জয়পুরহাটে ধান নষ্ট করে মাটি ভরাট করছে পানিউন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:১৯ পিএম, ১৪ এপ্রিল,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:৫৬ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
জয়পুরহাটের সদর উপজেলার বম্বু, ও পুরানাপৈল ইউনিয়নের ধারকী টু হেলকুন্ডা মৌজার মধ্য দিয়ে ১০০ শত বছরের একটি খারি(খাল) পানিউন্নয়ন বোর্ড সংস্কার শুরু করেছে। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সদর উপজেলার সোয়া ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ হেলকুন্ডা খাল পুন: খনন শুরু করা হয়েছে।
এতে খালের দুই পাশের জমির ধান মাটি চাপা পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এঘটনায় উপজেলা হেলকুন্ডা, হানাইল, কাদিপুর, মৌজার কৃষকরা ফসলের ক্ষতিপুরনের পাশাপাশি ধান কেটে ঘরে না তোলা পর্যন্ত খনন কাজ বন্ধ রাখার দাবী জানিয়েছে।
কৃষকরা জানান গত সোমবার এবিষয়ে প্রতিকার চেয়ে জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে জয়পুরহাট সদর উপজেলার হেলকুন্ডা খাল, পুন: খনন কাজ শুরু হয় গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এতে বরাদ্দ হয় ৯০ লাখ টাকা, খাল খননের দায়ত্বি পায় যশোরের মিশন পাড়ার পুরাতন কসবা মেসার্স নুর হোসেন, নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধি হিসেবে খনন কাজ দেখভাল করছেন নাটোরের মুক্তার হোসেন নামের এক ব্যাক্তি। কৃষকের দাবী খালটির প্রস্থ মাত্র ১০ ফুট, অথচ ঠিকাদার তাদের ব্যাক্তিগত ৪৫ ফুট জমি দখল নিয়ে আধাপাকা ধান ক্ষেত নষ্ট করে খনন কাজ ও মাটি ভরাট করেছে।
এত চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকরা। এ কাজে বাধা দিতে গেলে ঠিকাদারের পক্ষ থেকে নানা ভাবে ভয় ভীতি দেখানো হচ্ছে। ভয়ভীতির কারনে অনেকেই কাচা ধান কেটে মাটি ভরাটের জায়গা করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। কৃষকদের দাবী ১ মাস পর খাল খনন করলে তাদের বোরো ধানের ক্ষতি হতোনা।
এ অবস্থায় চলমান খাল খননে ক্ষতি পুরনের পাশাপাশি ১ মাসের জন্য খাল খনন কাজ বন্ধের দাবীতে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছে কৃষকরা।
হেলকুন্ডা গ্রামের কৃষক আবু মাসুম বলেন অনেক টাকা খরচ করে আমরা বোরা চাষ করেছি, জমিতে ধান প্রায় পেকে গেছে, ১ মাস পর এই ধান তাদের ঘরে উঠার কথা কিন্তু যেভাবে মাঠের ভিতর দিয়ে ভেকো মেশিনে খাল খননের কাজ করা হচ্ছে, তাতে ক্ষেতের অনেক ধান নষ্ট হয়ে গেছে।
হানাইল গ্রামের কৃষক মোশাররফ বলেন আগে জানলে আমরা খাল পাড়ে জমিতে ধান লাগাতামনা। এখন আধাপাকা ধান কেটে খালের মাটি ভরাটের জায়গা খালি করে দিতে হচ্ছে। না কাটলে ঠিকাদার ধানক্ষেতের উপর মটির ভরাট করছেন।
কৃষকের অভিযোগের ভিত্তিতে জানতে চাইলে নাটোরের ঠিকাদারের প্রতিনিধি মুক্তার হোসেন মোবাইল ফোনে জানান আমরা কৃষকের জমিতে নয় খাল খনন করছি পানি উন্নয়নে বোর্ডেও জায়গায়। সময় কম থাকার কারনে বিলম্ব করা সম্ভব হচ্ছেনা। কাজেই দ্রুত সময়ে খাল খনন কাজ শেষ করা হবে।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম এই পতিবেদককে বলেন সরকারের নিতিমালা মেনে গত ফেব্রৃুয়ারি মাস থেকে হেলকুন্ডা খাল পুন:খননের কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন এখনও কৃষকের কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
জেলা প্রশাসক শরিফুল ইসলাম বলেন, কৃষকের ধানের ক্ষতি করে খাল খনন করা যাবেনা ক্ষতি করলে ঠিকাদারকে ক্ষতিপুরন দিতে হবে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বের্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে।
সরেজমিনে কয়েকজন সাংবাদিকসহ ঘুরে দেখা গেছে যে, ১০ ফিট খাল ৪৫ ফিট পর্যন্ত মাটি ভরাট কাজ চলছে। এতে করে কৃষকদের প্রচুর ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে।