বরিশালে সংঘর্ষ, কাউন্সিলর মান্নাকে প্রশাসনের লোক পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:২৯ পিএম, ২১ আগস্ট,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ১১:০৭ পিএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে হামলার ঘটনায় করা মামলার আসামি ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর শেখ সাইয়েদ আহমেদ মান্নাকে প্রশাসনের লোক পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল শুক্রবার (২১ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে ঢাকার মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ এলাকা থেকে দুটি মাইক্রোবাসে একদল সাদা পোশাকধারী তাকে তুলে নিয়ে যায় বলে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন মান্নার বোন কানিজ ফাতেমা বনা।
মান্না বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। নগরীর গোরস্থান রোডের বাসিন্দা সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মৃত শেখ কুতুব উদ্দিনের ছোট ছেলে। কাউন্সিলর মান্না ইউএনওর বাসায় হামলার ঘটনায় এসআই শাহ জালাল মল্লিকের দায়েরকৃত মামলার দুই নম্বর আসামি।
কানিজ ফাতেমা বনা অভিযোগ করেন, রাতে একদল লোক এসে তার ঢাকার বাসায় ঢুকে প্রশাসনের লোক পরিচয়ে তার ভাইকে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় তাদের পরিচয় জানতে চাইলে বিস্তারিত কিছু না বলে বরিশাল কোতোয়ালি থানায় যোগাযোগ করতে বলেন।
তবে মান্না আটকের ব্যাপারে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি জানান, মান্না বুধবার রাতের ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারনামীয় আসামি। তবে গ্রেপ্তার কিংবা তুলে নেওয়ার ব্যাপারে তার কিছুই জানা নেই। তিনি এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছেন বলে জানান।
এর আগে গত বুধবার (১৮ আগস্ট) রাতে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবৈধ বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন উচ্ছেদ করতে অভিযান চালায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মীরা। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাদের অভিযান বন্ধ করে সকালে অভিযান চালাতে বলেন।
কিন্তু সেটি না মেনে ইউএনওর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন সিটি করপোরেশনের কর্মী এবং আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে তারা ইউএনওর বাসভবনে হামলা চালান। এ সময় ইউএনওর নিরাপত্তায় আনসার সদস্যরা গুলি চালালে বেশ কয়েকজন আহত হন।
খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গেলে পুলিশের সঙ্গেও হামলাকারীদের সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হন। পরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
গত ১৯ আগস্ট বিকেলে ইউএনও বাসভবনে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় আলাদা দুটি মামলা হয়। নগরীর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, ইউএনওর বাসায় হামলার ঘটনায় নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত কয়েকশ’ জনকে আসামি করে আলাদা দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। একটি মামলার বাদী হয়েছেন ইউএনও মুনিবুর রহমান নিজে। অপরটির বাদী পুলিশ। এই মামলায় ইতোমধ্যে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দুই মামলাতেই প্রধান আসামি করা হয় বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে।