অস্বাভাবিক জোয়ারে ভাসছে উপকূলীয় জেলা বরগুনা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৪০ পিএম, ২৬ মে,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ১১:৩০ পিএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে দিন-রাতে দু'বার করে প্লাবিত হচ্ছে বরগুনার উপকূল। সাগর ও নদীতে জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে শত শত গ্রাম, বাড়িঘর, নিম্নাঞ্চলের আবাসন প্রকল্প, ফসলি জমি, পুকুর ও ঘের। পানিতে প্লাবিত হয়েছে বাড়িঘর।
অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগের দুটি ফেরির (আমতলী-পুরাকাটা ও বাইনচটকী-বড়ইতলা) পন্টুন তলিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন প্রায়।
গতকাল মঙ্গলবার (২৫ মে) দিবাগত রাতে পূর্ণিমা ও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট উঁচু জোয়ারে বরগুনার লক্ষাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
স্বল্প উচ্চতা ও ভাঙা বেড়িবাঁধই এ দুর্ভোগের কারণ বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এজন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকেই দায়ী করছেন স্থানীয় অধিবাসীরা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপকূলীয় নদ-নদীতে জোয়ার শুরু হয়। যা চলে একটানা রাত ১১টা পর্যন্ত। এ সময় বরগুনার নদ-নদীতে পানির উচ্চতা হয় ৩.৫৮ মিটার। যা বিপদসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে বরগুনার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়।
মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে বরগুনা সদর উপজেলার বড়ইতলা ও ডালভাঙা এলাকায় দেখা যায়, আনুপাতিক নিচু বাঁধের কারণে এ এলাকার অন্তত শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সিংহভাগ বসত ঘর চার থেকে পাঁচ ফুট পানির নিচে ডুবে গেছে। পানির তোড়ে ভেসে গেছে হাঁস-মুরগিসহ পুকুর ও মাছের ঘের। এলাকাবাসী উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদর উপজেলার পায়রা নদীর তীরবর্তী আয়লা-পাতাকাটা ইউনিয়নের বাঁধ মঙ্গলবার সকালের জোয়ারেই ভেঙ্গে গেছে। পরে রাতে জোয়ারে বাঁধের সেই ভাঙা অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে অন্তত আটটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত আট হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এছাড়াও পানিতে ভেসে গেছে পুকুর ও মাছের ঘের।
অন্যদিকে বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নে মাইঠা, বড় লবন গোলা, ছোট লবন গোলা, বুড়িরচর, নাপিতখালী, ঢুলুয়া ইউনিয়নের নলী, নলটোনা ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া, আজগরকাঠি এলাকায়ও লোকালয়ে পানি ঢুকেছে বলে জানা গেছে।
বরগুনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ২২টি পোল্ডারে মোট ৮০৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আছে। এরমধ্যে যেকোনো সময় ধসে যেতে পারে এমন বেড়িবাঁধের পরিমাণ ২৯ কিলোমিটার। এছাড়াও জেলায় ৫শ' কিলোমিটার বেড়িবাঁধ আছে যা অপেক্ষাকৃত নিচু। বিভিন্ন এলাকায় এসব বেড়িবাঁধ প্লাবিত হয়েও লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে।
বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, জেলার বিভিন্ন স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করার খবর আমরা পেয়েছি। ঘূর্ণিঝড়ের দুর্গত মানুষের জন্য নগদ অর্থসহ আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য মজুদ আছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে আমরা দাঁড়াব।