রাজবাড়ীতে সহকর্মীকে মারার ভিডিও প্রকাশের পর প্রকৌশলী বরখাস্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৫৪ পিএম, ২৫ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২১ | আপডেট: ১১:২৭ এএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
উপ-সহকারী এক প্রকৌশলীকে চেয়ারসহ মেঝেতে ফেলে গলা চেপে ধরেন রাজবাড়ীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আহাদ। গত মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড হওয়ায় মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
গতকাল বুধবার (২৪ নভেম্বর) ভুক্তভোগী প্রকৌশলী মো. রনি ঘটনাটির ফুটেজসহ পাউবোর মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে ওই দিনই প্রকৌশলী আব্দুল আহাদকে বরখাস্ত করা হয়। পাউবোর উপ-সচিব (প্রশাসন) সৈয়দ মাহবুবুল হক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আহাদকে অসদাচরণ ও চাকরি শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রশিক্ষণ ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পাউবোর উপ-সচিব (প্রশাসন) সৈয়দ মাহবুবুল হক বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় ভীষণ অ্যানয়েড। এ বিষয়ে তদন্ত হবে।’
সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আহাদের কক্ষে আগে থেকেই অবস্থান করছেন সহকারী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম। কিছুক্ষণ পর ওই কক্ষে প্রবেশ করেন রনি। কথা বলার এক পর্যায়ে রনির ওপর রেগে যান নির্বাহী প্রকৌশলী। এক পর্যায়ে তিনি চেয়ার থেকে উঠে রনির গলা চেপে ধরেন এবং ধাক্কা দিয়ে মেঝেতে ফেলে দেন। এ সময় নির্বাহী প্রকৌশলীকে নিবৃত্ত করেন আশরাফুল আলম।
এরপর নির্বাহী প্রকৌশলী নিজের চেয়ারের কাছে ফেরত এসে এনটি কাটার হাতে নিয়ে শাসাতে থাকেন রনিকে। পরে ওই কক্ষ থেকে রনিকে সরিয়ে দেন আশরাফুল আলম।
মহাপরিচালকের কাছে দেওয়া অভিযোগে রনি বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে তাকে ও আরেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইকবাল সরদারকে কিছু নথিপত্রসহ দাপ্তরিক কাজে প্রধান প্রকৌশলীর দপ্তরে যেতে বলেন আবদুল আহাদ। এই কাজে দপ্তরের গাড়ি নিয়ে যেতে বললেও ওই দিন তারা কোনো গাড়ি পাননি। তাই তারা পরের দিন যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।’
বিষয়টি জানতে পেরে মঙ্গলবার বিকেলে আশরাফুল আলমের মাধ্যমে রনিকে ডেকে পাঠান। বিকেল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে নির্বাহী প্রকৌশলীর কক্ষে যান রনি। সেখানে যাওয়ার পর আবদুল আহাদ ‘তুই-তোকারি’ করে চেয়ার থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এক পর্যায়ে রনির বুকের ওপর পা দিয়ে চেপে ধরেন এবং গলা টিপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করেন। একই সঙ্গে জবাই করার হুমকি দেন।
এ ঘটনা সম্পর্কে নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আহাদ বলেন, ‘নদী ভাঙনসহ নানা ঝামেলায় আছি। এরপর এরা ঠিকমতো নিজেদের দায়িত্ব পালন করে না। অনেক দিন ধরেই রনি আমার নির্দেশনা মানেন না। তাই কথা বলার এক পর্যায়ে টেম্পার ধরে রাখতে পারিনি। তাই তাকে শারীরিকভাবে আঘাত করেছি। যেটা আমার ঠিক হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘ওরা এ ঘটনার আগে ও পরে অনেক কিছুই গোপন করেছে। ওরা আমার সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে সিসি ক্যামেরা নিয়ে যায়। এরপর ঘটনার আগের ও পরের অংশ বাদ দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ভাইরাল করা হয়েছে।’