সীতাকুণ্ডে বিকাশ প্রতারক চক্রের শিকার প্রায় ১৭৩ শিক্ষার্থী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৫৩ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ১০:২৮ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়ে শিক্ষার্থীরা তাদের বিকাশ অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যাংকিং সম্পর্কে সীমিত জ্ঞান ও তাদের সরলতার সুযোগে বিকাশ অ্যাকাউন্টের পিন নম্বর হাতিয়ে নিতে ফাঁদ পাতছে প্রতারক চক্রটি।
প্রতারণার শিকার ১৩-১৫জন শিক্ষার্থী গতকাল বুধবার (১ সেপ্টম্বর) অভিযোগ দিতে এসেছে সীতাকুণ্ড মডেল থানায়।
সীতাকুণ্ড সরকারি মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিদারুল আলম জানিয়েছেন গত এক সপ্তাহে প্রায় একাদশ শ্রেণীর ১৭৩ ছাত্রীর মধ্যে ৫০জন শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকা হাতিয়েনিয়েছে। তবে প্রকৃত ভুক্তভোগীর সংখ্যা আরও বেশি হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণাও তার। স্থানীয় বিকাশ এজেন্টরা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীরা প্রতারকের কাছে টাকা খোয়ানোর অভিযোগ নিয়ে তাঁদের কাছে আসছে। কিন্তু তাঁরা এ ব্যাপারে কিছুই করতে পারছেন না।
অধ্যক্ষ আরও বলেন, প্রতি শিক্ষার্থীরা চারশ টাকা মাসিক উপবৃত্তি, বই কেনার জন্য দেড় হাজার টাকাসহ সর্বমোট সাড়ে পাঁচ হাজার টাকার বেশি পেয়ে থাকে। ওই টাকা বিকাশ বা রকেটের মাধ্যমে সরকার শিক্ষার্থীদের একাউন্টে পাঠান।
একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা আসার পর মুঠোফোনের অপরিচিত নম্বর থেকে প্রতারক চক্রের কল আসে। সেখানে বলা হয়, ‘হ্যালো, আমি বিকাশ থেকে বলছি। আমাদের এখানে সিকিউরিটি প্রবলেম হচ্ছে। আমরা আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেব। তার আগে দেখেন আপনার অ্যাকাউন্টে উপবৃত্তির টাকা ঢুকেছে কি না। যদি টাকা ঢুকে থাকে, তবে ওই টাকা আপনি তুলতে পারবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি আমাদের অফিস থেকে সিকিউরিটি পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করে না নেবেন।’
শিক্ষাথী সানজিদা আক্তার বলেন, বিকাশে আগেই কিছু টাকা ছিল। কয়েকদিন আগে উপবৃত্তির সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা আসে। সব মিলিয়ে আমার বিকাশে ১১৬০০ হাজার টাকা ছিল। করোনার এই দুঃসময়ে টাকাটা আমার ও পরিবারের জন্য খুবই প্রয়োজন ছিল। কিন্তু প্রতারকেরা আমার সবকিছু কেড়ে নিল।
কলি আক্তার নামের আরেক শিক্ষার্থী বলে, তাদের বিকাশে ৬৬০০ টাকা আসার খবর প্রতারকদের কাছে কীভাবে পৌঁছায়? এই চক্রের সঙ্গে স্থানীয় কেউ জড়িত নেই তো? এর প্রতিকার ও তদন্ত দাবি করে শিক্ষার্থীরা। এই নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছলছে হৈচৈই। শিক্ষার্থীদের এই বিকাশ নাম্বারে অনেকের ফ্যামেলির টাকা পাঠায় বলে জানান।
উপবৃত্তির টাকার পাশা পাশি ফ্যামেলির সংসারের খরচের টাকা থাকে। কিন্ত সব টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাওয়ার কারনে পরিবারের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টির কথা বলেন অনেকে। এই সব ঘটনার কারণে অনেক শিক্ষার্থী থানায় জিডি করেন।
এ ব্যাপারে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, তাঁদের কাছে আসা অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। যেসকল মোবাইল ফোনে টাকা গেছে তা এখন বন্ধ করে রেখেছে প্রতারক চক্র। তিনি বিকাশ গ্রাহকদের পিন নম্বর সংরক্ষণের ব্যাপারে সচেতন হওয়ার পরামর্শও দেন।