কুলাউড়ায় মাইক্রোবাসকে ট্রেনের ধাক্কা, নিহত- ৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৪৫ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর,রবিবার,২০২১ | আপডেট: ০১:৪০ পিএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় ও কমলগঞ্জে পৃথক রেল দূর্ঘটনায় ৩ জনের প্রাণহানি ও ৬ জন আহত হয়েছেন ।
আজ রবিবার দুপুরেও ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের সাথে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে সীমান্তবর্তী ভাটেরার হোসেনপুর এলাকায় শিশুসহ ২ জনের প্রাণহানি ও ৬ জন আহত হয়েছেন। এর আগে ট্রেনটি কুলাউড়া প্রবেশের পূর্বে কমলগঞ্জের শমশেরনগরে রাস্তা পারাপারের সময় ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে এক বৃদ্ধের প্রাণহানী হয় ।
দুর্ঘটনা কবলিত মাইক্রোবাস যাত্রী আহত ও নিহতরা সবাই সিলেটের আম্বরখানা লোহারপাড়া এলাকার এবং নিহত অপরজন শমশেরনগর দক্ষিণ কেছুলুটি গ্রামের বাসিন্দা। হতাহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
সরেজমিনে প্রত্যক্ষদর্শী জসিম উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজনের সাথে আলাপ করে জানা যায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভাটেরা রেলস্টেশনের অদূরে হোসেনপুর এলাকা অতিক্রম করার সময় রেলক্রসিংয়ে আটকে পড়া একটি মাইক্রোবাসকে (নোহা) ধাক্কা দেয়। এসময় দ্রুতগামী ট্রেনটি মাইক্রোবাসকে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার দূরে টেনে হিচড়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ফরিদ উদ্দিন (৫২) ও আফিফ নামে (৮) বছরের এক শিশু মারা যায়। গাড়িতে থাকা অন্য ৬ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
নিহতদের স্বজন ভাটেরা ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা রুয়েল আহমদ ও রুনেল আহমদ জানান, আজ রবিবার তাদের ভাতিজা সুহেল আহমদের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। বিয়েতে অংশ নেওয়ার জন্য সিলেটের আম্বরখানা লোহাপাড়া থেকে দুটি মাইক্রোবাস (নোহা) গাড়িতে তাদের আত্মীয়রা হোসেনপুর আসছিলেন। বাড়ির কাছে রেলক্রসিং প্রবেশের সময়কালে প্রথমে একটি গাড়ি রেললাইন অতিক্রম করে ফেলে। এরপর দ্বিতীয় গাড়িটির রেললাইন অতিক্রম করার সময় রেললাইনের ওপর আটকা পরে। গাড়িতে মোট ৯ জন যাত্রী ছিলেন। তখন পারাবত ট্রেনটি গাড়িটিকে ধাক্কা দিলে এই দূর্ঘটনাটি ঘটে। আহতরা হলেন কামাল মিয়া (৪০), লিলি বেগম, রিনু বেগম (১১), রবু বেগম । বাকি তিনজনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
ট্রেনের নিচে কাটা পরা বৃদ্ধের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে শমশেরনগর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সেলিম আহমদ জানান, রেল স্টেশনের অদুরে দক্ষিণ কেছুলুটি এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে রুশন মিয়া (৭০) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। পরে নিহতের স্বজনরা লাশ নিয়ে যান।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাদেক কাওসার দস্তগীর, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল মোল্লা, অফিসার্স ইনচার্জ বিনয় ভূষণ রায়, ওসি (তদন্ত) মো: আমিনুল ইসলামসহ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ভাটেরা এলাকার সিলেট-আখাউড়া রেলসেকশনের দূঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রুয়েল আহমদ বিকেল চারটার দিকে মুঠোফোনে জানান, ট্রেন দূর্ঘটনায় নিহত দুজনের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিনয় ভূষণ রায় বিকেল ৪টায় মুঠোফোনে বলেন, প্রাথমিকভাবে খবর পেয়েছি দুইজন মারা গেছেন। ৬ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তাঁদের স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করে তথ্য জানার চেষ্টা করছি।