নেত্রকোনায় গরু ব্যবসায়ীকে হাত-পা বেঁধে পুড়িয়ে হত্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৩৪ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৯:০৬ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
নেত্রকোনার কলমাকান্দায় এক গরু ব্যবসায়ীকে হাত–পা বেঁধে শ্বাস রোধ করে হত্যার পর তাঁর লাশ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) রাত ১২টার দিকে উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের পাঁচগাঁও এলাকা থেকে ওই ব্যবসায়ীর দগ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত ওই গরু ব্যবসায়ীর নাম মো. মজিবুর রহমান (৪৮)। তিনি ওই এলাকার মৃত আব্বাস আলীর ছেলে। মজিবুর স্থানীয় বিভিন্ন হাটবাজারে গরু বেচাকেনা করতেন। নিহত ব্যক্তির পরিবারের দাবি, একই গ্রামের বাসিন্দা জনি মিয়া (৩০) তাঁর লোকজনদের দিয়ে মজিবুরকে হত্যা করেছেন। জনি মিয়া একই গ্রামের মৃত আব্বাস আলীর ছেলে। জনি সুদের ব্যবসাসহ গরুর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় মজিবুর স্থানীয় পাঁচগাঁও বাজারের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর আর তিনি বাড়ি ফিরে আসেননি। পরে রাত ১২টার দিকে স্থানীয় লোকজন মজিবুরের বাড়ির পাশের পতিত জমিতে রাখা খড়ে আগুন দেখে খবর দেন। তৎক্ষণাৎ মজিবুরের বড় ভাই আতাউর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন তাঁর খড়ের আগুনের মধ্যে তাঁর ভাইয়ের লাশ পড়ে আছে। পরে স্থানীয় লোকজনের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে হাত–পা বাঁধা অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়।
খবর পেয়ে রাতেই নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ফকরুজ্জামান জুয়েল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এরপর আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নেত্রকোনা পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী, কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল আহাদসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। এরপর বেলা দেড়টার দিকে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির বড় ভাই আতাউর রহমান বলেন, জনি মিয়ার কাছ থেকে তাঁর ভাই মাঝেমধ্যে সুদের বিনিময়ে টাকা নিতেন। জনি সুদের ব্যবসা ছাড়াও সীমান্তে বিভিন্ন পণ্য ও গরুর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। গতকাল সকালে জনি তাঁর ভাইকে পাওনা টাকার জন্য মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছিলেন। জনিই তাঁর লোকজন নিয়ে তাঁর ভাইকে হত্যার পর লাশ আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছেন।
নিহত মজিবুরের স্ত্রী শমলা আক্তারও দাবি করেন, জনি মিয়া তাঁর স্বামী মজিবুরকে হত্যা করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ ঘটনার পর থেকেই জনি মিয়া গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া গেছে। তাই অভিযোগের বিষয়ে তাঁর কোনো বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে মজিবুরকে হাত-পা বেঁধে শ্বাস রোধ করে হত্যার পর লাশ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সুদের সাড়ে তিন লাখ টাকা নিয়ে মজিবুরকে জনি মিয়া নামের এক যুবক তাঁর বাড়িতে এসে শাসিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জনি সীমান্তে বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত বলে জানা গেছে। তাঁকে আটক করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।