কালীগঞ্জের সেই আজির আলী এখন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:১৭ পিএম, ৮ অক্টোবর,শুক্রবার,২০২১ | আপডেট: ১০:৪৩ পিএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
জাল কাগজপত্র তৈরি ও মৃত ব্যক্তিদের নামে ভুয়া ঋণ তুলে প্রায় দুই কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় চাকরিচ্যুত ব্যাংক কর্মচারী আজির আলী এখন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। চাকরী হারিয়ে তিনি এখন মাদকের গডফাদার সেজেছেন। লোক নিয়োগ করে সারা দেশে মাদক দ্রব্য পাচার করছেন। কালীগঞ্জ থানার পুলিশ সুত্রে এমন তথ্য মিলেছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ২০২০ সালে ২৯ সেপ্টেম্বর ঋণ জালিয়াতির দায়ে চাকরিচ্যুত হন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ অগ্রনী ব্যাংকের মাঠ সহকারী আজির আলী। চাকরীতে বহাল থাখা অবস্থায়ও তিনি মাদকের ডিলার ছিলেন। ভুয়া ঋন তুলে মাদক ব্যবসায় টাকা লগ্নি করতেন। কিন্তু সেটা এতোদিন ছিল লোকচক্ষুর আড়ালে।
পুলিশের একটি সুত্র জানায়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর কালীগঞ্জ উপজেলার শিমলা-রোকনপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে ১৫ বোতল ফেনসিডিলসহ পুলিশের হাতে আটক হয় কাশিপুর গ্রামের নুর ইসলাম। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নুর ইসলাম জানায় তার সঙ্গে কাশিপুর গ্রামের বারিক মন্ডলের ছেলে সাবেক ব্যাংক কর্মচারী আজির আলী। নুর ইসলাম গ্রেফতার হলেও পালিয়ে যায় আজির আলী। এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানার এসআই কাবিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। কালীগঞ্জের মনোহরপুর গ্রামের বেশির ভাগ মানুষের ভাষ্য, ব্যাংকে চাকরি করা অবস্থায় আজির আলী এই গ্রামের মাদকাসক্ত বখাটেদের সঙ্গে আড্ডা দিত। তাদের কাছেই সে মাদক বিক্রি করতো। মাদকের সাথে তার কারবার দীর্ঘদিনের।
অগ্রণী ব্যাংক কালীগঞ্জ শাখার ম্যানেজার নাজমুস সাদাত বলেন, আজির আলী ব্যাংকে অস্থায়ী পদে চাকরি করতেন। ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহা: মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, গত ২৪ সেপ্টেম্বর ১৫ বোতল ফেনসিডিলসহ উপজেলার কাশিপুর গ্রামের নুর ইসলামকে আটক করা হয়েছে। অভিযানের সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় আজির আলী। এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় দুই জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ২৭ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন দৈনিকে “কালীগঞ্জে কৃষিঋণের ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ” শিরোনামে খবর প্রকাশিত হলে ব্যাংকটির তৎকালীন ম্যানেজার শৈলেন কুমার বিশ^াস ও অফিসার (ক্যাশ) আব্দুস সালামকে সাময়িক বরখাস্ত ও অস্থায়ী মাঠ সহকারী আজির আলীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। চাকরী হারিয়ে ক্যাশ অফিসার আব্দুস সালাম ও মাঠ সহকারী আজির আলী দুই সাংবাদিকসহ ব্যাংক ম্যানেজারের নামে মিথ্যা মানহানী মামলা করলে জেলাব্যাপী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।