শাজাহানপুরে সন্ত্রাসী সাগর গ্রেফতারে এলাকায় স্বস্তি ফিরেছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৫৪ এএম, ২৫ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:২০ পিএম, ১৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শিহাব উদ্দিন বাবু (৩৫) হত্যা মামলার প্রধান আসামি সন্ত্রাসী সাগর(২৮) র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়ায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। সাগর আশেকপুর ইউনিয়নে সাবরুল গ্রামের হাটখোলা পাড়ার গোলাম মোস্তফার পুত্র। তাঁর নামে ৩ টি হত্যাসহ ১১ টি মামলা চলমান রয়েছে।
জানা যায়, দক্ষিণ বগুড়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী নিহত মজনু প্রামাণিকের আপন ভাগ্নে সাগর। আওয়ামীলীগ সরকার ২০০৮ সালে প্রথম দফায় ক্ষমতায় আসার পর মামা মজনু’র সন্ত্রাসী গ্রুপে তরুণ বয়সে চলাফেরা শুরু করে সাগর। ধীরে ধীরে এলাকায় মামার প্রভাবে আধিপত্য বিস্তার করতে থাকে। জড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে। গড়ে তোলে নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী। বাহিনীর প্রধান হিসেবে সাবরুল এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করে সাগর।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা, ইট,বালু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালিয়েছে সাগর। তাঁর এসব কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে তাকেই মারপিট করত এবং বিভিন্ন হুমকি দামকি দিত সাগর বাহিনী। তাঁর ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খোলার সাহস পায়নি। শুধু তাই নয় সাগরসহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা এলাকায় জমজমাট মাদক ব্যবসা চালায়। বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হয়ে জামিনে বের হয়ে এসে সাগর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে ।
যে কারণে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা বাবুকে হত্যা করে সাগর: সাবরুল বাজারে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা শিহাব উদ্দিন বাবু’র নিজস্ব জায়গায় মৎস্য আড়ৎ রয়েছে। এ আড়ৎতে জমজমাট ভাবে মাছ ক্রয়-বিক্রয় হয়। আড়ৎ পরিচালনা করতেন বাবু নিজেই। আড়ৎ’দারদের কাছ থেকে খাজনা তুলতে চেয়েছিলেন সাগর। কিন্তু আড়ৎ মালিক বাবু বাধ সাধে। এ কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে বাবুকে হত্যার হুমকি দেয় সন্ত্রাসী সাগর। তাঁরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ৩০ মে সাবরুল বাজারে রাত সাড়ে ৭ টার দিকে সন্ত্রাসী সাগরের নেতৃত্বে তাঁর বাহিনীর সদস্যরা প্রকাশ্য স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা শিহাব উদ্দিন বাবুকে কুপিয়ে হত্যা করে।
হত্যাকান্ডের পরদিন নিহতের স্ত্রী রুমি সাগরকে প্রধান আসামি করে শাজাহানপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর আত্মগোপনে চলে যায় সন্ত্রাসী সাগর। মাঝে মধ্যে বগুড়ার এসে মাদক বিক্রি করতেন সাগর এমন তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-১২। গত ২০ ডিসেম্বর সোমবার বিকেলে সাগরকে র্যাব-১২ বগুড়ার সদস্যরা শহরের চারমাথা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে শাজাহানপুর থানায় হস্তান্তর করেছে। এ হত্যা মামলাটি বর্তমানে পুলিশের সিআইডি বিভাগ তদন্ত করছে।
অপরদিকে সন্ত্রাসী সাগর গ্রেফতারে এলাকার ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ ও নিহতের পরিবারের মাঝে ব্যাপক স্বস্তি ফিরে এসেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান, সাগর ও তাঁর বাহিনীর সদস্যদের কারণে সব সময় তাদের আতংকে থাকতে হয়। সাগর তাঁদের কাছ থেকে একাধিক বার চাঁদা নিয়েছে। সে গ্রেফতারে বাজারে এখন স্বস্তি ফিরে এসেছে। বাবু হত্যায় আমরা (ব্যবসায়ীরা)সাগরের ফাঁসি চাই।
নিহত বাবু’র এক স্বজন জানায়, প্রকাশ্য বাবুকে সাগরের নেতৃত্বে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বাজারের লোকজন যা স্ব-চোখে দেখেছে। সাগর গ্রেফতারের আমাদের মনে একটু শান্তি অনুভব হচ্ছে। সাগরের ফাঁসি কার্যকর হলে আমরা (স্বজনরা) মনের পুরোপুরি তৃপ্তি পাবো ।