ফরিদপুরে দাহমাসি জুট ইন্ডাস্ট্রিজতে হামলা ও ভাংচুর, আটক- ১৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৩৫ এএম, ১৪ নভেম্বর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:১৩ পিএম, ১৮ নভেম্বর,সোমবার,২০২৪
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নের রাজধরপুর গ্রামে অবস্থিত দাহমাসি জুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১৩ জনকে আটক করেছে।
আজ শনিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা পৌন ১২টার মধ্যে ওই মিল প্রাঙ্গনে এ ঘটনা ঘটে।
দাহমাসি জুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডটি যৌথ মালিকানায় পরিচালিত হয়। এ মিলের ৫৪ শতাংশ মালিকানা নোমান চৌধুরী ও ৪৬ শতাংশ মালিকানা মৃধা মনিরুজ্জামানের। এই মিলের মালিকানার নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হলে নোমান ও মনিরুজ্জামান দুইজন দুইজনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে দুটি মামলা করেছেন।
এ মিলে বিভিন্ন সময়ে পাট সরবরাহ করে প্রায় অর্ধশত ব্যবসায়ীর মিলের কাছে প্রায় ১৪ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। ব্যাবসায়ীরা পাওনার টাকা চাইতে গেলে এক মালিক অন্যকে এবং অন্য মালিক অরেকজনকে দেখিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে পাওনাদার ব্যবসায়ীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল।
ঘটনার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, শনিবার ব্যবসায়ীরা পাওনার টাকা চাইতে ওই মিল গেটে জড়ো হন। ওই সময় মনিরুজ্জামানের ভাই মৃধা বদিউজ্জামান লোকজন নিয়ে ওই মিল এলাকায় যান। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এরই পেক্ষাপটে মিলে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
দাহমাসি জুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক আব্দুর রাজ্জাক জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে পৌন ১২ পর্যন্ত হামলা ভাংচুর চালিয়েছেন সাবেক দাহমাসি জুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের অংশিদারী মৃধা মনিরুজ্জামানের ছোট ভাই মৃধা বদিউজ্জামান বাবলুর নেতৃত্বে কয়েকশত লোক। হামলাকারীরা মিলের প্রধান ফটকে অবস্থানরত রক্ষীদের উপর হামলা করে গেট ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে অফিসে হামলা ও ভাংচুর করে। এতে গেট রক্ষীসহ ১২/১৩ জন আহত হন। হামলায় দুই জন রক্ষি গুরুতর আহত হলের তাদের মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের বাসিন্দা পাট ব্যবসায়ী শ্যাম সুন্দর কুণ্ডু বলেন, ওই মিলের কাছে গত দেড় বছর ধরে আমার ২৮ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। যৌথ মালিকানায় মিলটি চলতো। এক মালিকের কাছে টাকা চাইলে তিনি অন্যকে দেখিয়ে দেন। শনিবার আমার ছেলে তাপস কুণ্ডু পাওনা টাকা চাইতে গেলে মিলের লোকজনের সাথে ঝামেলা হয়। ওই সময় তাপসকে পুলিশ আটক করে।
আড়পাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, পাওনাদারা পাওনার টাকা চাইতেই পারেন। তবে শিল্প প্রতিষ্ঠান ভাংচুর বা ক্ষতিসাধন প্রত্যাশিত নয়। ওই মিলের অংশিদার মৃধা মনিরুজ্জামান বলেন, পাট ব্যবসায়ীরা তাদের বকেয়া পাওনা চাইতে গেলে তাদের উপর হামলা করা হয়। পাওনা টাকা চাওয়া অপরাধ নয়। অপরাধ হচ্ছে সে টাকা পরিশোধ না করা।
মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, মিলে হামলা ও ভাংচুর হয়েছে এ খবর শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ এ ঘটনার সাথে জড়িত ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে মৃধা বদিউজ্জামান বাবলুসহ ১৩জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে। মিলের ফটক ও মিলের ভিতরের কক্ষে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।