অক্সিজেন নিয়ে চালকের মিথ্যাচারে বাবার মৃত্যু, প্রতিবাদ করায় ছেলেকে ছুরিকাঘাত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫০ পিএম, ২৭ অক্টোবর,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ১২:৫৩ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ কালেঙ্গার সজিব আহমদ শিপু'র (৩০) বাবা শ্বাসকষ্টের রোগী। হঠাৎ শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্থানীয় ডাক্তারের পরামর্শে অসুস্থ বাবাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন মৌলভীবাজার সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে। ওখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এবং রেফার করেন ডাক্তার।
সিলেটে নেওয়া জন্য রির্জাভ করা হয় প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স ( ঢাকা মেট্রো-ছ ৭১-০৫০৫ )। চালক ও হেলপারের প্রতারণায় অক্সিজেনহীনতায় অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরে শ্বাস-প্রশ্বাস না নিতে পেরে মারা যান কামাল উদ্দিন আহমদ (৫৫)।
এমন মর্মান্তিক ঘটনায় ছেলে সজিব আহমদ শিপু প্রতিবাদ করলে ওই অ্যাম্বুলেন্সের চালক, হেলপার ও ওখানকার স্ট্যান্ডে থাকা আরও ১৫-২০ জন জড়ো হয়ে তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের হামলায় সজিব আহমদ শিপু গুরুতর আহত হন। তাকে রক্ষায় তার ছোট ভাই রাজীব আহমদ রাজুসহ অন্যরা এগিয়ে এলে তারাও ওদের এলোপাতাড়ি হামলায় আহত হন।
জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। অ্যাম্বুলেন্স চালকের প্রতারণা ও অবহেলায় কামাল উদ্দিন আহমদ (৫৫) মারা যান।
এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে নিহতের ছেলেকে মারধর ও ছুরিকাঘাত করে আহত করে অ্যাম্বুলেন্সের চালক খালেদ মিয়া(৩৫) এবং সাদিক মিয়াসহ(৫০) অন্যরা। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে।
তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরদিন সকাল থেকে ঘটনার প্রতিবাদে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠে ও দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং শাস্তি দাবি করেন সাধারণ মানুষ।
জানা যায়, কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে খালেদ মিয়াসহ (৩৫) ও সাদিক মিয়াসহ (৫০) আরও কয়েকজন নিহত কামাল উদ্দিন আহমদের ছেলে শিপু মিয়াকে বাবার লাশের সামনেই কিল-ঘুষি দিয়ে ছিঁড়ে ফেলেন তার পড়নের শার্ট, পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। এক পর্যায়ে তার মাথায় ছুরিকাঘাত করে। স্থানীরা মৃত বাবার পাশ থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেন। এ বিষয়ে নিহতের ছেলে আহত সজিব আহমদ শিপু মৌলভীবাজার মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
আহত সজিব আহমদ শিপু জানান, গাড়িতে অক্সিজেন না থাকায় চোখের সামনে বাবা মারা গেলেন।
অক্সিজেন নিয়ে চালক মিথ্যাচার না করলে এমন মৃত্যু হয়তো না। এই অবহেলা নিয়ে প্রতিবাদ করায় দলবল নিয়ে ওই চালক ও হেলপার আমাকে ও আমার সাথে থাকা স্বজনদের আহত করলো। এই ঘটনার বিচার প্রশাসন ও দেশবাসীর কাছে চাই। আমি মৌলভীবাজার মডেল থানায় অভিযোগ করেছি।
মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ইয়াছিনুল হক জানান, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনি প্রদক্ষেপ নেওয়া হবে।