পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগে মানববন্ধন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৪৭ পিএম, ২৮ এপ্রিল,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৫:৫৪ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বগুড়ার শাজাহানপুরে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জমি জবর দখলের অভিযোগ এনে মানববন্ধন করা হয়েছে।
আজ বুধবার (২৮ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১ টায় উপজেলার ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের মাঝিড়া বন্দরের মাছের আড়ৎ এর পাশে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনের আয়োজন করেন ক্ষতিগ্রস্থ স্কুল শিক্ষক আব্দুল মতিন আকতার।
জমির প্রকৃত মালিক দাবি করে স্কুল শিক্ষক আব্দুল মতিন আকতার মানববন্ধনে বলেন, ২০০৩ সালে বগুড়ার শাজাহানপুর থানায় উপ-পরিদর্শক(এসআই) পদে কর্মরত ছিলেন আতিকুল ইসলাম। পুলিশের চাকরি বিধি ভঙ্গ করে ওই পুলিশ কর্মকর্তা তার স্ত্রী লায়লা আতিকের নামে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ৪ শতক জমি ক্রয় করেন। যার দলিল নং-১২৫৬৭, তাং-০৬/০৭/২০০৩ ইং।
২০১৩ সালে অন্য থানায় চাকুরি করা অবস্থায় ওই পুলিশ কর্মকর্তা জমিটি অবৈধ দখলের কৌশল হিসেবে তার ভাই শফিকুল ইসলামকে বাদি করে চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগে তাঁর ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে। যার নং-১৮/২০১৭ ইং।
মামলার আসামী আমার পিতা সে সময় সৌদি আরবে হজ্ব পালন করছিলেন। এতে ক্ষান্ত না হয়ে আতিকুল ইসলাম পুলিশি ক্ষমতা ব্যবহার করে স্থানীয় সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমার বাড়ি ভেঙ্গে সমস্ত সামগ্রী শাজাহানপুর থানায় নিয়ে যাওয়ান। এই ঘটনায় আমার পুরো পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়ে।
মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় আদালত দুই মাসের মধ্যে খারিজ করে দেয়। কিন্তু আমি ও পরিবার সবার কাছে চাঁদাবাজ হিসেবে পরিচিতি পাই। সেই তকমা এখনো মুছেনি।
২০১৭ সালে আতিকুল ইসলাম মাঝিড়ার হোটেল ব্যবসায়ী জোব্বার হোসেন কে দিয়ে আবারো জমি জবর দখলের চেষ্টা করে। উপায়ন্তর না পেয়ে আমি জেলার অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জোব্বারকে বিবাদী করে মামলা করি। যার নং-৬৯৭পি/২০১৭শাজাহানপুর। ২০১৯ সালে জোব্বারের বিরুদ্ধে আদালত ১৪৪/১৪৫ ধারায় আদেশ প্রদান করেন। আদেশের কপি সংশ্লিষ্ট সকলকে দেয়ার আদেশ দেন।
চলতি বছরের ৫ এপ্রিল জোব্বার ওই পুলিশ কর্মকর্তার হয়ে জায়গাটি আবারো অবৈধ দখল শুরু করেন। জমিটিতে ইট, সিমেন্ট দিয়ে ঘিরে ফেলেন। থানায় আইনি সহায়তা নিতে গেলে জানতে পারি আদালতের আদেশের কপিটি দীর্ঘ ২ বছরেও থানায় আসেনি। আমি তখন বগুড়া পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দেই এবং জায়গাটি রক্ষার প্রার্থনা করি।
পুলিশ সুপারের আন্তরিকতায় জায়গাটি পুরোপুরি বেদখল হওয়ার হাত থেকে তখনকার মতন রক্ষা পাই। আদালতের আদেশ থানায় না আসায় গত ১২ এপ্রিল বগুড়া জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দেই।
পুলিশ কর্মকর্তা আতিক আইনের রক্ষক হয়েও স্থানীয় সন্ত্রাসী জোব্বারকে পাঠিয়ে জমি জবর দখল করা, পুলিশের প্রভাব খাটিয়ে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করে সামাজিক ভাবে হেয় করাসহ ওই পুলিশ এবং তার সহযোগীদের সব ধরনের অপরাধের বিচার চেয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক বরাবর অভিযোগ দিয়েছি। মানববন্ধনের মাধ্যমে পুলিশ মহাপরিদর্শক মহোদয়ের দৃস্টি আকর্ষন করার চেষ্টা করছি। আশা রাখি তিনি ন্যায় বিচার করবেন।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আব্দুল মতিন আকতারের পিতা আব্দুল খালেক মাস্টার, আকতারের স্ত্রী শামীমা আকতার, মেয়ে আশিতা আকতার, ছেলে সাদমান সাকিব আরশ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছোট ভাই মনিরুজ্জামান মানিক, মাসুদুর রহমান মাসুদ, ফুপাতো ভাই তাজনুর রহমান, এমদাদুল হকসহ আত্মীয় স্বজন।
উল্লেখ্য, পুলিশ কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম বর্তমানে রংপুর রেঞ্জে পরিদর্শক পদে কর্মরত রয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, আমার স্ত্রী জমির প্রকৃত মালিক। জায়গাটি ক্রয়ের পর থেকেই আমাদের দখলে রয়েছে।
পরবর্তীতে আব্দুল মতিন আকতার নামে এক ব্যক্তি জায়গার মালিকানা দাবি করে অযথা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।