কুষ্টিয়ার নিখোঁজ সেই বাকীবিল্লাহ’র সন্ধান মিললো ৫ মাস পর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৩৫ পিএম, ৭ এপ্রিল,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:০৬ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার সন্তান নিখোঁজ সেই বাকীবিল্লাহ’র সন্ধান মিললো ৫ মাস পর। রাজধানীর পল্টন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ (সিটিটিসি) নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের আইটি বিভাগের প্রধানসহ দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো-আরিফুল ইসলাম জাহেদ ওরফে আইমান ওরফে আরাহান ওরফে রেহান (৩০) ও বাকী বিল্লাহ ওরফে আবু সামির ওরফে জাফর ওরফে ফয়সাল (৩৪)। তাদের বিরুদ্ধে পল্টন মডেল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে।
বাকীবিল্লাহ'র সন্ধানের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনও করে তার পরিবার। তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সন্তানকে ফিরিয়ে আনার আঁকুতি জানিয়েছিলো। নিখোঁজ বাকী বিল্লাহ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ষোলদাগ দক্ষিণপাড়া এলাকার ইয়াকুব আলীর ছেলে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানায়, মঙ্গলবার দুজনকেই আদালতে পাঠানো হয়। আরিফুল ঢাকা উত্তরের দায়ী বিভাগের প্রধান মাসুল (দায়িত্বশীল)। আর বাকী বিল্লাহ আনসার আল ইসলামের তথ্যপ্রযুক্তি ও নজরদারি প্রতিরোধ বিভাগের প্রধান।
পুলিশ জানিয়েছে, আরিফুল চট্টগ্রামে লেখাপড়ার সময় ২০০৮ সালে জামায়াতুল মুসলিমিন নামের একটি সংগঠনে যোগ দেয়। পরবর্তী সময়ে ঢাকায় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে ব্যবসায় প্রশাসনে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সময়ই সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত মেজর জিয়ার সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামে যোগ দেন।
বাকী বিল্লাহ সম্পর্কে পুলিশ জানায়, বাকী বিল্লাহ মেজর জিয়ার মাধ্যমে ২০১৪ সালে এই সংগঠনে যোগদান করেন। অল্প সময়ের মধ্যে কাজের দক্ষতা ও মেজর জিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে তাকে আনসার আল ইসলামের আইটি ও নজরদারি প্রতিরোধ বিভাগের প্রধান করা হয়।
বাকী বিল্লাহ নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাসের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার কারণে দ্বিতীয় বর্ষের পর পড়াশোনা থেমে যায়।
গত বছরের ১২ নভেম্বর থেকে বাকী বিল্লাহর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না। সেসময় সাদা পোশাকে একদল লোক তাকে তুলে নিয়ে যায় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিলো।
বাকী বিল্লাহর স্ত্রী কুলসুম আক্তার জানান, ঢাকার তুরাগ থানার অন্তর্গত নলভোগ এলাকার ১০ তলা ভবনের তিনতলায় তারা ভাড়া থাকতেন। তার স্বামী বাকী বিল্লাহ ফ্রিল্যান্সার এবং কাজ করতেন আউট সোর্সিং বৃহৎবাজার ‘আপওয়ার্কে’। বড় ছেলেকে মাদ্রাসায় রেখে আসার জন্য ১২ নভেম্বর সন্ধ্যায় তুরাগ থানার নিশাতনগর এলাকার বাসা থেকে বের হন বাকী।
বাড়ির নিচে নামতেই নিরাপত্তা রক্ষীর সামনে ডিবি পুলিশ পরিচয়ধারী দুই ব্যক্তি বাকী বিল্লাহকে মাইক্রোবাসযোগে তুলে নিয়ে যায়। গাড়ির মধ্যে আরও ৮ থেকে ১০ জন ছিল।
তিনি জানান, ঘটনার পর ডিবি কার্যালয় ও তুরাগ থানায় পরিবারের পক্ষে যোগাযোগ করা হলে পুলিশ তাকে আটকের কথা স্বীকার করেনি। পরদিন তুরাগ থানায় জিডি করতে গেলে তা নেয়া হয়নি। ৫ দিন ঘোরানোর পর জিডি নেয় থানা।