ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিহত ছেলের লাশ নিয়ে ৩ দিন রাস্তায়
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:২০ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারী,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:০৯ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ট্রাক চাপায় শিশুপুত্রকে হত্যার বিচারের দাবিতে লাশ নিয়ে তিন দিন রাস্তা অবরোধ করে রেখেছিলেন নিহতের বাবা ও স্বজনরা। অবশেষে প্রতিবাদের মুখে থানায় মামলা দায়ের করার কাগজ হাতে পেয়ে অবরোধ তুলে লাশ দাফন করা হয়েছে। এভাবেই ছেলেকে হত্যার অভিযোগে পুলিশকে মামলা নিতে বাধ্য করলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের আউয়াল মিয়া।
গতকাল বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে শিশুটিকে দাফন করা হয়।
এর আগে গত সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে একটি ইটভাটার ট্রাকচাপায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের টেকপাড়ার শিশু রাসেল মিয়া (৮) নিহত হয়। সে স্থানীয় হরিপুর সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
সন্তানহারা বাবা আওয়াল মিয়া অভিযোগ করেন, এলাকার একটি ইটভাটার অংশীদার ও ট্রাকমালিক আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ কাপ্তান মিয়া নিয়মিত ট্রাক দিয়ে মাটি আনতে গিয়ে এলাকার সড়ক নষ্ট করে ফেলছিল। এলাকার সাধারণ মানুষের স্বার্থে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি আমি এর প্রতিবাদ জানাই। এতে কাপ্তান মিয়া আমার প্রতি ক্ষুব্ধ হন এবং দলবল নিয়ে আমাকে হুমকি দেন।
স্থানীয়দের উপস্থিতিতে তিনি তার কর্মীদের নির্দেশ দেন, ট্রাকের সামনে যা পড়বে সব মাটির সাথে পিষে দিতে। এরই জের ধরে সোমবার দুপুরে মাটির ট্রাকচাপায় ওরা আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, এই ঘটনায় সোমবার রাতেই মামলা দায়ের করতে নাসিরনগর থানায় যাই। ওসি সাহেব মামলা না নিয়ে খারাপ ব্যবহার করে আমাকে তাড়িয়ে দেন। পরে ময়নাদতন্তের পর আমার নিহত ছেলে রাসেলের লাশ নিয়ে এলাকাবাসীকে নিয়ে সড়ক অবরোধ করি। আজ (বুধবার) মামলার কাগজ হাতে পেয়ে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করি।
এদিকে নাসিরনগর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি হাবিবুল্লাহ সরকার লাশ দাফনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে নিহতের বাবা আওয়াল মিয়া কাপ্তান মিয়াকে প্রধান আসামি করে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন, যা থানায় রজু হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ ফারুক মিয়া বলেন, থানার ওসি ও পুলিশ এসে নিহতের বাবা আওয়াল মিয়ার হাতে মামলার কাজগপত্র বুঝিয়ে দিলে লাশ দাফন করতে সম্মত হয়। পুলিশ লাশ দাফন সম্পন্ন করে ঘটনাস্থল থেকে বিদায় নেয়।