন্য তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হবে, সেই সঙ্গে এর সঙ্গে যুক্ত এবং সরাসরি সহযোগিতায় করায় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর গোলাম মোর্তুজা শেখকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। তিনি আরো বলেন, শুধু তাই নয় আল মামুনকে দল থেকে বহিস্কার করার জন্য অনুরোধ করা হবে। এছাড়াও খাত্তাবকে পৌর ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতির পদ থেকে বহিস্কার করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী সুত্র জানায়, শনিবার দিবাগত রাত দুই টার দিকে বর্তমান মেয়রের বাড়িতে একটি গোপন বৈঠক হয়, সেখানে মোর্তুজা, সাবেক কাউন্সিলর আমিরুল ইসলাম আল মামুন, খাত্তাব ও মেয়রের ছেলে স্বপন উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাঁকনহাট পৌর মেয়র এ.কে.এম আতাউর রহমান খাঁন বলেন, তিনি গ্রামের বাড়ি পলাশীতে থাকেন এবং কাঁকনহাটের কাঁকনপাড়ায় তাঁর ছেলে স্বপন থাকেন। তিনি বলেন, সেখানে কোন প্রকার গোপন বৈঠক হয়নি এবং তিনি এর সঙ্গে জড়িত নয়।