হরিলুটের মুজিব কিল্লাসহ ৫ হাজার কোটি টাকার একাধিক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাতিল হচ্ছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:১৩ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৮:১৩ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৫,০৬৭ কোটি টাকার বাজেটের ১০টি চলমান প্রকল্প বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৩১ অক্টোবর এবং ৬ নভেম্বর কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্ত ও অগ্রাধিকার তালিকা ইতোমধ্যে পরিকল্পনা উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হয়েছে।
বাতিলের প্রস্তাব পাওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে ৩৪৯ কোটি টাকার হাওর ফ্লাইওভার ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প।
বারহাট্টা উপজেলায় ২৬ কোটি টাকার শিশু পার্ক নির্মাণ প্রকল্প এবং ফরিদগঞ্জের ১০৭ কোটি টাকার ডাকাতিয়া নদী সেতু প্রকল্প জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত সমস্যার কারণে বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। প্রকল্পটির জন্য ইতোমধ্যে ১৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। অদক্ষ ঠিকাদারের কারণে ১.৫ বছর ধরে কাজ বন্ধ ছিল এবং একটি মামলাও দায়ের করা হয়।
একইভাবে, সুনামগঞ্জের মহসিন নদীর ওপর ৫০ কোটি টাকা বাজেটের পাগলা সেতু প্রকল্পটিও ব্যয়-সুবিধার অনুপাত পুনর্মূল্যায়নের জন্য পর্যালোচনাধীন রয়েছে।
মেহেরপুরে আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের জন্য ২১০ কোটি টাকার বাজেট নির্ধারিত হলেও এটি স্থগিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। কারণ, যশোরে ইতোমধ্যেই একটি অনুরূপ গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে।
এছাড়াও, ৪৫৪ দশমিক ৮৩ কোটি টাকা বাজেটের বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ইলিয়ট ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্র প্রকল্পটি বাতিলের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কারণ অন্যান্য সরকারি উদ্যোগে ইতোমধ্যেই অনুরূপ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু রয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রকল্পের প্রাসঙ্গিকতা ও গুরুত্বের অভাব উল্লেখ করে পরিকল্পনা কমিশন ১,৯০৩.৫৩ কোটি টাকার মুজিব কিল্লা নির্মাণ, মেরামত এবং উন্নয়ন প্রকল্প বাতিলের প্রস্তাব করেছে।
এছাড়াও, যশোরে শেখ জহুরুল হক পল্লী উন্নয়ন একাডেমির জন্য ১৯৮.৯৫ কোটি টাকার বাজেটের প্রকল্পটি অগ্রগতির অভাবে বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে।
অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা এবং বৈদেশিক রিজার্ভের ওপর চাপের কারণে মহাদেবপুর (নওগাঁ) সাইলো নির্মাণ প্রকল্প (৩৬৭.৫২ কোটি টাকা) এবং মডার্ন রাইস সাইলো নির্মাণ প্রকল্প (১,৪০০ কোটি টাকা) বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে এলজিইডির ৯৮টি চলমান প্রকল্পের মধ্যে ৫২টি প্রকল্প অপ্রয়োজনীয় হিসেবে বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।
২০১৯ সালে ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নের সড়ক সংস্কারের জন্য ২,৬৩৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প শুরু হয়েছিল। ১ হাজার ৯০ কোটি টাকার এই প্রকল্পের অর্ধেকের বেশি অর্থ ভূমি অধিগ্রহণের জন্য বরাদ্দ করা হয়। তবে অনুমিত বাজেটের তুলনায় এ খরচ অনেক বেশি করা হয়েছিলো। আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর চাপে প্রকল্পটি নেয়া হয়।
তবে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাইন ব্রিজ কনস্ট্রাকশন প্রকল্পে যেসব ঠিকাদার কাজ করছে, তাদের বরাদ্দকৃত কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। তবে অনির্ধারিত প্যাকেজগুলো আপাতত স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও, কুষ্টিয়া, গোপালগঞ্জ এবং অন্যান্য জেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলোকে সময়মতো শেষ করতে বলা হয়।
কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং চাঁদপুরের মতো জেলাগুলোতেও প্রকল্প স্কিমগুলো সাইটে পর্যালোচনা করে অগ্রাধিকার বিবেচনা করার কথা বলা হয়েছে।