মা ইলিশ রক্ষায় লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় ২২ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৩ পিএম, ১২ অক্টোবর,শনিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৯:৪৭ এএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় ১২ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে লক্ষ্মীপুরের জেলেদের মধ্যে ২৫ কেজি করে ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিংয়ের (ভিজিএফ) চাল বিতরণ করা হবে।
জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৫২ হাজার জেলে রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪৩ হাজার ৩০০ জেলে নিবন্ধিত রয়েছেন। এসব জেলে মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় ১২ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন মেঘনা নদীতে সব ধরনের জাল ফেলা ও মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জানা গেছে, এ সময়জুড়ে লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। মেঘনা নদীর এই এলাকাকে ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময় এসব এলাকায় সব ধরনের ইলিশ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও মজুতকরণ নিষিদ্ধ রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জেলেদের সচেতন করতে নদী এবং উপকূলবর্তী এলাকায় মাইকিং ও প্রচারপত্র বিতরণসহ সব ধরনের প্রচার অব্যাহত রেখেছে জেলা প্রশাসন ও জেলা মৎস্য বিভাগ।
সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট ঘাট এলাকার জেলে আফজাল মিয়া ও সেলিম মাঝি বলেন, জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় এবং উৎপাদন বাড়াতে সরকার যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেটা মেনে জেলেরা নদীতে যাবে না। সরকারের আইন মানা হবে। কিন্তু জেলেদের পুনর্বাসনের কথা এখনো হয়নি। প্রত্যেক জেলে যেন সরকারি সহায়তা পান সেটাই আশা করেন তারা। পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের জন্য বরাদ্দ চাল লুটপাট না করে সঠিক তালিকা তৈরি করে দ্রুত যেন তা পেতে পারেন সেটা নিশ্চিতের দাবিও জানান।
কয়েকজন জেলে বলেন, বর্তমানে যেসব ইলিশ পাওয়া যায়। সেগুলো আকারে অনেক ছোট। পাশাপাশি ডিমওয়ালা ইলিশ কম পাওয়া যায়। যদি এই অভিযান আরও ১০ দিন পরে দেওয়া হতো, তাহলে মা ইলিশ রক্ষায় ও জাটকা সংরক্ষণের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেটা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হতো।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে নদীতে মৎস্য বিভাগ, জেলা-উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ সময়ে জেলেদের জন্য ২৫ কেজি হারে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে। এরপরও যারা আইন অমান্য করে নদীতে যাবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত বছরের অভিযান সফল হওয়ায় ইলিশের উৎপাদন কয়েক গুণ বেড়েছে। এবারও অভিযান সফল হলে অধিক পরিমাণ ইলিশ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, ইতোমধ্যে বরাদ্দের ভিজিএফের চাল জেলেদের মধ্যে বিতরণ জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক জেলেকে ২৫ কেজি হারে চাল দেওয়া হবে। কেউ বাদ যাবে না। নিষেধাজ্ঞা মেনে জেলেরা নদীতে যাবে না বলে আশা করি। আর যারা আইন অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জেল-জরিমানা করা হবে। এটি বাস্তবায়নে কাজ করছে জেলা ট্রাসফোর্স।
দিনকাল/এমএইচআর