সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, যমুনার পানি বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:২৯ পিএম, ৩১ আগস্ট,মঙ্গলবার,২০২১ | আপডেট: ০৩:৩৮ পিএম, ২০ নভেম্বর,
বুধবার,২০২৪
গত ২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জের কাজিপুর পয়েন্টে যমুনা নদীন পানি আরো ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে আজ মঙ্গলবার সকাল ৬ টার সময় বিপদসীমার ৪২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
একই সময় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধের হার্ড পয়েন্টে যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৬ সেন্টিমিটার এবং তা বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গেজ রিডার আব্দুল লতিফ এসব তথ্য জানিয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন জানান, জেলার যমুনা নদীর পানি সকল পয়েন্টেই বেড়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে,পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পানি বাড়ার কথা জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র। অন্যদিকে যমুনার নদীর সাথে পাল্টা দিয়ে জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদী চলনবিল, ইছামতি, করতোয়া, ফুলজোড় ও বড়াল নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। বন্যা কবলিত মানুষদের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। বসতবাড়ীতে পানি ওঠায় ঘরের বেড়া ও গৃহস্থালী জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে পড়েছে। অনেকেই পানিতে ডুবে ঘরের মধ্যে চৌকি উঁচু করে ও মাচা তৈরি করে বসবাস করছে। সারাক্ষণ পানিতে থাকায় হাত-পায়ে ঘা সহ পানিবাহিত নানা রোগ দেখা দিচ্ছে।
দিন এনে দিন খাওয়া বন্যার্ত অসহায় মানুষদের কাজকর্ম না থাকায় জরুরী ওষুধ ও খাদ্য কিনতে পারছে না। বসতবাড়ীতে পানি ওঠায় ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকেই বাঁধ ও উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। টিউবয়েল তলিয়ে যাওযায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে, টয়লেট তলিয়ে যাওয়ায় নারীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় নৌকায় চলাচল করছে বন্যার্ত নারী-পুরুষরা। এছাড়া পানি বাড়ার সাথে নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দেওয়ায় নির্ঘুম রাত কাটছে নদী পাড়ের মানুষেরা।
সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, ইতি মধ্যে ৫টি উপজেলায় ৮০ মেট্রিক টন চাল ও প্রতিটি ইউনিয়নে ৭০ হাজার করে টাকা বিতরণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি দেখে আরও বরাদ্দ দেয়া হবে। অন্যদিকে চৌহালী উপজেলা ও এনায়েতপুর থানার যমুনার পাড়ে ভাঙ্গন ও বন্যায় চরম দুর্ভোগের সঙ্গে দুর্গম চরাঞ্চলে যুক্ত হয়েছে ডাকাত আতংক, তাই রাত জেগে চলে পাহারাবন্যার পানিতে আউশ ধান ও পাট এবং সবজি খেত তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। গো চারণভূমি তলিয়ে যাওয়ায় গো খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আবু হানিফ জানান, গত কয়েক দিন যাবৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীতীরবর্তী নিমাঞ্চল ও চরাঞ্চলের চার হাজার ৩৬২ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। পানিতে তলিয়ে যাওয়া ফসলের মধ্যে রয়েছে রোপা আমন, বোনা আমন, আগাম সবজি, আখ, বীজতল ও বাদাম।