করোনায় মন্দা শেরপুরের পর্যটন কেন্দ্র
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৪০ পিএম, ১৭ মার্চ,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:৩৯ এএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
শেরপুর জেলার নয়নাভিরাম গারো পাহাড়ের পিকনিক স্পট (পর্যটন কেন্দ্র) গুলো এবার জমে ওঠেনি। করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এখানে ঘুরতে আসা পর্যটকদের সংখ্যা অনেক কম। আবার এখানকার ইজারাদার ও ব্যবসায়ীদেরও লাভের পরিবর্তে গুনতে হচ্ছে লোকসান।
দেশের উত্তর সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলার নয়নাভিরাম গারো পাহাড়। এ গারো পাহাড়ের নৈসার্গিক দৃশ্য অবলোকন করার জন্য সারা দেশের মানুষ এখানে প্রায় সারা বছরই বেড়াতে আসেন। তাই এখানে শেরপুর জেলা প্রশাসন গড়ে তুলেছে গজনী অবকাশ ও বনবিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছে মধুটিলা ইকোপার্ক নামে দুটি পর্যটন কেন্দ্র।
এ পর্যটন কেন্দ্রে শীত ও শুকনো মওসুমে প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ এখানে সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য আসেন। কিন্তু করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবার দর্শনার্থী খুবই কম। তাই ভালো লাগেনা এখানে আসা দর্শনার্থীদেরও।
এমনই একজন ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা নিশাদ হাসনাইন নামের এক চাকুরীজীবি জানান, আমার ভালো লাগার জায়গা এ পর্যটন কেন্দ্র। কিন্তু দর্শনার্থী কম থাকায় এবার সেই আগের মতো ভালো লাগছেনা।
আর দর্শনার্থীদের জন্য পশরা সাজিয়েছে এখানকার ব্যবসায়ীরা। মওসুমের জন্য দোকানীরা মালামাল মজুদ করে রেখেছেন। এছাড়া বিভিন্ন স্পট ইজারা নিয়ে থাকে ইজারাদাররা। কিন্তু মরণব্যাধী করোনার কারণে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবার জমে উঠেনি শেরপুরে পর্যটন কেন্দ্রগুলো।
এতে এখানকার ইজারাদার ও ব্যবসায়ীরা বেকায়দায় পড়েছে। দর্শনার্থী কমে যাওয়ায় তাদের টাকা তুলতে পারে নাই এবার। তাই পূঁজি হারিয়ে এখন তারা দিশেহারা।
অবকাশ কেন্দ্রের ইজারাদার শাহজাহান সরকার জনান, লোকজন কম আসায় গাড়ীও খুব আসছে। এতে আমাদের টাকা উঠছেনা। আমাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। দোকানী রোজিনা বেগম জানান, ছাত্র-ছাত্রী না আসায় এবার আমাদের বেচাকেনা নাই। এঅবস্থায় আমরা ঘরভাড়া দিমু কেমনে আর নিজেরাই খামু কি।
শিশুদের ভালো লাগার মতো জায়গা এটা। এখানে শিশুরা এসে বেশ আনন্দ পায়। কিন্তু করোনার কারণে তারাও এখানে আসছে খুবই কম। ফলে এখানে আসা শিশুরাও আগের চেয়ে কম আনন্দ পাচ্ছে। শিশু রত্না জানায়, এ গজনী অবকাশটা আমাদের খুব ভাললাগে। কিন্তু মানুষ আগের তুলনায় এখন কম আসছে।
এদিকে দর্শনার্থীদের অভিযোগ পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে আরো আকর্ষনীয় করা প্রয়োজন। উন্নত খাবার হোটেল, পুরুষ মহিলাদের জন্য আলাদা ওয়াশরুম, নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করাসহ এ পর্যটন কেন্দ্রকে নিয়ে আরো প্রচারনা চালানো দরকার।
দর্শনার্থী কম থাকায় এখানে গড়ে উঠা মিনি চিড়িয়ানার মালিকও আছে বেকায়দায়। তারও খরচ ওঠছেনা। পর্যটন কেন্দ্রের ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের ক্ষতির কথা স্বীকার করে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবেল মাহমুদ বলেন, মহামারী করোনা আমাদের অনেক কিছুরই ক্ষতি করেছে।
এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের বিষয়টি বিচেনার জন্য স্থানীয়রা দাবী তুলেছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্যটন কন্দ্রের উন্নয়ন ধীরে ধীরে হচ্ছে, সামনে আরো উন্নয়ন হবে। ব্যবসায়ীদের বিষয়টা বিচেনা করা হচ্ছে।