রূপগঞ্জে কলেজ ছাত্র রিয়ন হত্যা মামলা, পুলিশের তদন্তে অনাস্থা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০৬ পিএম, ২২ এপ্রিল,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:৪২ এএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় সলিমউদ্দিন চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এর একাদশ (মানবিক) এর প্রথম বর্ষের ছাত্র রাকিবুল ইসলাম রিয়ন হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার পুলিশি তদন্তের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছে বাদি পক্ষ। সেই সাথে মামলার বাদি আনোয়ারা সুলতানা (জোসনা) মামলাটি অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অথবা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) এর কাছে হস্তান্তরের জন্য আবেদন করেন।
গত ১২ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবর এ আবেদন করেন। আবেদনে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের আসামী ধরায় অনিহা, সেই সাথে তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. ইফাত আহম্মেদ এর আচরন সন্দেহজনক ও মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
আনোয়ারা সুলতানা (জোসনা) এর দাবি, আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হোক। এজাহারভূক্ত কোন আসামি যাতে আইনী অবহেলা ও দুর্বলতায় ছাড় না পায় তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।
এছাড়াও মামলার বাদি বিনয়ের সহিত অনুরোধ করেন কোন প্রভাবশালী মহল, রাজনীতিবিদ যাতে এ সকল অপরাধীদের অন্যায় কাজের সহযোগিতা না করেন তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
তিনি আরো জানান, গত ২৭ মার্চ (শনিবার) তিনি, তার স্বামী ও ছেলে রিয়ন তার মেয়ে নুসরাতকে নিয়ে ভুলতা হাসপাতালে যাওয়ার পথে পূর্ব শক্রতা ও জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে ওত পেতে থাকা সস্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা রামদা, চাপাতি, ছেন, চাইনিজ কুড়াল, ছুরি, লোহার রড, এসএস পাইপসহ দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা তাদের এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে। তাদের সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়।
এক পর্যায়ে তাদের ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে ঢাকার মগবাজারের রফিকুল ইসলাম হাসপাতালে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০ টায় রিয়ন মারা যায়।
এ ঘটনার পর ২৮ মার্চ তিনি ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে রূপগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ ৪ জনকে গ্রেফতার করলেও বাকিরা প্রকাশ্যে বিচরণ করছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রূপগঞ্জ থানার এসআই ইফাত রহস্যজনক কারণে তাদের গ্রেফতার করছেনা।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রূপগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) ইফাত বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। এজাহারভুক্ত আসামীরা সবাই পলতাক রয়েছে। তিনি বাদির সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে আত্নগোপনে থাকা আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলেও তিনি জানান।
রূপগঞ্জ থানা পরিদর্শক (তদন্ত) জসিম উদ্দিন জানান, ইতিমধ্যে চার আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এগুলো তদন্ত চলছে। আশা করি দ্রুত এ মামলার অন্য আসামীদের গ্রেফতার করা হবে। আসামি ধরার জন্য আমাদের নিয়মিত কর্মকান্ড অব্যাহত রয়েছে।