সিলমারা ব্যালট নিয়ে ছবি তুলে ভাইরাল ইউপি চেয়ারম্যান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:৪২ পিএম, ২ মার্চ,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৫৮ এএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
যেকোনো নির্বাচনে গোপন বুথে ভোট দিয়ে তা বাক্সে ফেলার কথা। নির্বাচন কমিশনের বিধিতেও তাই বলা আছে। কিন্তু ঠিক এর উল্টোটি করলেন জেলার দেবিদ্বার উপজেলার গুনাইঘর (দক্ষিণ) ইউনিয়নের দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম।
সিলমারা ব্যালট নিয়ে ছবি তুলেছেন, সঙ্গে ভাইরালও হয়েছেন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের এ সভাপতি।
গত রোববার উপজেলার চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। ছবিটি চেয়ারম্যানের নিজস্ব ফেসবুকে পোস্ট করার পর থেকেই বিতর্কের ঝড় ওঠে।
গতকাল সোমবার বিষয়টি স্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান নিজেও। জেলা নির্বাচন অফিস বলছে বিষয়টি তদন্ত করা হবে।
জানা গেছে, গত রোববার দেবিদ্বার উপজেলার ১১৪টি ভোট কেন্দ্রে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। গুনাইঘর (দক্ষিণ) ইউনিয়নের দুইবারের নির্বাচিত ও বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে গলায় নৌকা মার্কার ফিতা ও ব্যাজ পরে তার ইউনিয়নের মাশিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট প্রদান করতে যান। এ সময় তিনি বিধি ভেঙে নির্বাচন ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারদের সামনেই সিলমারা ব্যালট পেপারের ছবি তোলেন।
একই দিন সকাল পৌণে ১১টার দিকে হাকিম তার নিজস্ব ফেসবুকে ছবিটি পোস্ট করেন। ক্যাপশনে তিনি লেখেন- ‘আলহামদুলিল্লাহ। প্রাণের নৌকায় ভোট দিলাম।’ ছবিতে তার সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বাদল মুন্সী ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন ভূঁইয়াকে দেখা গেছে। বাদল মুন্সীর হাতে সিলমারা ব্যালট পেপার দেখা গেছে।
এদিকে বিধি লঙ্ঘন করে দলীয় নেতাদের নিয়ে ভোট কক্ষে প্রবেশ করে এভাবে ফটোসেশনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নৌকার সিলমারা ছবি নিজের ফেসবুকে আপলোডের বিষয়টি নিয়ে অনেকেই নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন।
স্থানীয় সাংবাদিক সাহিদুল ইসলাম হাকিমের পোস্টের মন্তব্যে লিখেছেন ‘এখন তো আপনার বিরুদ্ধে মামলা হবে, ভোট একটি গোপন মতামত প্রকাশের মাধ্যম, তাহা প্রকাশ্যে প্রদর্শন আইনগত দণ্ডনীয় অপরাধ।’
সোহেল গাজী নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন ‘কাকা কয়বার দিলেন।’
উপ নির্বাচনে মাশিকাড়া উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে নৌকা প্রতীক ৩৪৭ ও ধানের শীষ পেয়েছে ১২০০ ভোট। ভোট কক্ষে দাঁড়িয়ে সিলমারা ব্যালট পেপার নিয়ে ছবি তোলা প্রসঙ্গে বিকালে মুঠো ফোনে আবদুল হাকিম চেয়ারম্যান বলেন, ‘দলের দুই সিনিয়র নেতার অনুরোধে ছবি তুলেছিলাম।
আমার ভাতিজা ফয়সাল ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করেছে।’ তিনি নিজে ফেসবুক ব্যবহার করতে পারেন না বলেও জানান চেয়ারম্যান।
এ বিষয়ে সোমবার বিকেলে জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘গোপন কক্ষে ব্যালট পেপারে সিল মেরে তা নির্ধারিত বাক্সে ফেলার বিধান রয়েছে। কিন্তু প্রকাশ্যে এনে ছবি তুলে তা আবার ফেসবুকে পোস্ট করা আইনগতভাবে দণ্ডনীয় অপরাধ।
একজন নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান তা করে থাকলে তা নিশ্চিত দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’