লালপুরের নান্দ খাল পুনঃখনন, কৃষকের মুখে হাসি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:২০ পিএম, ৭ এপ্রিল,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ১২:২২ এএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
এক সময়ে তিন ফসলি মাঠ ছিল নাটোরের লালপুর উপজেলার নান্দ মাঠ। সে মাঠে ধান, গম, পাট, আখ, মসুর, খেসাড়িসহ প্রায় সকল ফসলের চাষ হতো। কিন্তু এসব ফসল হতো এ মাঠের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া নান্দ খালের কারনে।
এ খাল যেমন বর্ষার পানি নিষ্কাশন করতো তেমনি আবার শুস্ক মৌসুমে জমিতে সেচের পানি যোগান দিত। কিন্তু কয়েক যুগ ধরে খালটি সংস্কার না করায় তা বিলিন হয়ে যায়।
ফলে মাঠের কয়েক হাজার একর জমি বছরের বেশির ভাগ সময় পানির তলায় ডুবে থাকে এবং শুস্ক মৌসুমে পানির অভাবে মাটি ফেটে চৌচির হয়ে যায়। এতে করে তিন ফসলি জমি পরিনত হয় এক ফসলিতে।
কৃষকরা খালটি পুনঃখনন করার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। বিভিন্ন সময়ে জাতীয় দৈনিকে এ খালটি পুনঃখননের প্রয়োজনীয়তা উল্যেখ করে অনেক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
এরই প্রেক্ষিতে নাটোর-১ (লালপুর - বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল এর প্রচেষ্টায় খালটি পুনঃখননের কর্মসূচি গ্রহন করে বিএডিসি’র পানাসি সেচ প্রকল্প।
এ বছর ২৭ ফেব্রুয়াারি ৪৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ব্যায়ে বিএডিসির পানাসি সেচ প্রকল্পের আওতায় ৬.২ কিলোমিটার নান্দ খাল পুনঃখনন কাজের উদ্বোধন করেন নাটোর-১ (লালপুর - বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খাল খননে নামানো হয়েছে এস্কেভেটর মেশিন ( স্থানীয় নাম ভেকু),খনন করা হচ্ছে খাল। আর এ খাল খননের ফলে কৃষকের মাঝে বইছে আনন্দের জোয়ার, মুখে তাদের হাসির ঝিলিক।
নান্দ গ্রামের মাজদার রহমান জানান, এ মাঠে তার ৪০ বিঘা জমি আছে। এ মাঠের মাঝ দিয়ে ৮০ এর দশকে একটি কম (৩-৫ ফুট) প্রশস্তের খাল খনন করা হয়েছিল, তখন থেকে এ মাঠে সব রকম ফসলের চাষ করা হতো। কিন্তু ৯০ এর দশকে খালটি ভরে গেলে মাঠে পানি জমে থাকতে শুর হয়, এতে করে বছরের বেশির ভাগ সময় মাঠটি জলমগ্ন থাকতো, আবার শুস্ক মৌসুমে পানির অভাব দেখা দিত, ফলে মাঠে ফসল ফলানো খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে, তিন ফসলি মাঠে শুধু মাত্র একটি ফসল ফলানো যেত।
রিয়াজ উদ্দিন লিটন জানান, খালটি পুনঃখনন না করায় বর্ষায় ফসল ডুবে যেত, ৯০ এর দশক থেকে আমরা খালটি পুনঃখনন করার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ সহ নানা আন্দলান সংগ্রাম করেছি, বর্তমানে আমাদের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল এর প্রচেষ্টায় খালটি পুনঃখনন করা হচ্ছে, এতে করে হাজার হাজার কৃষক উপকৃত হবে।
একই গ্রামের খোরশেদ আলম, শাহ আলমসহ একাধিক কৃষক জানান, এ খালটি পুনঃখনন হলে আমরা খুবই উপকৃত হবো, আমাদের দীর্ঘ দিনের সমস্যার সমাধান হবে, আবার আমরা জমিতে ইচ্ছেমত ফসল ফলাতে পারবো।
খালখননের এস্কেবেটরের চালক মানিক (৩০) জানায়, খালটি আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রশস্থ হচ্ছে, এর তলা হচ্ছে ১০ ফুট,গভীরতা ৭ফুট ও দুই পাড়ির মধ্যে ব্যবধান হচ্ছে ২৭ ফুট।
লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, এ খালটি পুনঃখননে হাজার হাজার কৃষক উপকৃত হবে।
বিএডিসি নাটোরের রিজিয়ন নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন জানান, আমরা স্বল্প ব্যায়ে এ প্রকল্পটি বাস্তায়ন করছি, কাজটি সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য এলাকাবাসি সহ আমরা সর্বদা সচেষ্ট আছি।