দুদকের মামলায় কারাগারে পুলিশের এসআই
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:৪৬ পিএম, ১০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৩৫ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাময়িক বরখাস্ত এসআই মো. নওয়াব আলীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
আজ বুধবার (১০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, দুর্নীতির মামলায় পুলিশের এক এসআই আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম আলোতে ‘এসআইয়ের কোটিপতি স্ত্রী’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। ওই দিনই এসআই নওয়াবের স্ত্রী গোলজার বেগম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাকে কারাগারে পাঠালে তিনি পরে জামিনে মুক্তি পান। গোলজার বেগম চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক। তার স্বামী নওয়াব ঢাকায় সিআইডির এসআই পদে কর্মরত ছিলেন।
আইনজীবী মাহমুদুল হক আরও জানান, এ মামলায় দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করে গোলজার বেগম, তার স্বামী এসআই নওয়াব আলীসহ চার আসামির বিরুদ্ধে গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। কিন্তু আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন।
দুদক সূত্র জানায়, ১৯৯২ সালে কনস্টেবল পদে যোগ দেন নওয়াব আলী। তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকার মালিক সাজিয়েছেন স্ত্রী গোলজার বেগমকে। মাছ চাষ থেকে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা আয় করেছেন বলে কাগজপত্রে দেখালেও বাস্তবে মাছ চাষের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তারপরও মাছ চাষ করা হয় মর্মে কর কর্মকর্তারা প্রতিবেদন দিয়েছেন।
এসআই নওয়াব আলী, তার স্ত্রী গোলজার বেগম, কর অঞ্চল-১ চট্টগ্রামের অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) বাহার উদ্দিন চৌধুরী ও কর পরিদর্শক দীপংকর ঘোষকে আসামি করে আদালতে দুদক অভিযোগপত্র দিয়েছে।
দুদকের তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, নওয়াব আলীর গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরের কেকানিয়া এলাকায়। সেখানে তার ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ জমির ওপর একটি দোতলা বাড়ি ছাড়াও স্ত্রী গোলজারের নামে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ছলিমপুরে ৩৫৪ শতক জমি, চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার এলাকায় পার্কিংসহ ১ হাজার ১০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, একই এলাকায় ৪ শতক জমি রয়েছে। গোলজারের নামে একটি মাইক্রোবাসও রয়েছে।
এদিকের, দুদকে জমা দেওয়া হিসাব বিবরণীতে গোলজার দাবি করেছেন, তিনি মিরসরাইয়ের পশ্চিম ইছাখালীর মদ্দারহাটে হারেস আহমদ, আমিনুল হক, জাহাঙ্গীর আলম, শওকত আকবরসহ সাতজনের সঙ্গে চুক্তি করে একটি জলমহাল ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করেছেন। কিন্তু তদন্তে উঠে আসে, হারেস আহমদসহ যেসব ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তি দেখানো হয়েছে, তারা ২০ বছর আগে মারা গেছেন।