বছরের প্রথম কালবৈশাখী ঝড়ে নিহত ১৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৩৭ পিএম, ৫ এপ্রিল,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৪:০৬ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
মওসুমের প্রথম কালবৈশাখী ঝড়ে তিন জেলায় অন্তত ১৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে গাইবান্ধায় ১০, ফরিদপুরে ২ ও কুষ্টিয়ায় ১ জন রয়েছে।
এছাড়া ঝড়ে গাছ পড়ে আহত হয়েছেন আরও শতাধিক লোক। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উঠতি ফসলের। ভেঙে পড়েছে ঘরবাড়ি-গাছপালা।
উত্তরাঞ্চলে রবিবার দুপুরে বৃষ্টিহীন কালবৈশাখী ঝড়ো হাওয়ার তাণ্ডবে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী, সাদুল্লাপুর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সদর উপজেলা লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।
রবিবার রাত পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে গাছ চাপা পড়ে ও অটোরিকশা উল্টে শিশু মহিলা সহ ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছে অন্তত ২০ জন। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এখন পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
গাছ চাপা ও গাছের ডাল ভেঙে পড়ে পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নে আব্দুল গোফ্ফার (৫৫) ও জাহানারা বেগম (৫০), সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের দোয়ারা গ্রামে ময়না বেগম (৬০), ফুলছড়ি উপজেলার কাতলামারীতে শিশুলী বেগম (২৫) মারা গেছে।
এছাড়া ঝড়ের সময় ফুলছড়ি উপজেলার মদনেরপাড়া এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটো উল্টে হাফেজ উদ্দিন (৪৪), গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রাফিউল আলম বলেন, একই কারণে গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাদিয়াখালী গ্রামের জোছনা বেগম, শিশু মনির, রামচন্দ্রপুরের আরজিনা, মালিবাড়ি গ্রামের সাহেরা মারা যান। অপর জনের নাম পাওয়া যায়নি।
দুপুর ২টার পর থেকে গাইবান্ধার উত্তর পশ্চিমাকাশে কালো মেঘের সাথে ঝড় হাওয়া শুরু হয়। থেমে থেমে প্রায় এক ঘন্টা বৃষ্টি বিহীন এই ঝড়ো হাওয়ায় জেলার পলাশবাড়ী, সাদুল্লাপুর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সদর উপজেলা ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গাছপালা, ও ফসলের বেশ ক্ষতি হয়।
গাইবান্ধার চরাঞ্চলে ভুট্টার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তীব্র ঝড়ো হাওয়ায় ৫ উপজেলার অন্তত ৫ হাজার হেক্টর জমির ভুট্টা, ধান ও মরিচের গাছ ভেঙে পড়েছে মাটিতে। এতে কৃষকরা এই উঠতি ফসল ঘরে তুলতে পারবেনা।
জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন ঝড়ে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে দেবার ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া উপজেলা প্রশাসনকে ক্ষয়ক্ষতি নিরপণের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঝড়ের কারণে গাছপালা ভেঙে এখন পর্যন্ত চার উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। ঝড়ের পর থেকে আজ অবধি ইন্টারনেট ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি। ফলে সংবাদকর্মীরা পড়েছে বিপাকে। উপজেলা প্রশাসন রোববার রাতেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
ফরিদপুরে রোববার সন্ধ্যায় আলফাডাঙ্গা উপজেলার বানা ইউনিয়নের টাবনী ঘোষবাড়ির সামনে কালবৈশাখী ঝড়ে গাছ চাপা পড়ে মা-মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। নিহত মোসাম্মাৎ হালিমা (২৫) ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের মো. জাহিদের স্ত্রী এবং তাদের এক বছর চার মাস বয়সী শিশু কন্যা আফছানা।
কুষ্টিয়ায় বছরের প্রথম কালবৈশাখী ঝড়ে উড়ে আসা টিনের আঘাতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার বিকেলে দৌলতপুর উপজেলার মহিষাডোরার আল্লারদর্গা এলাকার শশীধরপুর গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রয়াত রবিউল ইসলাম (৪০) স্থানীয় বাসিন্দা সাদ মন্ডলের ছেলে এবং পেশায় একজন সবজি ব্যবসায়ী।