আশুগঞ্জে অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কা: দুই সন্তানের পর মারা গেলেন বাবাও
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:২৯ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০২:১০ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে লেভেল ক্রসিংয়ে একটি অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কায় দুই ভাই নিহত হওয়ার পর এবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের বাবারও মৃত্যু হয়েছে।
আজ রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাদেক মিয়া নামের ওই ব্যক্তি।
এর আগে ভোরে ওই দুর্ঘটনায় তার দুই ছেলে রুবেল (৩৩) ও পাপেল (২৩) ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তাদের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই (উত্তর) ইউনিয়নের রাজঘর গ্রামে।
এদিকে দুর্ঘটনার কারণ ক্ষতিয়ে দেখতে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
রোববার ভোর পৌনে ৫টার দিকে আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর এলাকায় লেভেল ক্রসিং পার হওয়ার সময় একটি অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী একটি মেইল ট্রেন। এ ঘটনায় অটোরিকশায় থাকা দুই ভাই নিহত হন এবং তাদের বাবা গুরুতর আহত হন। তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনিও মারা যান।
একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় নিহতদের গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
নিহতদের স্বজনরা জানান, চোখের চিকিৎসার জন্য বাবাকে নিয়ে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশে নিজ বাড়ি থেকে অটোরিকশায় করে আশুগঞ্জ যাচ্ছিলেন রুবেল ও পাপেল। সেখান থেকে ঢাকাগামী তিতাস কমিউটার ট্রেনে করে তাদের ঢাকা যাওয়ার কথা ছিল। পথে আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর রেলওয়ে লেভেল ক্রসিংয়ে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী মেইল ট্রেন অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দিলে অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং রুবেল ও পাপেল ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর তাদের বাবা সাদেক মিয়ারও মৃত্যু হয়।
নিহত ছাদেক মিয়ার স্ত্রী মোমেনা বেগম এবং মেয়ে ইয়াসমিন ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। আখাউড়া রেলওয়ের ওসি মাজহারুল করিম জানান, দায়ীদের চিহ্নিত করে এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এদিকে লেভেল ক্রসিংয়ে এই দুর্ঘটনার কারণ ক্ষতিয়ে দেখতে রেলওয়ের সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা আমিনুল হককে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক প্রকৌশলী অপারেশন) মো. আলাউদ্দিন ঢাকা, সহকারী সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী আহাদ আলী খলিফা (ঢাকা) এবং আখাউড়া রেলওয়ে জংশনের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম মাহমুদুর রহমান।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা আমিনুল হক জানান, আমরা দুর্ঘটনার বিষয় ক্ষতিয়ে দেখছি। কারা ঘটনার জন্য দায়ী এ ব্যাপারে তদন্ত করে আমরা আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে রেলওয়ে ঢাকা বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন দাখিল করব।