সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর ভাঙ্গনে নিঃস্ব অর্ধশতাধিক পরিবার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৫০ পিএম, ১১ মে,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:৩৫ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ইতিমধ্যে নিঃস্ব হয়ে গেছে অর্ধশতাধিক পরিবার। বতর্মানে তারা আশ্রয় নিয়ে অন্যের বাড়িতে। খেয়ে না খেয়ে যাচ্ছে তাদের দিন। অপরদিকে ভয়াবহ ভাঙ্গনের কবলে রয়েছে আরো শতাধিক পরিবার। এমন চিত্রই দেখা গেছে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের রাজারগাঁও গ্রামসহ তার আশেপাশের এলাকাগুলোতে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- চলতি বছরের শুরু থেকে সুরমা নদীর ভাঙ্গন বেড়ে গেছে। নদী ভাঙ্গনের শব্দে ঘুম আসেনা নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের। প্রতিদিনই এই রাক্ষুসে সুরমা নদী গিলে খাচ্ছে বসতবাড়ি, জায়গা-জমি ও গাছ-পালা। বর্তমানে নদী ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে রাজারগাঁও গ্রামের যোগাযোগের একমাত্র সড়ক। কিন্তু এই নদী ভাঙ্গন রোধে এখনও পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে রাজারগাঁও গ্রামসহ সুরমা নদীর চারদিকে আতংক বিরাজ করছে।
ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসীর অভিযোগ, নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে অনেকে জনপ্রতিনিধিরা এসেছেন। কিন্তু সুরমা নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধের জন্য এখনও পর্যন্ত কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ভোক্তভোগীরা তাদের বাড়িঘর ও জায়গা-জমি রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে গিয়ে অনেক আবেদন ও তদবীর করেছেন। কিন্তু কেউ তাদের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়নি।
এব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্থ আজুন নেছা, কফিল উদ্দিন, সারোয়ার উদ্দিন বলেন- অনেক কষ্ট করে সবাই মিলে একটি আধাপাকা বাড়ি তৈরি করেছিলাম। গাছপালা দিয়ে তার চারদিক সুন্দর করে সাজিয়ে ছিলাম। কিন্তু ভাবিনি রাক্ষুসে সুরমা নদী আমাদের সবকিছু এভাবে গিলে খাবে। সবকিছু হারিয়ে আমরা এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।
সুরমা নদীর ভাঙ্গনে সবকিছুর হারিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া আজহারুল ইসলাম, শামীম আহমদ, আলী মিয়া ও হাজেরা খাতুন বলেন- নদী ভাঙ্গনে সব কিছু হারিয়ে আমরা এখন নিঃস্ব। পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে দিন যাচ্ছে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।
গৌরারং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফুল মিয়া বলেন- সুরমা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনের ফলে বাড়িঘর ও জাগয়া-জমি হারিয়ে ইতিমধ্যে অর্ধশতাধিক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের কবলে রয়েছে এলাকার শতশত পরিবার। তাই জরুরী ভিত্তিতে এব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
এব্যাপারে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সহিবুর রহমান জানান- সুরমা নদী ভাঙ্গন এলাকাগুলো পরিদর্শন করে নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধের জন্য দুইটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত অনুমোদন হয়নি। প্রকল্পের অনুমোদন হলে কাজ শুরু হবে।