ফরিদপুরের ভাঙ্গায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০২ এএম, ২৪ মার্চ,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:১৬ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের ঘারুয়া গ্রামে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুইদল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
আজ বুধবার (২৩ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়।
শুরুতে এ সংঘর্ষ ঘারুয়া গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও পরবর্তিতে ঘারুয়া গ্রামের একাংশের সাথে পাশের চৌকিঘাটা গ্রামের লোকজন যুক্ত হয়। দেড় ঘন্টাব্যাপি এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। এ সময় তিনটি বাড়ি ও দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উত্তেজনা থামাতে বর্তমানে ঐ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
জানা যায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ঘারুয়া ইউনিয়নের ঘারুয়া ও চৌকিঘাটা গ্রামের দুটি পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুদিন যাবত উত্তেজনা বিরাজ করছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ঘারুয়া গ্রামের রমজান মাতুব্বরের ছেলে সজিব মাতুব্বর (১৮) এর সাথে একই গ্রামের চুন্নু মাতুব্বরের ছেলে ইমন মাতুব্বরের (১৯) হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রমজান মাতুব্বর ছেলের পক্ষ নিয়ে ইমন মাতুব্বরকে মারধর করে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে মিমাংসা করতে চায়। কিন্তু বুধবার সকাল ৮টার দিকে দুই পক্ষের শতশত লোকজন ঘারুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জড়ো হয়ে দেশিয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় ঘারুয়া গ্রামের মাজেদ ফকির, কাদের মুন্সী ও সৈয়দ আলী মুন্সীর বাড়ি ও ঘারুয়া বাজারের ওবায়দুর মোল্লা, ফরহাদ মিয়ার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। দেড় ঘন্টাব্যাপি চলা সংঘর্ষে দুই পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়।
ঘারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনসুর আলী মুনশী বলেন, সিগারের লাইটার চাওয়াকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্সের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের জন্য মাইকিং করে লোক জড়ো করা হয়। দুই পক্ষের মধ্যে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের নিয়ে সালিশ বৈঠক করে এ সংকট দ্রুত মিটিয়ে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ সালিশ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
ভাঙ্গা থানার উপ পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বলেন, দুইপক্ষের সংঘর্ষে বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের সময় দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ইউনিয়নের বালিয়াচরা ও সোনাখোলা গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলাদায়ের করেছেন। এ মামলার বাদী হয়েছেন ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক মাসুদ আলম। মাসুদ আলম জানান, মঙ্গলবার আলগী ইউনিয়নে সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে একজন এসআই ও দুইজন কনস্টেবলসহ তিনি পুলিশ সদস্য আহত হয়।
এ ঘটনায় কর্তব্যরত পুলিশের উপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে এ মামলাটি করা হয়। এ মামলায় আসামি হিসেবে ৫জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা বহুসংখ্যক ব্যাক্তিকে আসামি করা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে তবে বুধবার দুপুর পর্যন্ত কোন আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।