‘এন্ট্রি পারমিটের’ দাবিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে কাতার ফেরতরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৪৩ এএম, ৬ জানুয়ারী,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০১:০৫ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
করোনাভাইরাস মহামারিতে ছুটিতে দেশে এসে আটকা পড়া কাতার প্রবাসীরা ‘রি-এন্ট্রি পারমিটের’ দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান নেন।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে সহাস্রাধিক কাতার প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের ফটকের সামনে অবস্থা নেন; তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কাতারের আমিরের ছবি নিয়ে ‘আমাদের দাবি, কাতার আমরা যেতে চাই’ স্লোগান দেন।
প্রবাসীরা বলছেন, মহামারির কারণে দেশে এসে আটকেপড়া ১২ হাজার কর্মী গত চার মাস ধরে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এর মধ্যে ৯৫ শতাংশ কর্মীর আকামার (কাজের অনুমিত) মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। কর্মস্থলে ফিরতে ‘রি-এন্ট্রি পারমিটের’ আবেদন করা হলেও তা গ্রহণ করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কয়েকজন।
কাতার থেকে ফেরা আবদুল করীম বলেন, “১০ মাস হয় দেশে এসেছি। এখন যেতে পারছি না। ফেব্রুয়ারিতে না যেতে পারলে চাকরি থাকবে না। কি খেয়ে বাঁচব? ফরেন মিনিস্ট্রিতে দুই বার কাগজ দিয়েছি। রি-এন্ট্রি পারমিট দিচ্ছে না।”
আরেক প্রবাসী হাফিজুর রহমানের অভিযোগ, কাতারে বাংলাদেশ দূতাবাসের বিলম্বের কারণে তাদেরও যেতে দেরি হচ্ছে।
এদিকে বিক্ষোভের এক পর্যায়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন মন্ত্রণালয়ের গেটের সামনে আসেন।
তিনি প্রবাসীদের উদ্দেশে হ্যান্ড মাইকে বলেন, “আপনাদের যে তালিকা আমরা পেয়েছিলাম তা কাতারে আমাদের দূতাবাসে পাঠিয়েছি। তারা ওখানে প্রত্যেকটা কোম্পানিতে খোঁজ করে জানছে কাদের কাদের কাজ এখনই হবে। সেই তালিকা পেলে আপনাদেরকে আমরা জানাতে পারব অথবা মালিকরা আমাদের দূতাবাসের মাধ্যমে জানাবেন। তখন আপনারা কাতার যাওয়া শুরু করতে পারবেন।”
“আপনারা আগের বার বলেছিলেন যে, অন্যান্য দেশ থেকে চলে যাচ্ছে, আমরা (বাংলাদেশি) যেতে পারছি না। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি এটা সঠিক নয়। আমাদের দেশ থেকেও যাচ্ছে। হয়ত আপনারা যেতে পারছেন না, হয়ত আস্তে আস্তে যাচ্ছে বা যাওয়া শুরু হয়েছে।”
সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, “এমন কোনো অবস্থা নেই যে, অন্যান্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের লোকরা আগে যাচ্ছে বা আমাদেরকে যেতে দিচ্ছে না, এটা সত্য নয়। এটা বিশ্বাস করবেন না। কারণ আমরা খবর নিয়েছি যে, ওখানে যে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত আছেন, পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আছেন তাদের থেকেও খবর নেয়া হয়েছে। তাদের লোকেরাও আটকে আছে।
“সুতরাং সব দেশে কমবেশি এক ধরনের কষ্টের মধ্যে, ঝামেলার মধ্যে আছেন। এটা আপনাদের বুঝতে হবে। আপনাদের ধৈর্য ধরতে হবে। কারণ কোভিড পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আমরা চাইলেই সেখানে নিয়ে যেতে পারছি না। যেমন মালয়েশিয়াতে নিচ্ছে না, সিঙ্গাপুরে নিচ্ছে না, কোরিয়াতে নিচ্ছে না- এরকম অনেক দেশ আছে একেবারেই নিচ্ছে না।”
তিনি বলেন, “কিন্তু আমরা দেখছি, সেদিক থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো কিছু বেটার আছে। যার জন্য সৌদি আরবে আস্তে আস্তে যাচ্ছে। ওমানে, বাহরাইনে, অন্যান্য দেশে যাওয়া শুরু হয়েছে।”
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, “আমাদের কাতার দূতাবাসে যারা আছেন তারা কাজ করছেন। মালিকদের সাথে তারা যোগাযোগ করছেন। তারা তালিকাটা কমপ্লিট করতে পারলে আমাদের জানাবেন। সেজন্য আপনারা এখানে ভিড় না করে ধৈর্য ধরেন। আগামী সাপ্তাহে একটা ছোট প্রতিনিধিদল আমাদের কাছে আসলে আমরা প্রচেষ্টার ফলাফলটা আপনাদের জানাতে পারব। প্রচেষ্টা আমাদের অব্যাহত আছে।”