ঝিনাইদহে ইমরান হত্যা, বাড়ি উঠতে পারছে না পুরুষ সদস্যরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৬ পিএম, ২৪ এপ্রিল,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০১:৫৭ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পাকা গ্রামের অসহায় বিশারত আলী ৩ প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে জীর্ণশীর্ণ ঘরে বসবাস করেন। অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করে সংসার। বাড়িতে প্রতিবন্ধী সন্তানরা লালন পালন করেন গরু ছাগল। কিন্তু এখন তার সংসার তছনছ।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গ্রাম্য মারামারিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ইমরান নামের এক যুবক। এরপর ওই বাড়িসহ বেশকিছু বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুট করে নিয়ে যাওয়া হয় আড়াই লাখ টাকা দামের ৩ টি গরু। বাড়িছাড়া হয় বিশারত। এখন বাড়িতে উঠতে চাঁদা দাবী করা হচ্ছে। যারা চাঁদা দিয়েছে তারা বাড়ি উঠেছে।
জানাযায়, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি শালিসী বৈঠকে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে মারামারিতে আহত হন পাকা গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে ইমরান হোসেন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান।
এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে পুলিশ এজাহার ভুক্ত ৩ জন আসামীকেই গ্রেফতার করে। আসামী গ্রেফতার হলেও হত্যাকে পুঁজি করে অসহায় পরিবারদের বাড়ি-ঘর লুটপাট করা হচ্ছে। নিয়ে যাওয়া হচ্ছে গরু, ছাগল। ভুক্তভোগি সেবেরা খাতুন ঘটনার বর্ননা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
তিনি বলেন, আমার পাগল ছেলে-মেয়ে গরুর পুষে বড় করছে। একটি গরু গাভিন ছিল। আমরা কিছু জানিনে। আমাদের মত অসহায় পরিবারের গরুও নিয়ে গেল। আল্লাহ এর বিচার করবে। একই গ্রামের আমিরুল ইসলাম বলেন, ইমরান মারা যাওয়ার পর তার পিতা আব্দুল মালেক হত্যা মামলা নিয়ে বানিজ্য শুরু করেছে।
আব্দুল মালেক একই এলাকার জুয়েল, মান্নান, আছালত, তকব্বার, সাব্দাল, সাঈদসহ অসহায়দের উপর নির্যাতন করছে। বাড়িতে উঠতে হলে তাদের মোটা অংকের টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে। এ ঘটনার পর এখনও বাড়ি ছাড়া পাকা গ্রামের শফিউদ্দিন, আলেক, বাদশা, মজিদ, ফরিদ, ভুট্টোসহ বেশ কয়েকজন। এছাড়াও প্রায় ৫০ বিঘা জমি অনাবাদী পড়ে আছে। আবাদ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে চাঁদাবাজির বিষয়টি অস্বীকার করে নিহত ইমরানের পিতা আব্দুল মালেক বলেন, মার্ডারের পর কিছু গরু-বাছুর আমাদের লোকজন নিয়ে আসছিল। সে সময় পুলিশের মাধ্যমে ফেরত দেওয়া হয়েছে। চাঁদাবাজি করা হচেছ না। যারা বাড়িতে আসছেন না তারা বাড়িতে আসুক। তাদের কেউ কিছু বলবে না।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, ইমরান হত্যার ঘটনায় হত্যা মামলা হলে আসামীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। লুটপাট ও চাঁদাবাজির বিষয়ে কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।