বরিশালে বর্জ্য অপসারণ শুরু, নগরবাসীর স্বস্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৩০ পিএম, ২২ আগস্ট,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:১৩ এএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
তিন দিন পর বরিশাল নগরে বর্জ্য অপসারণের কাজে ফিরেছেন সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা করার প্রতিবাদে গত বুধবার রাত থেকে নগরের সড়কের ও বসতবাড়ির ময়লা–আবর্জনা পরিচ্ছন্নতার কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।
গতকাল শনিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা মানববন্ধন ও সমাবেশ করে মেয়রের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত নগরের বর্জ্য অপসারণ না করার ঘোষণা দেন।
গতকাল সন্ধ্যা সাতটায় কালীবাড়ি সড়কের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের সার্বিক বিষয়ে অবহিত করার সময় পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানালে রাত আটটাতেই পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করেন করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।
মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের হয়রানি না করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান সংবাদ সম্মেলনে।
নগরীর বিবির পুকুরপাড় এলাকায় আবর্জনা পরিষ্কার করতে আসা পরিচ্ছন্নতাকর্মী জুবায়ের জুয়েল বলেন, ‘আমরা মেয়রের আহ্বানে কাজে নেমেছি। টানা দুই দিন পর কাজে নেমেছি আমরা। রাতেই নগরের সব ময়লা পরিষ্কার করা হবে।’ বিএড কলেজের সামনে কর্মরত বিপ্লব দাস ও হৃদয় শেখ বলেন, ‘আমরা কাজে নেমেছি মেয়রের নির্দেশে। নগরবাসীকে দুর্ভোগে রাখা যায় না।’
বুধবার রাতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হামলা এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে প্রধান আসামি করা হয়।
এর প্রতিবাদে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি পালন শুরু করেন। বুধবার রাত থেকেই পরিচ্ছন্নতাকর্মীরাও নগরের পাড়া-মহল্লা, বাড়ি থেকে ময়লা-আবর্জনা অপসারণ থেকে বিরত থাকেন। টানা তিন দিন বর্জ্য অপসারণ না করায় গোটা নগরীর অবস্থা খারাপ হয়ে উঠেছিল।
গতকাল দুপুরে নগরের সদর রোডের অশ্বিনীকুমার হলের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। এতে অংশ নেওয়া সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন শাখার সহকারী কর্মকর্তা রেজাউল করীম ও শফিকুল আজম বলেন, বুধবার রাতে সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলার সময় তাঁদের ওপর হামলা ও গুলি চালান উপজেলা পরিষদের দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা। ওই ঘটনায় মেয়র সাদিক আবদুল্লাহকে প্রধান আসামি করে করা দুটি মামলায় অজ্ঞাতনামা অনেককে আসামি করায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে ভুগছেন।
এসব কারণে তাঁরা পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম থেকে বিরত আছেন। মেয়রের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহার না করা হলে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা কাজে যোগ দেবেন না বলে জানিয়েছিলেন এই দুই কর্মকর্তা। পরে মেয়রের নির্দেশে তাঁরা গতকাল রাত থেকেই পরিচ্ছন্নতার কাজে যোগ দেওয়ায় নগরবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে।