সিলেটে চলছে পরিবহন ধর্মঘট, যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:১১ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪ | আপডেট: ০১:০৯ এএম, ৪ জানুয়ারী,শনিবার,২০২৫
দূর্ঘটনার পর গাড়ি ভাংচুরের প্রতিবাদে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট চলছে। কর্মবিরতির নামে চালক-শ্রমিকরা গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে সোমবার থেকে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
আজ মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল থেকেও সড়কটিতে বাস চলাচলের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
জকিগঞ্জের কামালগঞ্জ এলাকায় বাসের ধাক্কায় এক স্কুলছাত্রের নিহতের ঘটনার জের ধরে ভাঙচুরের ঘটনায় সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন অনির্দিষ্টকালের জন্য এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন।
সকালে সিলেট নগরের কদমতলী বাস টার্মিনালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে টার্মিনাল থেকে কোন বাস জকিগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়নি। একইভাবে জকিগঞ্জ থেকেও সিলেটের উদ্দেশ্যে কোন বাস ছেড়ে আসেনি। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীরা পড়েছেন মারাত্মক দুর্ভোগে।
টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে অনেক যাত্রী সেখানে বসে আছেন বাসের অপেক্ষায়। বাস ছেড়ে যাবে না জানার পরও তারা অপেক্ষা করছেন ধর্মঘট প্রত্যাহারের।
জকিগঞ্জ যাওয়ার টার্মিনালে অপেক্ষা করছেন কালিগঞ্জের যাত্রী বদরুল ইসলাম। তিনি জানান, পরিবার নিয়ে তিনি সকাল ৮টায় কদমতলী টার্মিনালে এসেছেন। কিন্তু কোন বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। তাই মারাত্মক বিপাকে পড়েছেন তিনি। দুপুর নাগাদ ধর্মঘট প্রত্যাহার না হলে মাইক্রোবাস রিজার্ভ করে তাকে বাড়ি ফিরতে হবে বলে জানান বদরুল।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার সকালে জকিগঞ্জের কামালগঞ্জ আব্দুল মতিন কমিউনিটি সেন্টারের নিকটে সড়কের পাশে শিশু-কিশোররা ফুটবল খেলছিলো। হঠাৎ বল সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে চলে গেলে সেটি আনতে আবির আহমদ (১৪) নামের এক কিশোর দৌঁড় দেন। এসময় দ্রুতগামী একটি গেটলক বাসের ধাক্কায় সে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা বাসটি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।
পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ- এটি ছাড়াও আরও অন্তত ৩টি বাস ভাঙচুর করা হয় এসময়। এর প্রতিবাদে সোমবার পরিবহন শ্রমিকরা সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। মঙ্গলবারও সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন তারা।
জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মুহিত বলেন- আমাদের বাসের চালক অন্যায় করলে আইন অনুযায়ী তার শাস্তি হবে। কিন্তু আইন হাতে তুলে নিয়ে বাস ভাঙচুর করা ও পুড়ানো সন্ত্রাসী কাজ। আমরা এর বিচার চাই। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বাসের চালক বাদী হয়ে জকিগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের আবেদন করেছেন।
এ ব্যাপারে জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, বিষয়টি সিলেটের জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। শিগগিরই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।