টাকার জন্য মা-মেয়েকে গলা কেটে হত্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:২৪ পিএম, ২১ মার্চ,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:৪৯ এএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
দুই লাখ টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকারের জন্য হবিগঞ্জের বাহুবলে মা ও আট বছরের মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করেছে ঘাতকরা। হত্যাকান্ডের শিকার মা-মেয়ে থাকতেন বাসার ৩য় তলায়। ২য় তলায় থাকতো ঘাতক আমীর আলী।
নিহত অঞ্জলী মালাকারের স্বামী ব্যবসার কাজে গত বুধবার রাতে ছিলেন সুনামগঞ্জে। তাদের বাসায় নগদ দুই লাখ ও টাকা ও স্বর্ণালংকার রয়েছে জানতো আমীর। টাকা ও সোনার গহনা ও এনড্রয়েড মোবাইল ফোনের জন্য মা ও মেয়েকে হত্যা করে খুনিরা।
গতকাল শনিবার (২০ মার্চ) বিকেলে হবিগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট তাহমিনা হকের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মূল ঘাতক আমীর হোসেন (৩০)।
এর আগে শুক্রবার রাতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে বাহুবল থানায় মামলা দায়ের করেন নিহত অঞ্জলী দাশের স্বামী সঞ্জিত দাশ। লোমহর্ষক এ হত্যাকান্ডের দুদিনের মধ্যে রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আমীর আলী ও তার সহযোগী মনির মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে শুক্রবার রাতে অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে বাহুবল থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহত অঞ্জলী দাশের স্বামী সঞ্জিত দাশ।
গতকাল শনিবার রাত ৮টায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লাহ। গ্রেপ্তারকৃত আমীর উল্লাহ সিলেটের শাহপরান থানার চৌকিদিঘী এলাকার আলমগীর মিয়ার ছেলে।
তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মনির মিয়া নামে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের দেয়া তথ্যমতে পুকুর থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছোরা, মোবাইল ফোন ও কিছু টাকা উদ্ধার করা হয়।
স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, বাহুবল উপজেলার দীগাম্বর বাজার এলাকার বাসিন্দা সঞ্জিত দাশ (৪৫) ও আমীর হোসেন পূর্ব পরিচিত। প্রায় তিন মাস আগে সঞ্জিত দাশের মাধ্যমেই আমীর হোসেন পার্শ্ববর্তী বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন।
কয়েকদিন আগে আমীর হোসেন সঞ্জিতের বাসায় এসে তিন হাজার টাকা ধার নেন এবং জানতে পারেন তাদের বাসায় আরও দুই লাখ টাকা এবং সোনার বালা রয়েছে। গত ১৮ মার্চ সঞ্জিত তার স্ত্রী অঞ্জলী মালাকার (৩০) ও মেয়ে পূজা রাণী দাসকে (৮) বাসায় রেখে ব্যবসার সুনামগঞ্জ যান।
ওইদিন মা-মেয়ে বাসায় একা থাকার সুযোগে আমীর তার আরও দুইজন সহযোগীকে নিয়ে টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি করতে আসে। এক পর্যায়ে মা ও মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করেন। হত্যার তাদের ব্যবহৃত ছুরি একটি পুকুরে রেখে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
পরে আমীর হোসেন নিজেই তার হাত কেটে অজ্ঞান হওয়ার ভান করে পার্শ্ববর্তী জমিতে পড়ে থাকেন। তিনি মানুষকে বোঝাতে চান ডাকাতরা দুজনকে হত্যা করেছেন। এরপর স্থানীয়রা তাকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এসপি আরও জানান, পুলিশের সন্দেহ হলে আমীর হোসেনকে হাসপাতাল থেকেই আটক করা হয়। তার কথামতো মনিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। আরেক আসামি পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে আমীর আলী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। অন্য আসামিকেও গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।