সুনামগঞ্জে কাভার্ডভ্যানসহ ২০ লক্ষ টাকার মালামাল জব্দ, মামলা দায়ের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২১ পিএম, ১৬ ফেব্রুয়ারী,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:৪২ পিএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যনগর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলা সীমান্ত এলাকায় দিনদিন বেড়েই চলেছে চোরাচালান বাণিজ্য। সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাকারবারীরা সিন্ডিকেডের মাধ্যমে প্রতিদিন ভারত থেকে শাড়ি, লেহাঙ্গা, চাল, ঢাল, চিনি, ছোলা, কয়লা, পাথর, কাঠ, পান-সুপারী, মদ, গাঁজা, বিড়ি, হেরোইন, ইয়াবা, অস্ত্র, ঘোড়া ও গরু পাচাঁর করছে বলে খরব পাওয়া গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে জেলার ধর্মপাশা থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২০ লক্ষ টাকা মূল্যের ভারতীয় শাড়ি ও লেহাঙ্গাসহ ১২লক্ষ টাকা মূল্যের ১টি কাভার্ডভ্যান জব্দ করেছে। এঘটনার প্রেক্ষিতে সীমান্ত চোরাকারবারী সাগর মিয়া (২৮) ও কাভার্ডভ্যান চালক হাকিবুল ইসলাম (২৫) কে আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে- জেলার মধ্যনগর উপজেলা সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে চোরাই পথে ভারত থেকে ২০লক্ষ টাকা মূল্যের ভারতীয় শাড়ি ও লেহাঙ্গাসহ গরু, মদ, গাঁজা, ইয়াবা, চাল, কাঠ পৃথক ভাবে পাচাঁর করে চোরাকারবারীরা। পরে পাচাঁরকৃত মালামালের মধ্যে অবৈধ শাড়ি ও লেহাঙ্গা ১টি কাভার্ডভ্যান ভর্তি করে নিয়ে যাওয়ার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরহাটি ইউনিয়নের বৌলাম গ্রামের আটক করে। ওই সময় সীমান্ত চোরাকারবারী সাগর মিয়া ও কাভার্ডভ্যান চালক হাকিবুল ইসলাম সুকৌশলে পালিয়ে যায়।
অপরদিকে তাহিরপুর উপজেলা বীরেন্দ্রনগর, চারাগাঁও, বালিয়াঘাট, টেকেরঘাট, চাঁনপুর, লাউড়গড় সীমান্ত এলাকা দিয়ে একাধিক মামলার আসামী ইয়াবা কালাম মিয়া, জিয়াউর রহমান জিয়া, লেংড়া জামাল, শফিকুল ইসলাম ভৈরব, রমজান মিয়া, আনোয়ার মিয়া, কুদ্দুস মিয়া, বাবুল মিয়া, ইসাক মিয়া, কামাল মিয়া, আবু বক্কর, রফিকুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, জজ মিয়া, এরশাদ মিয়া গং পৃথক ভাবে সিন্ডিকেডের মাধ্যমে প্রতিদিন ভারত থেকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কয়লা, পাথর, চাল, মদ, গাঁজা, ইয়াবা, গরু, ঘোড়া, পান-সুপারী, বিড়ি ও অস্ত্র পাচাঁর করছে। বেশ কিছুদিন আগে পুলিশ একাধিক অভিযান চালিয়ে চারাগাঁও, বালিয়াঘাট ও টেকেরঘাট সীমান্ত দিয়ে পাচাঁরকৃত চোরাই কয়লা ও মাদকসহ ২০-২৫জন চোরাকারবারীকে গ্রেফতার করে থানায় একাধিক মামলা দিয়ে জেলহাজতে পাঠায়।
এর ফলে কিছু দিন সীমান্ত চোরাচালান বন্ধ ছিল। কিন্তু বর্তমানে সীমান্ত চোরাকারবারীরা নিজেদেরকে বিজিবির সোর্স পরিচয় দিয়ে আবারও তাদের অবৈধ বাণিজ্য শুরু করেছে। সেই সাথে সাংবাদিক, পুলিশ ও বিজিবির নাম ভাংগিয়ে করছে লক্ষলক্ষ টাকা চাঁদাবাজি। একই ভাবে জেলার বিশ্বম্ভরপুর, সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলা সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাকারবারীরা দাপটের সাথে জমজমাট ভাবে চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বাণিজ্য করছে বলে জানা গেছে। তাই সীমান্ত চোরাকারবারী ও চাঁদাবাজদের গ্রেফতার করে চোরাচালান প্রতিরোধ করার জন্য পুলিশ ও র্যাব প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন জেলার সচেতন জনসাধারণ।
এব্যাপারে ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন- শুল্ক ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে ভারত থেকে চোরাই পথে পাচাঁর করা ১হাজার ৫৫৬টি শাড়ি ও ২৭৬টি লেহাঙ্গাসহ ১টি কাভার্ডভ্যান জব্দ করা হয়েছে। অভিযানের খবর পেয়ে ভ্যান চালক ও চোরাই ব্যবসায়ী পালিয়ে যায়। এজন্য তাদেরকে পলাতক আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়ে। তাদেরকে গ্রেফতার করাসহ অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।