স্কুল খোলার একদিন আগে ধসে পড়ল ছাদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:০৩ এএম, ১২ সেপ্টেম্বর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০৬:৫৫ পিএম, ১৬ নভেম্বর,শনিবার,২০২৪
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাসিরনগরে মডেল সরকারি প্রাধমিক বিদ্যালয়ের নির্মিত ভবনের চিলেকোঠা ছাদ ঢালাইয়ের দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই ধসে পড়েছে।
গতকাল শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে তিনতলা ভবনের চিলেকোঠার ছাদের একাংশ হেলে পড়ে। আজ শনিবার সকালে ছাদের সম্পূর্ণ অংশটি ভেঙে যায়।
পরে ঠিকাদারের লোকজন সকাল থেকেই তড়িঘড়ি করে ধসে পড়ার নির্মাণসামগ্রী সরাতে দেখা যায়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক অজিত কুমার দাসের অভিযোগ, স্কুল ও উপজেলা প্রকৌশলের কাউকে না জানিয়ে ছাদ ঢালাই করা হয়েছে। এ নিয়ে মৌখিকভাবে উপজেলা প্রকৌশলীকে অভিযোগও দেয়া হয়। তবে অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেন প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে তিনতলা ভবনের চিলেকোঠার ছাদের একাংশ হেলে পড়ে এবং আজ শনিবার সকালে ছাদের সম্পূর্ণ অংশটি ভেঙে যায়। জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে নাসিরনগর উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে নাসিরনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়।
এতে স্কুলটি নির্মাণের ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৭০ লাখ টাকা। জমির-জুলিয়া ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই নির্মাণকাজ করছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অজিত কুমার দাস অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদার কাজের শুরু থেকেই কাজ নিয়ে তালবাহানা করে আসছিল। কাজের পরিকল্পনা ও নকশা চাইলেও ঠিকাদার দেয়নি। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাউকে না জানিয়ে ছাদ ঢালাই করার বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীকে মৌখিকভাবে অভিযোগ দেয়া হয়েছিল।
বিমল দাস নামে একজন স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, ‘আগামী রবিবার স্কুল খুলছে। হঠাৎ করে স্কুলের ছাদ ধসে পড়ার কারণে অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যেতে চাইবে না।’ তিনি দাবি করেন, ভবনের সম্পূর্ণ কাজ নতুন করে করা হোক। ঠিকাদার মো. নিক্সন ইঞ্জিনিয়ার অফিসের কাউকে না জানিয়ে ছাদ ঢালাই করার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ইঞ্জিনিয়ার অফিস থেকে ছাদটি ভেঙে নতুনভাবে করার জন্য একটি চিঠি দেয়া হয়েছিল। বিদ্যালয় ভবনের নির্মাণ কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা সহকারী উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইসাক মিয়া জানান, ‘আমাদের না জানিয়ে ঠিকাদার ছাদের ঢালাই করে। পরে উপজেলা প্রকৌশলী ঠিকাদারকে ছাদ ভেঙে নতুনভাবে করার নির্দেশ প্রদান করে চিঠি দিয়েছে।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. ইকবাল মিয়া জানান, ‘আমি জেলা শিক্ষা অফিসে মিটিংয়ে আছি। পরে কথা বলবো।’ ছাদ ধসে পড়ার বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ কার হলে তিনি জানান, ‘আমি নতুন এসেছি। ছাদ ধসের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত বলতে পারবো।’ উপজেলা ইউএনও হালিমা খাতুন বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঠিকাদারকে বলা হয়েছে ছাদটি ভেঙে নতুনভাবে করার।’