বন্যায় জাজিরা ও নড়িয়ার ৩০ গ্রাম প্লাবিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৫৮ পিএম, ৮ সেপ্টেম্বর,
বুধবার,২০২১ | আপডেট: ১২:০৩ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
উজানের পানি নেমে আসায় পদ্মা ও মেঘনা নদীর পানি অব্যাহত বৃদ্ধির ফলে শরীয়তপুরের সুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলার চরাঞ্চল সহ নড়িয়া পৌর এলাকার কিছু কিছু এলাকা ও জাজিরা পৌর সভার কিছু কিছু এলাকায় বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। নৌকা কোষা ছাড়া ঐ এলাকার লোকজন চলাফেরা করতে পারছেনা। এক কথায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে তারা।
বন্যার পানিতে কমপক্ষে ৫০টি বিদ্যালয়ের মাঠ তলিয়ে গেছে। কমপক্ষে ১৫টি বিদ্যালয়ের ক্লাস রুমে পানি ঢুকেছে। বিশেষ করে নড়িয়া পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অধিকাংশ বাসা বাড়িতে পানি ঢুকেছে। তারা নৌকা ছাড়া বাড়িতে লোকজন চলাচল করতে পারছেন না। অন্যথায় পানিতে সাতরে বাসা বাড়িতে যেতে হচ্ছে।
সরেজমিন ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে আলোচনা করে জানা যায়, ১৩ আগস্ট থেকে পদ্মা নদীর পানি সুরেশ্বর পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ পানি প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে। নড়িয়া উপজেলা চরআত্রা নওপাড়া, মোক্তারেরচর কেদারপুর ইউনিয়ন ও নড়িয়া পৌরসভার ১,২,৩,৪,৫,ও ৮নং ওয়ার্ডের বেশীর ভাগ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় ৬’শ পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ২/১ দিন পানি বাড়তেথাকলে অধিকাংশদেরকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া লাগবে বলে নড়িয়া পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন।
এদিকে জাজিরা উপজেলার পশ্চিম নাওডোবা, পূর্বনাওডোবা, পালেরচর, কুন্ডেরচর এলাকার অধিকাংশ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এরই সাথে পৌর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের আহাদ্দি মাদবর কান্দি বয়াতি কান্দি, জামাল মাদবর কান্দি, লাঢি কান্দি, ঢালি কান্দি এলাকায় বাড়ি ঘরে পানি ঢুকেছে। তারা পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বিপাকে। তারা নৌকা ছাড়া চলাফেরা করতে পারছেনা। গরু-ছাগল হাস-মুরগী নিয়ে পড়েছে বিপাকে। অনেক জায়গায় নলকুপ ও বাথরুম প্লাবিত হয়েছে।
বন্যার পানির জন্য শিশুরা হয়েছে ঘরবন্ধী। কিছু কিছু এলাকায় পাকা ধান ও রোপা আমন, বোনা আমন তলিয়ে যাচ্ছে। জরুরী ভিত্তিতে তাদের কে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহন করতে হবে। বন্যার পানিতে জাজিরা নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ ও সদর উপজেলার কমপক্ষে ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
জাজিরা পৌরসভার মেয়র মোঃ ইদ্রিস মাদবর বলেন, বন্যার পানিতে ২নং ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি এলাকায় বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কমপক্ষে দুই শতাধিক পরিবার। সার্বক্ষনিক তাদের খোজ খবর রাখছি।
নড়িয়া পৌরসভার মেয়র এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, নড়িয়া পৌর এলাকার অধিকাংশই পানিতে তলিয়ে গেছে। বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় বিপাকে পড়েছে লোকজন। ২/১দিন পানি বাড়তে থাকলে অধিকাংশ লোকজনদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া লাগবে। আমরা তাদের তালিকা প্রস্তুত করছি। সাধ্যনুযায়ী সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।
এব্যাপারে শরীয়তপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, জাজিরা উপজেলায় ১৯টি, নড়িয়া উপজেলায় ২১টি ও ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ৪টি সদর উপজেলায় ৪টি বিদ্যালয়ের মাঠে পানি উঠেছে। নড়িয়া ৮টি বিদ্যালয়েল ক্লাস রুমে পানি ঢুকেছে। আশা করছি ২/১ দিনের মধে পানি কমতে থাকবে।
এব্যাপারে নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ রাশেদ উজ্জামান বলেন, নড়িয়া তীরবর্তী যে গ্রাম গুলোতে পানি প্রবেশ করে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের তালিকা করা হচ্ছে। তাদের ত্রাণের আওতায় আনা হবে।
এব্যাপারে জেলা প্রশাসক পারভেজ হাসান বলেন, পদ্মার পানি বাড়ছে। বিভিন্ন নিচু এলাকায় পানি ঢুকেছে। ওইসব এলাকার মানুষের সহায়তা করার জন্য মাঠ পর্যায়ে কাজ চলছে। পদ্মার তীরবর্তী যেসব গ্রামের মানুষ পানিবন্দি ও ভাংগনের শিকার হয়েছেন, তাদের সহায়তা করা হচ্ছে।