২৯ লক্ষ টাকায় নির্মিত ব্রিজের সংযোগ সড়ক হয়নি ২ বছরেও
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:৩৩ পিএম, ৪ সেপ্টেম্বর,শনিবার,২০২১ | আপডেট: ০৮:১২ এএম, ২১ নভেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা ও কুলাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী বাড়ই গাঁও এলাকায় জনদুর্ভোগ লাঘবে পলক নদীর উপরে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে কিন্তু ব্রিজটির কুলাউড়ার অংশের পাশে রাস্তায় মাটি ভরাট না করার কারণে এই ব্রিজটি এলাকাবাসীর কোনো কাজেই আসছে না। অলস পড়ে আছে ব্রিজটি। ব্রিজের উপরে উঠতে হলে উঁচু কিছু ব্যবহার করতে হয়। অপরদিকে ব্রিজের কমলগঞ্জ উপজেলা অংশের সংযোগ রাস্তা না থাকায় দুই বছরেও উপজেলার মানুষের ভোগান্তির অবসান হয়নি। রাস্তার অভাবে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারন মানুষ।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বাড়ই গাঁও এলাকায় ব্রিজের উভয় পাশে রাস্তায় মাটি ভরাট না থাকায় ব্রিজটি চলাচলের অনুপযোগী। অন্যদিকে কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের বাগজুর নালার উপর কালভার্ট না থাকার কারনে সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পরিতক্ত অবস্থায় আছে। গত ২ বছর পূর্বে দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী মানুষের সুবিধার জন্য ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়েছিল।
জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বাড়ই গাও এলাকায় পলক নদীর উপরে প্রায় ২৯ লক্ষ টাকা ব্যায়ে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার হাজার হাজার মানুষ এই রাস্তা ব্যবহার করে কৃষি কাজসহ বিভিন্ন কাজে আসা যাওয়া করেন। ব্রিজের দুই পাশের রাস্তা মেরামত সহ পলক নদী ও বাগজুর নালা খনন করা হলে এলাকার ইয়াওয়ের বন থেকে কয়েক হাজর হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা যাবে।
স্থানীয়রা জানান, ব্রিজ থাকলেও রাস্তা না থাকায় তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ফলে তিন চার কিলোমিটার পথ উল্টো ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। ব্রিজের একপাশে রাস্তা না থাকায় ও বাগজুর নালার উপর সংযোজন না থাকার কারণে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের চলাচলে চরম অসুবিধা হচ্ছে। বছর ঘুরে আবারও বর্ষা আসলো কিন্তু ব্রিজের মাটি ভরাট হল না। ফলে ব্রিজের সংযোগ রাস্তায় মাটি ভরাট না করায় দুর্দশার মধ্যে দিয়ে মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে। পতনঊষার এলাকার বাসিন্দা আব্দুস শহীদ বলেন, বাগজুর নালায় ব্রিজ বা কালভার্টের অভাবে আমরা পলক নদীর উপর ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করতে পারেনা।
হাজীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা জুনেদ আহমদ জানান, পলক নদীর উপর ব্রিজ আছে কিন্তু রাস্তা নেই। ব্রিজের উভয় পাশে মাটি না থাকায় আমারা আসা-যাওয়ার করতে পারিনা।
মাটি ভরাটের বিষয়ে হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আব্দুল লতিফ চৌধুরী বলেন, ব্রিজের কাজ শেষ হয়েছে প্রায় দুই বছর হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে আমি একাধিকবার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও আমার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে ব্রিজে মাটি ভরাটের জন্য অনুরোধ করেছি। উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্ত আমাকে সবসময় বলেন ব্রিজের ঠিকাদার মাটি ভরাট করে দিবে। সামান্য মাটি ভরাটের জন্য ব্রিজ দিয়ে মানুষ চলাচল করতে পারছেন না।
হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বাসিত বাচ্চু বলেন, গত বছর ব্রিজ ও রাস্তায় মাটি দিয়েছি, একসাথে মাটি ভরাট করলে মাটি পড়ে যায়। আমার সময়ে যদি সুযোগ পাই তাহলে আবার মাটি ভরাট করে দিব। মাটি ভরাটের বিষয়ে কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ শিমুল আলী বলেন দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থাকায় ঠিকাদার কাজ শেষে মাটি ভরাটের সময় জায়গার মালিকেরা আপত্তি দেন এ জন্য পর্যাপ্ত মাটি ভরাট করা যায়নি।
বাগজুর নালা ও রাস্তার বিষয়ে পতনঊষার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার তওফিক আহমেদ বাবু বলেন, পলক নদী ও বাগজুর নালা খনন করা হলে এই এলাকার আমূল-পরিবর্তন আসবে। হাজার হাজার হেক্টর জমিতে কৃষক আমন ও বোরো চাষ করতে পারবে। বাগজুর নালায় একটি কালভার্ট স্থাপন করলে সহজেই দুই উপজেলার মানুষ আসাযাওয়া করতে পারবেন।
পলক নদী ও বাগজুর নালা খননসহ সার্বিক বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন প্রকল্পের জন্য প্রথমিক একটি তত্ত্ব ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।