কিশোরগঞ্জে ধানের শীষ দেখে খুশি কৃষক
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০৬ পিএম, ২৬ এপ্রিল,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:৪৯ এএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায় কাচির টানে স্বর্ণালী রংয়ের ধান কেটে চলছে ভাগালো শ্রমিকের দল।
মেঘ আর কড়া রোদকে ফাঁকি দিয়ে সূর্য যখন তপ্ত রোদ ছড়ায়, শ্রমিকের দেহ তখন খানিকটা দম নিতে চায়। দম নেওয়ার ফুরসত পেয়েই শ্রমিকেরা নিজেদের মধ্যে তীব্র গরমে হালকা বাতাসে মেতে ওঠেন গালগল্পে।
শ্রমিক হাশেম বলছিলেন করোনা সময়ে ঘরে আর্থিক অনটনের মাঝে বসে থেকে দম বন্ধ হবার মতো আর ধানের বাজারদর নিয়ে আছি চিন্তায়। তিনি বলেন, করোনায় সব মানুষ গুলোর মরণ দশা।
করোনা পরিস্থিতিতে দেশের জনজীবন, শিল্প-অর্থ-বাণিজ্য—সবকিছুতে একধরনের স্থবির দশা। মানুষের মধ্যে হা-হুতাশ। এসবের মধ্যেও তাড়াইলের কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক। অন্য বছর কষ্টের ফসল বাজারে নিয়ে দাম শুনে হতাশ হলেও এবার করোনা পরিস্থিতিতেও ফসলের দাম ভালো পাওয়ায় তাঁদের মুখে হাসি।
গতবার আমনে ৫ বিঘা জমিতে ধান চাষ করে লাভ তো দূরে থাক, উৎপাদন খরচই ওঠাতে পারেননি সদর উপজেলার সাররং গ্রামের কৃষক মোঃ ফাইজুল ইসলাম। লোকসানের কারণে ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে এ বছরের বোরো মৌসুমে তিনি দুই বিঘা কম জমিতে ধান আবাদ করেন। বেশ কিছুদিন আগে গরম বাতাসে তার অল্প জমির ধান নষ্ট হয়ে যায়।
তারপরও তার মুখে খানিকটা খুশি মনোভাব প্রকাশ করেছে। লোকসানের শঙ্কা থাকলেও তিনি করোনাকালে বাজারে ধানের ভালো দাম পেয়েছেন।
তিনি বলেন, 'গত আমনে পাঁচ বিঘা জমির ধান বিক্রি করে যে দাম পেয়েছিলাম, এবার দুই বিঘা কম জমিতে ধান আবাদ করে তার চেয়ে বেশি টাকা পেয়েছি। ধানের দাম পেয়ে এবার পাঁচ বিঘা জমিতেই ধান আবাদের প্রস্তুতি নিয়েছি।
কিশোরগঞ্জ তাড়াইল উপজেলার মাঠে ধান কাটছিলেন জনা দশেক শ্রমিক। পাশেই দাঁড়িয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলছিলেন কৃষক, তিনি ওই ব্যক্তিকে বিদায় জানিয়ে শ্রমিকদের তাগাদা দিতে দিতে উৎফুল্লচিত্তে বলতে লাগলেন, 'তাড়াতাড়ি ধান কাটো। সব ধান বিক্রি হয়ে গেছে।' কে কিনল, পাইকার বেপারী এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রতি মণ ধান ৮০০ করে কিনে নিয়েছেন।'
গত বছর এই সময়ে হাটে নিয়েও ধান ৪০০ টাকায় বিক্রি করা যায়নি। এবার পাইকাররা খেত থেকেই দ্বিগুণ দামে ধান কিনে নিচ্ছেন।