স্বাধীনতার চেতনা আজ ভূলুণ্ঠিত-মাহবুবের রহমান শামীম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:১৫ এএম, ১৪ মার্চ,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:০৫ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেছেন, ৫০ বছর আগে স্বাধীনতা যুদ্ধে কাদের অবদান ছিল তার সঠিক ইতিহাস জানাতেই বিএনপি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে। আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, শুধু একটি পরিবারের জন্য বা একটি রাজনৈতিক দলের জন্য এদেশে স্বাধীনতা আসেনি। বছরের পর বছর ধরে কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষের পরিশ্রম ও আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা এসেছে। বর্তমান অনির্বাচিত সরকার সেই স্বাধীনতাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে। আমরা এখন নিজেদের স্বাধীন বলতে পারি না। আমাদের সেই অধিকার নেই। আমাদের বাকস্বাধীনতাকে হরণ করা হয়েছে। আমাদের লেখার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে, লিখলে জেলে দিচ্ছে। স্বাধীনতার চেতনা আজকে ভূলুণ্ঠিত। একদলীয় শাসনব্যবস্থা গণতন্ত্রের ভুয়া মোড়কে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে।
আজ শনিবার দুপুরে নাসিমন ভবনস্থ বিএনপি কার্যালয়ে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে চিকিৎসা ও সেবা উপকমিটি চট্টগ্রাম বিভাগের উদ্যোগে বছরব্যাপী স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
উক্ত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ও ড্যাব কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবুল হাশেম বক্কর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।
এ সময় মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, বর্তমান সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। সরকারের অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হওয়া প্রতিটি কন্ঠকে স্তব্ধ করে দেয়া হচ্ছে। গণমাধ্যমের কন্ঠকে নিস্তব্ধ করার জন্যই একের পর এক কালো আইন করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করে মতপ্রকাশের অধিকারকে ভূলুন্ঠিত করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একটি ভয়াবহ কালো আইন। অবিলম্বে এই আইন বাতিল করতে হবে।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি তখন শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বীরউত্তম খেতাব বাতিলের চক্রান্ত করছে অনির্বাচিত কর্তৃত্ববাদী সরকার। তারা অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে। ভোটারবিহীন নির্বাচন করছে। নির্বাচনের আগের রাতে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে পার্লামেন্ট ও সরকার গঠন করেছে। আমাদের স্বাধীনতার সকল আশা ভেঙে খান খান করেছে।
স্বাধীনতার এই ৫০ বছরে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা দূরে থাকুক আরো বিভক্ত করা হয়েছে। স্বাধীনতাকে সংহত করার চেয়ে আরো দুর্বল করা হয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভ্রান্ত ইতিহাস জানিয়ে বিভ্রান্তি করা হচ্ছে। জনগণের আশা আকাক্সক্ষা ভেঙে চুরমার করা হয়েছে। এমন একটি সমাজ, একটি রাষ্ট্র গঠন করা হচ্ছে যেখানে ন্যায়বিচার দুষ্প্রাপ্য। বৈষম্য আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আবুল হাশেম বক্কর বলেন, করোনাকালে সরকার ও তাদের দলীয় নেতারা জনগণের সাথে একের পর এক প্রতারণা করেছে। দেশের এই দুর্যোগকালে তারা মাস্ক কেলেঙ্কারি, ত্রাণের চাল ও ডাল চুরি করেছে। অপরদিকে জনগণের দল হিসেবে বিএনপি চট্টগ্রামে ঘরে ঘরে খাদ্যসামগ্রী ও চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিয়েছে। করোনা দুর্যোগকালে চট্টগ্রাম মহানগরীতে বিএনপির পক্ষ থেকে এক লাখ ৩২ হাজার ৩২১টি কর্মহীন অসহায় পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরব্যাপী স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পর্যায়ক্রমে প্রতিটি ওয়ার্ডে চালু করা হবে।
আবু সুফিয়ান বলেন, আজকে বাজারে চাল, তেল, দুধ, মুরগিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও শ্রমজীবী মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে। সরকারি দলের মদদপুষ্ট এক শ্রেণির ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা এবং সরকারি ব্যবস্থপনার ব্যর্থতা ও দুর্নীতির কারণে দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলেছে। আসন্ন রমজান মাসকে সামনে রেখেই অসাধু ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছে। কিন্তু সরকারের এদিকে খেয়াল নেই। এই সরকার জনগণের সরকার নয়। এই সরকার জোর করে ক্ষমতায় এসেছে বলেই দেশের এ অবস্থা। জনগণ থাক আর না থাক তাদের কিছুই আসে যায় না। সুবর্ণজয়ন্তীর চট্টগ্রাম শাখার চিকিৎসা ও সেবা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. মো. জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. তমিজ উদ্দিন আহম্মেদ মানিক, অধ্যাপক ডা. মো. আব্বাস উদ্দিন, ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালী।
উদযাপন কমিটির সদস্যসচিব ডা. এস এম সারোয়ার আলমের পরিচালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, আব্দুল মান্নান, সদস্য নিয়াজ মোহাম্মদ খান, মো. কামরুল ইসলাম, বিএনপি নেতা আবদুল হালিম স্বপন, মো. ইদ্রিস আলী, আজাদ বাঙ্গালী, জাকির হোসেন, জানে আলম জিকু, এস এম আবুল কালাম আবু, হাজি মো. এমরান উদ্দিন, ডা. নুরুল করিম চৌধুরী, ডা. তানভির হাবিব তান্না, ডা. ইয়াসিন আরাফাত, ডা. মো. মঈনউদ্দীন, ডা. ওমর ফারুক পারভেজ, ডা. ফাহিম, ডা. তারেক, অঙ্গসংগঠনের জিয়াউর রহমান জিয়া, আসাদুর রহমান টিপু, মো. নওশাদ, এন মো. রিমন, সামিয়াত আমিন জিসান, মো. আনাস প্রমুখ।