পঙ্গু আজিবর ১০ বছরেও পায়নি ভাতার কার্ড, অবশেষে ভিক্ষাবৃত্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩৭ পিএম, ৮ মে,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ১১:২৫ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
নালিতাবাড়ীতে আজিবরের ভাগ্যে ১০ বছরেও জুটেনি পঙ্গু ভাতার কার্ড জীবন চলে ভিক্ষা করে
আজিবর রহমান শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী ইউনিয়নের বনকুড়া গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের ছেলে। দুর্ঘটনায় পঙ্গু হওয়ার দীর্ঘ ১০ বছরেও তার ভাগ্যে জুটেনি কোন প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড।
জানা যায়, উপজেলার নন্নী ইউনিয়নের বনকুড়ার আজিবর রহমান পেশায় একজন রিক্সাচালক ছিলেন। তিনি রাজধানী ঢাকার গাজীপুরায় রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। রিক্সা চালিয়ে তার যা আয় হতো তা দিয়ে ভালই চলছিল ৩ ছেলে ও স্ত্রীসহ ৫ সদস্যের পরিবার। কিন্তু ২০১১ সালে আজিবর রহমান রিক্সায় যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত হয়।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসা করে কিছুটা সুস্থ্য হলেও তার দু'পা অবশ হয়ে যায়। তখন থেকে হারিয়ে যায় বাকশক্তি। চিকিৎসা শেষে পঙ্গু আজিবরকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। তখন থেকে পঙ্গু আজিবর কর্মহীন হয়ে পড়ে।
ছেলে শাহিন (১৮) শান্ত (১৪) ও ১ বছরের শিশু হৃদয়কে রেখে তার স্ত্রী অন্যত্র চলে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে আজিবর।পরবর্তীতে স্ত্রী ফিরে না আসলেও নানীর আর্থিক অবস্থা ভাল না থাকায় শিশু হৃদয়ও চলে আসে পঙ্গু পিতার নিকট। বাড়ি ভিটে ছাড়া তার কোন সহায়সম্বল না থাকায় পেটের ক্ষুধা মেটাতে ভিক্ষাবৃত্তির পথ বেছে নেন। তার চলাচলের হুইল চেয়ারটিও ভিক্ষার টাকায় কেনা।
এব্যাপারে আজিবর রহমান জানায়, আমি এডা পুঙ্গু ভাতা কাডের জন্য হাত দিয়ে হুইল ঠেইল্যা ঠেইল্যা মেম্বর, চেয়ারম্যানগর কাছও গেছিলাম, কোনু কাম অয়নাই। পঙ্গু আজিবর এ পর্যন্ত সরকারি বে-সরকারি কোন প্রকার সাহায্য সহযোগিতা না পেয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে যা পায় তাই দিয়ে কোন রকমে খেয়ে না খেয়ে চলে তার সংসার। একদিন ভিক্ষাবৃত্তি করতে না পারলে সেদিন তাদের থাকতে হয় অনাহারে অর্ধাহারে।
নন্নী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টা আমি দেখবো, আপনারা পত্রিকায় লিখলে আমার সুনাম নষ্ট হবে। বিগত দিন কেন তাকে কোন সাহায্য সহযোগিতা করলেননা এমন প্রশ্নের উত্তরে ইউপি সদস্য শফিক বলেন, তার বউ না থাকায় তার নামে বরাদ্দ দিতে পারিনি।
এ বিষয়ে নন্নী ইউপি চেয়ারম্যান একেএম মাহবুবুর রহমান রিটন জানান, পঙ্গু আজিবরের বিষয়টি তার জানা ছিল না। আজিবরের ভাই ভাতা পাচ্ছে। সরকারী ভাবে আগামীতে বরাদ্দ আসলে পঙ্গু আজিবরের নামে সবার আগে ভাতার কার্ড করে দেওয়া হবে।