সুনামগঞ্জে বন্যপ্রাণীর উৎপাত বৃদ্ধি, বাঘের আক্রমনে শিশুসহ আহত- ৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০৮ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:৫১ পিএম, ২২ নভেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
সুনামগঞ্জে দিনদিন বেড়েই চলেছে বন্যপ্রাণীর উৎপাত। নিরাপদ আশ্রয় ও খাদ্য না পেয়ে বসতবাড়িতে গিয়ে আক্রমন করছে। তাই ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখতে হচ্ছে। সন্ধ্যার পর এলাকার লোকজন বসতবাড়ির বাহিরে বের হতে পারছেনা বন্যপ্রাণীর আক্রমনের ভয়ে। হিংস্র বন্যপ্রাণীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। গত ২দিনে মেছো বাঘের আক্রমনে শিশুসহ ৮ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আহতরা হলো- জেলার সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সদরগড় গ্রামের শিশু জুনায়েদ মিয়া (৪), হোসাইন আহমদ (৫), সাকিব হোসেন (৪), রনি মিয়া (১৪), গোলাম মনতাক (৭), রত্না বেগম (১২), মুসলিমা বেগম (১৩), আকিকুল ইসলাম (৪৫)। তাদেরকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়- গত সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) ভোরে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সদরগড় গ্রামের আকিকুল ইসলামের ছেলে সাকিব হোসেন ঘুম থেকে উঠে ঘরের বাহিরে বের হলে হিংস্র মেছো বাঘ তার ওপর আক্রমণ করে। তার চিৎকার শুনে বাবা আকিকুল ইসলাম, বোন রত্না বেগম ও প্রতিবেশী গোলাম মনকাক এগিয়ে আসলে তারাও মেছো বাঘের আক্রমনে শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়।
এর আগে গত রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় একই গ্রামের মাদরাসা ছাত্রী মুসলিমা বেগমকে তার নিজ ঘরের ভিতর হিংস্র মেছো বাঘ আক্রমন করে জামা-কাপড় ছিড়ে কামড়ে আহত করে। একই ভাবে শিশু জুনায়েদ মিয়া, হোসাইন আহমদ ও রনি মিয়া ওপর মেছো বাঘ আক্রমণ করে আহত করে। পৃথক ভাবে মেছো বাঘের আক্রমণে আহত ৮ জনকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এব্যাপারে আহত আকিকুল ইসলাম বলেন, মেছো বাঘের হাত থেকে ছেলেকে রক্ষা করার সময় আমার ও আমার মেয়ে হাত-পায়ে কামড়ে দেয় হিংস্র মেছো বাঘ। পড়ে আমরা জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। মেছো বাঘের নক ও দাঁত খুবই ধরালো। তাদের অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
সুনামগঞ্জ সদরগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হারুনুর রশিদ বলেন, সম্প্রতি বন্য মেছো বাঘের উৎপাত খুবই বেড়ে গেছে। এলাকার শিশু ও বয়স্করা তাদের আক্রমনের শিকার হয়ে আহত হয়েছে। তাই চারদিকে এখন মেছো বাঘের আতংক বিরাজ করছে। এব্যাপারে জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
এঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সুনামগঞ্জ ফরেষ্ট রেঞ্জ অফিসার চয়ন ব্রত চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, বন্যার সময় সীমান্তের চলতি নদী দিয়ে ভারত থেকে অনেক কিছু আসে। এই পাহাড়ী নদীর ঢলের সাথে মেছো বাঘও ভেসে এসেছে। তারা নিরাপদ আশ্রয় ও খাদ্য না পাওয়ার কারণে মানুষের বসতবাড়িতে গিয়ে আক্রমণ করছে বলে মনে হচ্ছে। বন্য মেছো বাঘের খাদ্য হচ্ছে মাছ ও মাংস। তারা দেখতে অনেকটা বিড়ালের মতো, গায়ে ডোরাকাটা দাগ আছে। এলাকার লোকজনকে মেছো বাঘের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করব।