ধরে নিয়ে যাওয়া পুলিশ সদস্যকে ফেরত দিল বিএসএফ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৪২ পিএম, ১৬ ফেব্রুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ১০:০০ এএম, ৭ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
পঞ্চগড় সীমান্ত থেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পর পুলিশ সদস্য ওমর ফারুককে (২৪) ফেরত দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার ঘাগড়া সীমান্তের ৭৫৩ মেইন পিলারের মোমিন পাড়া এলাকায় বিজিবি-বিএসএফ ব্যাটালিয়ন পর্যায়ের পতাকা বৈঠকের পর ওমর ফারুককে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেন বিএসএফ কর্মকর্তা। এ সময় ওই পুলিশ সদস্যের মাথায় ব্যান্ডেজ দেখা যায়।
এসময় পতাকা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নীলফামারীস্থ ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সিইও আব্দুল্লাহ আল মামুন, ২১ বিএসএফ ব্যটালিয়নের কমান্ড্যান্ট জিএস টমার, পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায়, পঞ্চগড় সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জামাল হোসেনসহ বিজিবি ও পঞ্চগড় পুলিশের কর্মকর্তারা।
গত রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেলার সদর উপজেলার হাঁড়িভাসা ইউনিয়নের মোমিনপাড়া সীমান্ত থেকে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।
অন্যদিকে জামালপুরের বকশীগঞ্জ সীমান্তে কাঁটাতারের প্রায় ১৫০ গজ ভেতরে ভারতীয় ভূখন্ডে পড়ে ছিল অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ। এ নিয়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ধরে নিয়ে যাওয়া ওই কনস্টেবল পঞ্চগড় আদালতে বিচারকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। তার বাড়ি দিনাজপুর জেলায়। ওই পুলিশ সদস্যকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে পুলিশ ও বিজিবি নিশ্চিত করেছে।
স্থানীয়রা জানান, রবিবার রাত সাড়ে ৮টায় কনস্টেবল ওমর ফারুকসহ তিনজন পঞ্চগড় সদর উপজেলার মোমিনপাড়া সীমান্ত এলাকায় যান। এ সময় কয়েকজন ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে তাদের তর্ক হয়। তর্কের একপর্যায়ে তারা ওমর ফারুককে আটক করে মারধর করেন। এ সময় পালিয়ে যান অপর দুজন। পরে পার্শ্ববর্তী ভারতীয় চানাকিয়া বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা এসে তাকে আটক করে নিয়ে যান।
পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আবু আক্কাছ আহমদ বলেন, ওই পুলিশ সদস্য আদালতে বিচারকদের নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। তার ব্যবহৃত মোটরসাইলেকটি উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। তার সঙ্গে আরও দুজন ছিলেন বলে আমরা শুনেছি। তবে কারা ছিলেন এবং কেন সীমান্ত এলাকায় গিয়েছিলেন- এ বিষয়ে আমরা এখনো নিশ্চিত না। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
অন্যদিকে বকশীগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া কামালপুর সীমান্তে এক যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ নিয়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে কামালপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী তুরংপাড়ার ১০৮৮/৮৬ সীমানা পিলার এলাকায় বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠকে বিজিবির ১০ সদস্যের টিমের নেতৃত্ব দেন কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আজমল হোসেন ও বিএসএফের ছয় সদস্যের টিমের নেতৃত্ব দেন এসি একে সিংহ।
বৈঠকশেষে ৩৫ বিজিবির কামালপুর বিওপির কোম্পানি কমান্ডার নায়েক সুবেদার আজমল হোসেন জানান, লাশটি সীমান্ত কাঁটাতারের প্রায় ১৫০ গজ ভেতরে ভারতীয় ভূখন্ডে পড়ে ছিল। স্থানীয়রা কেউ লাশটির শনাক্ত করতে না পারায় ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে গেছে বিএসএফ।
বকশীগঞ্জ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম সম্রাট জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার লোকজন কেউ লাশটির শনাক্ত করতে পারেননি। তাই তার পরিচয় জানা যায়নি।
অপরদিকে সীমান্তে গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়ার খবরে কামালপুর ইউনিয়নের লাউচাপড়া এলাকার শহিজল মিয়া ওরফে শিক্কু মিয়ার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। পরিবারের সদস্যদের দাবি, গত দুদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন শহিজল মিয়া। তিনি ওই এলাকার ফারাজ উদ্দিনের ছেলে ও দুই সন্তানের জনক।
শহিজল মিয়ার স্ত্রী মলিদা বেগম জানান, তার স্বামী গত শনিবার সকালে বাড়ি থেকে বের হন। বিকালে মেয়ের মোবাইলে ফোন দিয়ে জানান, তিনি ভারতীয় সীমানায় আছেন। এর পর থেকেই তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ওই লাশটি শিক্কুর কিনা তা তারা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি।