ভৈরবে পুলিশ পিটিয়ে আসামি ছিনতাই
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:৩৩ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২১ | আপডেট: ০৭:৪৬ এএম, ১৭ নভেম্বর,রবিবার,২০২৪
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে মাদক মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত এক আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় পুলিশের দুই সদস্য আহত হন। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের দাবি, হামলাকারী প্রত্যেকে মাদক কারবারি।
গতকাল রবিবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে পৌর শহরের ঘোড়াকান্দা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আজ সোমবার সকালে ছয়টায় মাদক কারবারির নাম উল্লেখ করে মামলা করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামি হলেন রাসেল মিয়া (৩০)। তিনি নরসিংদীর বেলাব উপজেলার তমিজ মিয়ার ছেলে।
আহত দুই পুলিশ হলেন ভৈরব থানার সহকারী উপপরিদর্শক রেজাউল করিম ও আ. করিম। তাঁরা ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ভৈরব পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারিদের একজন রাসেল। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভৈরবে থাকেন। কয়েক বছর ধরে রাসেল একটি মাদক সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য। সীমান্ত থেকে আসা মাদকদ্রব্য ভৈরব থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো এই সিন্ডিকেটের প্রধান কাজ। রাসেলের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে। এর মধ্যে মাদক আইনে ভৈরব থানায় করা একটি মামলায় আদালত তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এএসআই রেজাউল ও আ. করিম গতকাল সন্ধ্যার পর পৌর শহরের ঘোড়াকান্দায় ছিলেন। তাঁরা পুলিশের পোশাকে ছিলেন না। গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে ঘোড়াকান্দা সড়ক দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় রাসেলকে দেখতে পান তাঁরা। রাসেলকে দেখেই তাঁরা তাঁর গতি রোধ করেন এবং জানান যে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। রাসেল তা অস্বীকার করছিলেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা হচ্ছিল।
একপর্যায়ে রাসেলকে ধরে একটি রিকশা গ্যারেজে নিয়ে যাওয়া হয়। তখনো তাঁকে হাতকড়া পরানো হয়নি। ১০ থেকে ১৫ মিনিটের ব্যবধানে অন্তত ১৫ জন রড ও দা নিয়ে দুই পুলিশকে ঘিরে ফেলেন এবং হামলা চালান। হামলাকারীরা দুই পুলিশ সদস্যকে রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করেন। এ সময় রাসেলকে নিয়ে হামলাকারীরা চলে যান। পরে রেজাউল ও করিমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় করা মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে রাসেল মিয়াকে। মামলায় আরও পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ জনকে। পুলিশের কাজে বাধা, হামলা ও পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ এনে মামলাটি করেন আহত এএসআই রেজাউল করিম।
রিকশা গ্যারেজটির মালিক ওই এলাকার জজ মিয়া। তাঁর ছেলে সজীব মিয়া বলেন, হামলাকারীরা শুধু পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে ক্ষান্ত থাকেননি, একই সঙ্গে গ্যারেজেও ভাঙচুর চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি করেছেন। এদিকে পুলিশকে আহত করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে শহরে এখন সাঁড়াশি অভিযান চলছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, রাসেল পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি। দুই পুলিশ সদস্যকে মারধর করে রাসেলকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলার খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন তিনি।